মাওলানা আবদুল খালেক।।
তাবলিগের মুরব্বি হজরত ইলিয়াছ রহ. ছোটবেলা থেকেই দীনের দাওয়াতের মেহনত শুরু করেন। কুরআন হিফজ করার পর বড় ভাইয়ের সঙ্গে পড়াশুনা করার জন্য গাঙ্গুহ চলে আসেন তিনি। এখানে এসেই তিনি মাওলানা রশিদ আহমদ গাঙ্গুহির রহ. সোহবতে ধন্য হোন। ইলমে অহির সফল ধারক; সুন্নাতে নববির পরিপূর্ণ সাধক এক মহাপুরুষের সংর্স্পর্শে নিজেকে আলোকিত করতে থাকেন। ছাত্র জমানায় তিনি মাদরাসার ছুটিতে চলে যেতেন নানা গ্রামে। সেখানে মানুষকে দীনের দাওয়াত দিতেন। পথভুলা মানুষকে পথের দীশা দিতেন। কুরআন শিখাতেন। এভাবেই দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনত শুরু করেছিলেন তিনি।
নবীওয়ালা এ মেহনত আমরা পেতামই না যদি সাহাবারা দীনের পথে কাজ না করতেন। দাওয়াতের পথে তাদের অক্লান্ত মুজাহাদাই এ মেহনতকে আমাদের পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে। সাহাবাদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই দাওয়াত ও তাবলি পেয়েছি আমরা। যারাই এ মেহনতের সঙ্গে যুক্ত থাকবে তারাই সফলকাম হবে। আল্লাহ তায়ালার ঘোষণা ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানুষের (কল্যাণের) জন্য তোমাদেরকে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করবে। (সূরা আল-ইমরান-১১০) অন্য আয়াতে এসেছে, ‘তার চেয়ে ভাল কথা আর কী হতে পারে, যে মানুযকে আল্লাহর দিকে ডাকে, নিজে নেক আমল করে আর বলে যে, আমি সাধারণ মুসলমানদের মধ্য হতে একজন। (সূরা হা মীম সিজদা-৩৩)
আল্লাহ ও রাসুল সা. এর নির্দেশিত এ পথই দাওয়াত তাবলিগের পথ। বিশ্বব্যাপী ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সর্বপ্রথম যে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছিল তার নাম দাওয়াত। তিনি ও তার একনিষ্ঠ সাহাবারা পবিত্র কালেমার দাওয়াত নিয়ে ঘুরেছেন পথে-প্রান্তরে ও মানুষের দুয়ারে-দুয়ারে। মানুষ তাদেরকে পাগল বলেছে, থু-থু দিয়েছে, ঢিল মেরেছে, রক্তাক্ত করেছে। তবুও তারা অবিরাম দাওয়াতের কাজ করেছেন। দাওয়াতের কাজ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেছেন, ‘কৌশলে ও সুন্দর ভাষায় মানুষকে ইসলামের পথে দাওয়াত দাও।’ সূরা নাহল-১২৫।
এ মেহনত একদিন দুইদিন ধরে চলছে না। পৃথিবীর সূচনা থেকেই চলে আসছে। এ মেহনতের সবচেয়ে বড় মজমা আমাদের দেশ বাংলাদেশে। এ বিশ^ ইজতেমা আমাদের জন্য রহমত। আমাদের দেশের জন্য সৌভাগ্যের।
বিশ্বের বহুদেশ এ ইজতেমার দায়িত্ব নিতে চায়। কিন্তু আল্লাহর রহমতে এ ইজতেমা আমাদের দেশে। এটা আমাদের জন্য যেমন সৌভাগ্যের ঠিক তেমনই এটা আমাদের জন্য গর্বের। আল্লাহ তায়ালা এ ইজতেমার উসিলায় বাংলাদেশের উপর রহমত বর্ষিত করুন। আমাদের সবাইকে হেদায়াতের পথে পরিচালিত করুন। আমিন।
-এটি