সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ ।। ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১০ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী বিরতিকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম ফুটবলারদের ওমরা পালন ধর্ষণের বিচারে শরয়ি আইন থাকলে, কোন শিশু আর ধর্ষিত হতো না: উলামা-জনতা ঐক্য পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় ঈদে নতুন নোট বিতরণ স্থগিত ধর্ষণ এবং নারীর পরিচয় নিয়ে অবমাননায় ১৫১ আলেমের বিবৃতি ১০ম তারাবির নামাজে তিলাওয়াতের সারমর্ম ত্রাণ বন্ধের পর এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করছে ইসরায়েল তারাবিতে ফাইভ জি স্পিডে তেলাওয়াত করবেন না: আজহারী ‘আলেমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা জিহাদ নয়, সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

কোরআন হোক মুসলিম শিশুর প্রথম পাঠ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মুসলিম শিশু-কিশোরদের সর্বপ্রথম কোরআনের পাঠদান করা উচিত। কোরআনের মাধ্যমে শিক্ষাজীবন শুরু করলে শিশুর জীবন বরকতময় হবে, সে আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করবে। তা ছাড়া অভিজ্ঞতা বলে, শৈশবে শিশুরা অন্য বিষয়ের পাঠ গ্রহণ করতে না পারলেও তারা কোরআন রপ্ত করতে পারে। শৈশবই কোরআন শেখার সর্বোত্তম সময়।

কেননা শৈশবে শিশুর মন বিক্ষিপ্ত থাকে না, তারা পূর্ণ মনোযোগসহ কোরআন শিখতে পারে। শিশুর জীবনে এর প্রভাবও অত্যন্ত ইতিবাচক। মুসলিম সমাজ ও সভ্যতার ঐতিহ্য হলো শিশুরা কোরআনের পাঠ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের শিক্ষাজীবন শুরু করবে। কোরআন না শেখা পর্যন্ত অন্যান্য ইসলামী জ্ঞানের পাঠ তাদের দেওয়া হতো না। ইমাম নববী (রহ.) বলেন, ‘পূর্বসূরি আলেমরা কোরআন মুখস্থ না করা পর্যন্ত কাউকে হাদিস ও ফিকহ শেখাতেন না। ’ (আল-মাজমু : /৩৮)

বড় হলে নিজে নিজে কোরআন পড়ে নেবে, এমন চিন্তা থেকে কেউ কেউ শিশুকে কোরআনের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রাখে। অভিজ্ঞতা বলে, এমন শিশুদের বেশির ভাগই পরবর্তী জীবনে কোরআন শেখার আগ্রহ খুঁজে পায় না। আর কেউ আগ্রহী হলেও কাজটি তাঁর জন্য সহজ থাকে না, কঠিন হয়ে যায়। পরবর্তী জীবনে একদিকে যেমন একাগ্রতা থাকে না, নানা কারণে মন বিক্ষিপ্ত থাকে, অন্যদিকে তেমন ক্রমেই মানুষের ব্যস্ত বাড়তে থাকে। সময়-সুযোগ বের করাই সম্ভব হয় না। ঘর, সংসার, আয়-রোজগার বহু চিন্তা মাথায় কাজ করে। এত ঝামেলা এড়িয়ে ব্যক্তির পক্ষে কোরআন পাঠের জন্য সময় বের করা এবং তাতে মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে যায়।

পারিপার্শ্বিক কারণে শিশুর মনে যদি কোরআন শেখার ব্যাপারে ভীতি সৃষ্টি হয়, তবে তাদের বোঝাতে আল্লাহ মানুষের জন্য কোরআন শেখা সহজ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘কোরআন আমি সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য; অতএব উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?’ (সুরা কামার, আয়াত : ১৭)

শুধু কোরআন নয়; বরং আমি বলব সাধারণ শিক্ষার আগে শিশুকে প্রয়োজনীয় দ্বিনি শিক্ষা প্রদান করা উচিত। কেননা শিশুর মানসপটে প্রথমে যে বিষয়ের চিত্র অঙ্কিত হয়, তার প্রভাবই স্থায়ী ও সুদৃঢ় হয়। তাই শিশুকে প্রথমে দ্বিনি শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। যদি শিশুকে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শিক্ষা দেওয়া সম্ভব না হয়, তবে কোরআনের কিছু অংশ শিখিয়ে তিলাওয়াত অব্যাহত রাখতে হবে। তারপর কিছু দ্বিনি বই-পুস্তক ও প্রয়োজনী মাসয়ালা-মাসায়েল মাতৃভাষায় হলেও শিক্ষা দিতে হবে। আর এই শিক্ষাটুকু কোনো আলেমের তত্ত্বাবধানে হওয়া উত্তম। কেননা তিনিই প্রয়োজনীয় দ্বিনি শিক্ষার সীমা ও শিক্ষা-সহায়ক বই-পুস্তক নির্ধারণের অধিক যোগ্যতা রাখেন। পাশাপাশি সতর্ক দৃষ্টিও রাখতে হবে। শিশুর ভেতর দ্বিন-পরিপন্থী কোনো বিষয় লক্ষ্য করলে বা ধর্মবিদ্বেষী মনোভাব দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে সতর্ক করতে হবে। যদি মনে হয়, এটা শিক্ষার প্রভাব তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করতেও দেরি করা যাবে না। কেননা আল্লাহ দ্বিনকে দুনিয়ার ওপর প্রাধান্য দিতে বলেছেন।

শিশুদের নেক সন্তান হিসেবে গড়ে তুলতে ছোটবেলা থেকেই তার প্রতি যত্নবান হতে হবে। বিশেষত তার মনমানসিকতার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। যেন তাদের মন পাপে আসক্ত হয়ে না পড়ে। অনেকে শৈশবে শিশুর অন্যায় আবদারগুলোকে প্রশ্রয় দেয়। যা পরবর্তী সময়ে তাকে সুসন্তান হিসেবে গড়ে তোলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এ জন্য মা-বাবার ইসলামী শিক্ষার অনুশীলন জরুরি। তাদেরই গুনাহমুক্ত পবিত্র পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমরা নিজেদের ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে আগুন থেকে রক্ষা করো। (সুরা তাহরিম, আয়াত : ৬)

তবে শিশু প্রতিপালনে কঠোরতা পরিবর্তে নম্রতা অনুসরণ করাই বাঞ্ছনীয়। কেননা কঠোরতা শিশুর মন বিগড়ে দিতে পারে। তাদের আনন্দমুখর সুন্দর পরিবেশেই শিক্ষার সঠিক পথটি দেখিয়ে দিতে হবে। স্নেহ-মমতা শিশুকে বেশি প্রভাবিত করে শাসন ও কঠোরতার চেয়ে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) দিনের এক অংশে বের হন, তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেননি এবং আমিও তাঁর সঙ্গে কথা বলিনি। অবশেষে তিনি বনু কাইনুকা বাজারে এলেন। (সেখান থেকে ফিরে) ফাতেমা (রা.)-এর ঘরের আঙিনায় বসলেন। অতঃপর বলেন, এখানে খোকা! তথা হাসান আছে কি? এখানে খোকা আছে কি? ফাতেমা (রা.) তাঁকে কিছুক্ষণ সময় দিলেন। আমার ধারণা হলো, তিনি তাঁকে পুঁতির মালা, সোনা-রুপা ছাড়া যা বাচ্চাদের পরানো হতো, পরাচ্ছিলেন (সাজিয়ে দিচ্ছিলেন)। তারপর তিনি দৌড়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলেন এবং চুমু খেলেন। তখন তিনি বলেন, ‘হে আল্লাহ, তুমি তাকে (হাসানকে) ভালোবাসো এবং তাকে যে ভালোবাসে তাকেও ভালোবাসো। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২১২২)

-এসআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ