||কাউসার লাবীব||
কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের শূরা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি)সকাল ১০টা থেকে জোহর পর্যন্ত রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বেফাক কার্যলয়ের নতুন ভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসার মুহতামিম আল্লামা মাহমুদুল হাসান।
আজকের শূরা বৈঠকে কী কী বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে? এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম বেফাক মহাপরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীর কাছে। তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, বেফাকের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি বছর শূরা বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে হয়; যেখানে পুরো বছর গৃহিত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন হয়। আজকের শূরা বৈঠকে সাম্প্রতিক বেশ কিছু ইস্যু ও বেফাকের নিজস্ব এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হয়। একাডেমিক গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হয়। আসন্ন কেন্দ্রীয় পরীক্ষার বিষয়েও আলোচনা করা হয়।
তিনি বলেন, আজকের বৈঠকে বিশেষভাবে গুরুত্ব পায় বিতর্কিত পাঠ্যসূচীর বিষয়টি। জাতীয় শিক্ষাক্রমকে জাতীয় ঐক্য, স্বার্থ ও কল্যাণ বিরোধী বলে আখ্যায়িত করেন উপস্থিত শূরা সদস্য ও নেতৃবৃন্দ।
এ মাসেই শেষ হচ্ছে বেফাকের বর্তমান কমিটির মেয়াদ। কাউন্সিল বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়ে কী না? জানতে চাইলে বেফাক মহাপরিচালক বলেন, বর্তমান কমিটির মেয়াদ বাকি আছে আর ৭/৮ দিনের মতো। এই মূহুর্তে শূরা বৈঠকটি খুব প্রয়োজন ছিল; যেন কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণে বোর্ডের কোনো কাজ আটকে না থাকে।
তিনি বলেন, সামনে পরীক্ষা। এরপর রমজান। রমজানের পর ভর্তি। এরপর কোরবানি ও হজের ব্যস্ততা। সবকিছু মিলিয়ে কয়েক মাসের মধ্যে কাউন্সিল করা কঠিন। তাই শূরা বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী রবিউল আউয়ালের ভেতরে যেন কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলের সুবিধার জন্য বর্তমান কমিটির মেয়াদ আট মাস বাড়ানো হয়েছে। তবে কবে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
বেফাকের সিনিয়র পরিদর্শক মাওলানা আতিকুর রহমান জানান, আজকের শূরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বেফাক সভাপতি আল্লামা মাহমুদুল হাসান, বেফাকের সিনিয়র সহসভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান, বেফাক মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদভী, বেফাক মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, মুফতি জাফর আহমাদ ঢালকানগর, মুফতি মানসূরুল হক, মাওলানা আব্দুল হামিদ মধুপুরী, মাওলানা নেয়ামাতুল্লাহ আল ফরিদী, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুসলেহ উদ্দীন গহরপুরী, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা আনোয়ারুল কারীম যশোর, মাওলানা মোশতাক আহমাদ খুলনা, মাওলানা নুরুল হুদা ফয়েজী চরমোনাই, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী ময়মনসিংহ, মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব বরিশাল, মাওলানা আশেকে মোস্তফা গাজীপুর, মুফতি মোবারকুল্লাহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মাওলানা আনাছ ভোলা প্রমূখ বেফাকের শূরা সদস্যবৃন্দ।
প্রসঙ্গত, বেফাকের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পাঁচ বছর পর পর কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণে কিছুটা দেরিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল দশম কাউন্সিল। ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ফরিদাবাদ মাদরাসায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল সে কাউন্সিল; যেখানে আল্লামা শাহ আহমদ শফিকে সভাপতি ও ফরিদাবাদ মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসকে মহাসচিব নির্বাচিত করা হয়।
পরবর্তীতে আল্লামা শাহ আহমদ শফির মৃত্যু ও মাওলানা আব্দুল কুদ্দুসের পদত্যাগের কারণে ২০২০ সালের ৩ অক্টোবর আমেলা বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্বাচিত হোন আল্লামা মাহমুদুল হাসান এবং ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব নির্বাচিত হোন মাওলানা মাহফুজুল হক। পরবর্তীতে বেফাকের সিনিয়র সহ-সভাপতি করা হয় মাওলানা সাজিদুর রহমানকে।
কেএল/