শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

‘তরুণ বয়সেই মুফতি রফি উসমানী প্রখর মেধাবী ও উঁচুমাপের আবেদ ছিলেন’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মুফতিয়ে আজম পাকিস্তান, দারুল উলূম করাচির মুহতামিম ও শাইখুল হাদীস, বহুগ্রন্থ প্রণেতা আল্লামা মুফতি রফি উসমানির ইন্তেকালে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারীর সহযোগী পরিচালক ও বাংলাদেশ নূরানী তালিমুল কুরআন বোর্ড চট্টগ্রাম বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন।

গণমাধ্যমে পাঠানো এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, মুফতি রফি উসমানী সমসাময়িক সময়ে পুরো ভারতীয় উপমহাদেশের একজন প্রখ্যাত আলেমে-দ্বীন ও ইসলামী আইনজ্ঞ ছিলেন। তাঁর অসংখ্য শাগরিদ আলেম বিশ্বব্যাপী দ্বীনি শিক্ষার বিস্তার ও দাওয়াত-তাবলীগের মেহনতে যুক্ত আছেন। তিনি পাকিস্তানের মুফতিয়ে আজম ও জাতীয় পর্যায়ে অত্যন্ত বরেণ্য আলেম মুরুব্বী ছিলেন। তাঁর অন্য এক পরিচয় হল, তিনি পকিস্তানের প্রাক্তন গ্রান্ড মুফতি, পাকিস্তান আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ, দারুল উলূম করাচির প্রতিষ্ঠাতা ও বহুল সমাদৃত তাফসীরগ্রন্থ মাআরিফুল কুরআনের রচয়িতা মুফতি শফী উসমানী রহ. এর সন্তান এবং পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের শরীয়া বেঞ্চের সাবেক প্রধান বিচারপতি আল্লামা মুফতি মুহাম্মাদ তাকী উসমানী এবং মাওলানা ওয়ালী রাজী ওছমানীর ভাই। সামগ্র বিশ্বজুড়ে উলামায়ে কেরাম ও মুসলিম উম্মাহর মাঝে তাঁর প্রভাব ও খ্যাতি রয়েছে।

শোকবার্তায় স্মৃতিচারণ করে আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন বলেন, ছাত্র জীবনে মরহুম মুফতি রফি উসমানীর সাথে দীর্ঘ চার বছরের সম্পর্ক ছিল আমার। আমরা এক সাথেই চার বছর যাবত হযরত আল্লামা আশরাফ আলী থানভী রহ.এর প্রখ্যাত খলীফা হাকিম আবদুল হাই রহ. এর ইসলাহী দরসে বসতাম। ‘। হযরতের ইন্তিকালের খবর শোনার পর সেই পবিত্র দরসের সময়গুলো স্মৃতিকাতর হয়ে চোখের সামনে ভেসে ওঠছে।

আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন বলেন, হক্কানী উলামায়ে কেরামের দুনিয়া থেকে বিদায়ের তালিকা দ্রুত ভারি হচ্ছে। গত কয়েক বছরে আমরা ভারতীয় উপমহাদেশের অনেক প্রখ্যাত বুযুর্গ আলেমকে হারিয়েছি। এই তালিকায় মুফতিয়ে আযম রফি উসমানী রহ.এর নামও যুক্ত হলো। হযরতের বিদায়ে উলামায়ে কেরামের বৃহত্তর জামাতে আরেক বড় শূন্যতা তৈরি করেছে; যা সহজে পুরণ হবার নয়।

সহীহ বুখারী শরীফের কিতাবুল ইলম অধ্যায়ের দুটি হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন বলেন, কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে দ্বীনী ইলমের শিক্ষা ও চর্চা কমে যাবে এবং মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে দ্বীনী বিষয়ে মূর্খতা বিরাজ করবে। যেমন- হযরত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يُرْفَعَ الْعِلْمُ وَيَثْبُتَ الْجَهْلُ অর্থাৎ- ‘‘কিয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে ইলম উঠিয়ে নেয়া হবে এবং মানুষের মাঝে অজ্ঞতা বিস্তার লাভ করবে’’। এখানে ইলম বলতে ইলমে দ্বীন তথা কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞান উদ্দেশ্য। অপর হাদীসে রয়েছে- إِنَّ اللَّهَ لَا يَقْبِضُ الْعِلْمَ انْتِزَاعًا يَنْتَزِعُهُ مِنَ الْعِبَادِ وَلَكِنْ يَقْبِضُ الْعِلْمَ بِقَبْضِ الْعُلَمَاءِ حَتَّى إِذَا لَمْ يُبْقِ عَالِمًا اتَّخَذَ النَّاسُ رُءُوسًا جُهَّالًا فَسُئِلُوا فَأَفْتَوْا بِغَيْرِ عِلْمٍ فَضَلُّوا وَأَضَلُّوا অর্থাৎ- ‘‘আল্লাহ তাআলা মানুষের অন্তর থেকে ইলমকে টেনে বের করে নিবেন না; বরং আলেমদের মৃত্যুর মাধ্যমে ইলম উঠিয়ে নিবেন। এমনকি যখন কোন আলেম অবশিষ্ট থাকবে না, তখন লোকেরা মূর্খদেরকে নেতা হিসাবে গ্রহণ করবে। তাদেরকে কোন মাসআলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে বিনা ইলমেই ফতোয়া দিবে। ফলে তারা নিজেরা গোমরাহ হবে এবং মানুষদেরকেও গোমরাহ করবে’’। তাই এতো দ্রুততার সাথে আলেমদের একের পর এক ইন্তিকাল ভাল লক্ষণ নয়।

শোকবার্তায় আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন মরহুম মুফতি রফি উসমানীর মাগফিরাত কামনা করেন এবং পরকালে জান্নাতের উঁচু মাকাম লাভের জন্য বিশেষ দোয়া করেন।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ