শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আ.লীগ নেতাকর্মীর প্রভাবে নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সংবর্ধনা বাতিল

সাইবেরিয়ায় মুসলমানদের জীবনযাত্রা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: সাইবেরিয়া পৃথিবীর সর্ব উত্তরের অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। শীত-বরফে আচ্ছন্ন সাইবেরিয়াতেও হয় আল্লাহর নামে আজান এবং সেখানেও ইসলাম চর্চা করে মুসলিমরা।

সাইবেরিয়ার মুসলিমদের বলা হয়, বিশ্বের শেষ প্রান্তের মুসলিম। খ্রিস্টধর্মের পর ইসলাম সাইবেরিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্ম। সাইবেরিয়ায় বসবাসকারী মুসলিমদের বেশির ভাগ অভিবাসী শ্রমিক। তারা বিভিন্ন খনিতে কাজ করতে এখানে এসেছিল। জাতিগত সাইবেরিয়ানদের একটি অংশও মুসলিম হয়েছে। সোভিয়েত আমলে সাইবেরিয়ায় ইসলাম পালন এক প্রকার নিষিদ্ধ ছিল। এমনকি রুশ বিজ্ঞানীদের ইসলাম বিষয়ে কৌতূহল প্রকাশ করাও নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৯০ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ধর্মপালনে বিধি-নিষেধ ধীরে ধীরে শিথিল হয়।

সাইবেরিয়া ইসলামের আগমন ঠিক কখন হয়েছিল তার বিজ্ঞানভিত্তিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে টমস্ক শহরের পরিচালিত প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা থেকে ধারণা করা যায়, খ্রিস্টীয় ১৩-১৪ শতকে সাইবেরিয়ান অঞ্চলে ইসলামের প্রসার ঘটে। সাইবেরিয়ায় ইসলামের প্রসার ঘটেছিল কয়েকটি ধাপে। প্রথম ধাপটি ছিল গোল্ডেন হর্ডের (মোঙ্গলীয়দের প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্য) প্রভাবে। এরপর ইসলাম প্রচারে ভূমিকা রাখেন স্থানীয় শাসক খানাতরা। সর্বশেষ ভোলগা ও মধ্য এশিয়া অঞ্চলের অধিবাসীদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে।

এছাড়া বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে সাইবেরিয়ান তাতাররা ধাপে ধাপে ইসলাম ধর্মগ্রহণ করে। যদিও সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর রুশ ফেডারেশনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বহু মুসলিম শ্রমিক সাইবেরিয়ায় আগমন করে, তবু তাতার মুসলিমরাই এখনো মুসলিমদের ভেতর সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং তারাই নেতৃস্থানীয় অবস্থানে আছে।

সাইবেরিয়া অঞ্চলে ৫৯টি সরকার অনুমোদিত মসজিদ আছে, যার বেশির ভাগ রুশ স্থাপত্যরীতি অনুসারে নির্মিত। সাধারণভাবে মুসলিমরা মসজিদে যায় এবং ইমামের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখে। আবার অতীত সম্পর্কের ভিত্তিতে বিশেষ মসজিদে নামাজ পড়ার প্রবণতাও তাদের মধ্যে দেখা যায়। যেমন তাজিক ও কিরঘিজ অধ্যুষিত অঞ্চলের মসজিদগুলোর ইমাম সাধারণ তাজিক ও কিরঘিজ হয়ে থাকে। টমস্ক শহরের একইভাবে বেশির ভাগ ‘আভার’ সাদা মসজিদে নামাজ আদায় করে। আভার হলো দাগিস্তান ও উত্তর আজারবাইজান থেকে আগত মুসলিম গোত্র। লাল মসজিদ ধ্বংস করে ফেলার পর ১৯৯০ সালে সাদা মসজিদ নির্মাণের পর থেকে আভাররা এখানে নামাজ আদায় করে। অবশ্য সাদা মসজিদ নির্মাণের আগ পর্যন্ত মুসলিম লাল মসজিদসংলগ্ন মাদরাসা ভবনে নামাজ আদায় করত।

পারস্পরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে উত্তর ককেশিয়ান মুসলিমরা সবচেয়ে বেশি এগিয়ে। রাশিয়ার অন্যান্য শহরের মতো তারা টমস্কেও সংঘবদ্ধ হয়ে থাকে। এখানে চেচেন ও ইনগুশ মুসলিমদের পৃথক পৃথক সুফি ধারার খানকা আছে। যেখানে তারা একত্র হয়ে কদেরিয়া তরিকা অনুসারে জিকির করে থাকে। তবে যে যে ধারারই হোক সবাই শুক্রবার একই মসজিদে জুমা আদায় করতে কুণ্ঠাবোধ করে না।

সাইবেরিয়ায় সরকার অনুমোদিত মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা খুব সহজ নয়। কিন্তু সামাজিক কেন্দ্র হিসেবে প্রার্থনা কক্ষ করা যায়। যেখানে মুসলিমরা একত্র হয়ে নামাজ আদায় করতে পারে। এসব প্রার্থনা কক্ষ শুধু নামাজের জন্য ব্যবহৃত হয় না; বরং এখানে তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও পেশাগত বিভিন্ন কার্যক্রমও পরিচালিত হয়। সাইবেরিয়ার সরকার অনুমোদিত মসজিদগুলোর ইমামরা সাধারণত আঞ্চলিক মুফতির দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আর বিয়ে, জানাজা, ধর্মীয় সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি কোরআন ও ইসলামী শিক্ষা কার্যক্রমও তারা তত্ত্বাবধান করেন।

-এসআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ