আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের কাজ শেষ হয়েছে ৯৫ দশমিক ৫ শতাংশ। বাকি মাত্র ৪ দশমিক ৫ শতাংশ কাজ। আর এ কাজ শেষ হলেই আগামী মার্চে টানেল দিয়ে যান চলাচল শুরু হতে পারে।
অন্যদিকে, ১২ ধরনের যানবাহনের জন্য টোল হারও প্রস্তাবনা চূড়ান্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে এটি। কর্ণফুলী নদীর ওপর দিয়ে নির্মিত শাহ আমানত সেতুকে বিবেচনায় নিয়ে টানেলের টোল হার নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে, সেতুর তুলনায় আড়াই থেকে ছয়গুণ বেশি টোল প্রস্তাব করা হয়েছে বলে অভিমত সচেতন মহলের।
টানেল দিয়ে কী কী গাড়ি চলাচল করতে পারে এবং টোল হার কত পারে তা নিয়ে কাজ চলছে। টানেলে মোটরসাইকেল ও থ্রি-হুইলার যানবাহন চলাচল করতে পারবে না বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
বঙ্গবন্ধু টানেলের প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশিদ বলেন, ‘টানেলের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন পর্যন্ত অগ্রগতি ৯৫ দশমিক ৫ শতাংশ। টোল হার নির্ধারণ নিয়ে সেতু কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। এখন টানেলের সংযোগ সড়কসহ অন্যান্য কাজ চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।’
সেতু কর্তৃপক্ষের নির্ধারণ করা টোল অনুযায়ী, টানেলে প্রাইভেটকার ও জিপের টোল দিতে হবে ২০০ টাকা। একই ধরনের গাড়িতে শাহ আমানত সেতুতে টোল দিতে হয় ৭৫ টাকা। মাইক্রোবাসে টোল দিতে হবে ২৫০ টাকা, এই গাড়িতে বর্তমানে সেতুতে টোল দিতে হয় ১০০ টাকা। পিকআপের জন্য টোল দিতে হবে ২০০ টাকা, আর বর্তমানে সেতুতে দিতে হয় ১৩০ টাকা।
এছাড়া ৩১ বা তার চেয়ে কম সিটের বাসের জন্য টানেলে টোল ধরা হয়েছে ৩০০, যা সেতুতে নেওয়া হয় ৫০ টাকা। ৩২ বা তার চেয়ে বেশি আসনের বাসের ক্ষেত্রে টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা, যা সেতুতে নেওয়া হয় ১৫৫ টাকা। আবার ৫ টন ধারণক্ষমতার ট্রাকের ক্ষেত্রে ৪০০ টাকা, এর বিপরীতে সেতুতে টোল দিতে হয় ১৩০ টাকা। টানেলে ৫ থেকে ৮ টনের ট্রাকে ৫০০ টাকা এবং ৮ থেকে ১১ টনের ট্রাকে ৬০০ টাকা টোল দিতে হবে, যা শাহ আমানত সেতুতে নেওয়া হয় যথাক্রমে ২০০ ও ৩০০ টাকা।
৩ এক্সেল পর্যন্ত ট্রাক চলাচলে টানেলে টোল দিতে হবে ৮০০ টাকা এবং ৪ এক্সেল পর্যন্ত ট্রেইলারের জন্য টানেলে ১ হাজার টাকা টোল ধরা হয়েছে। বিপরীতে চার এক্সেল পর্যন্ত ট্রেইলারকে সেতুতে ৭৫০ টাকা দিতে হয়। এ ছাড়া টানেলে চার এক্সেলের বেশি হলে প্রতি এক্সেলের জন্য ২০০ টাকা করে দিতে হবে।
এই টানেলে নির্মাণ ব্যয় ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকার মধ্যে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে চার হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। বাকি পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা ২ শতাংশ হারে ২০ বছর মেয়াদি ঋণ দিচ্ছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। তবে ডলারের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে প্রকল্পের ব্যয় আরও বাড়বে বলে।
-এসআর