শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আ.লীগ নেতাকর্মীর প্রভাবে নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সংবর্ধনা বাতিল আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা ইসলামি লেখক ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত, আসছে নতুন কর্মসূচি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে উত্তপ্ত খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার

ঋণ মুক্তির আমল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোহাম্মদ আবু তালহা তারীফ

জীবনের বিভিন্ন মুহুর্তে আমরা কমবেশী অর্থনৈতিক সংকটে পরি। তখন বাধ্য হয়েই ব্যবসা বানিজ্য কিংবা দোকানে কমবেশী ঋণ করে সাময়িকভাবে জীবন পরিচালনা করতে হয়।

পরবর্তীতে এই ঋণের চিন্তায় জীবনে অভিশাপ নেমে আসে। শারিরীক অসুস্থতা থেকে শুরু করে ঘুম পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায়। সন্তানের লেখাপড়া, বাজার ও খাবার, চিকিৎসাসহ জীবনে নেমে আসে কালো অধ্যায়। এজন্যই রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা ঋণ গ্রস্থ হওয়া থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করতেন। বুখারী শরীফের বর্ণনায় এসেছে, হজরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বদা ঋণ মুক্তির জন্য দোয়া করতেন, আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল মাঅছামি ওয়াল মাগরামি। অর্থ হল, ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে গুনাহ এবং ঋণ থেকে মুক্তি চাই।'

ঋণ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এমন একটি দোয়া রয়েছে যা নিয়মিত পাঠে ঋণের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাই নিবেন। হজরত আলী (রাঃ) ঋণগ্রস্থ ব্যক্তিকে রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিখানো দোয়াটি পাঠ করতে বললেন। দোয়াটি হল, 'আল্লাহুম্মাকফিনি বি হালালিকা আন হারামিকা, ওয়া আগনিনি বিফাদলিকা আম্মান সিওয়াক।' অর্থাৎ, হে আল্লাহ! হারামের পরিবর্তে তোমার হালাল রুজি আমার জন্য যথেষ্ট কর। তোমাকে ছাড়া আমাকে অন্য কাহারো মুখাপেক্ষী করিওনা এবং স্বীয় অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে স্বচ্ছলতা দান কর। যা তিরমিজি ও মুসনাদ আহমদ শরীফে উল্লেখ রয়েছে।

ঋণ মানুষকে চিন্তিত করে। এই ঋণের কারনে দুশ্চিন্তা হয়। এই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পতে রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি দোয়া পাঠ করতেন।

তিনি বলতেন,' আল্লা-হুম্মা ইনি আউযু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি, ওয়াল ‘আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়াল বুখলি ওয়াল-জুবনি, ওয়া দ্বালা‘য়িদ দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজাল।' অর্থ্যাৎ ,হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে। অপারগতা ও অলসতা থেকে। কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে৷ ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে। বুখারী।

ঋণ করে অবশ্যই সেই টাকা দ্রত পরিশোধ করা জরুরী। কেননা যে কোন সময়ে ঋণগ্রস্থ অবস্থায় মৃত্যু বরণ করতে পারি। তখন সেই টাকা অবশ্যই আমার ওয়ারিশদের পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় পরিশোধ না হওয়ায় গুনাহগার হতে হবে৷ বুখারী শরীফের বর্ণনায় রয়েছে, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট যখন কোনো ঋণী ব্যক্তির জানাজা উপস্থিত করা হলে , তিনি জিজ্ঞেস করতেন, সে তার ঋণ পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত সম্পদ রেখে গেছে কি? যদি বলা হতো যে সে তার ঋণ পরিশোধের মতো সম্পদ রেখে গেছে। তখন তার জানাজার নামাজ আদায় করতেন। অন্যথায় বলতেন, তোমারাই জানাজা আদায় করে নাও।’

প্রিয় পাঠক, আসুন আমরা যারা ঋণগ্রস্থ রয়েছি হারাম কর্ম থেকে মুক্ত থেকে হালাল উপায়ে আয় করে ঋণ দেওয়ার চেষ্টা করি। প্রতি ফরজ নামাজ আদায়ের পর ঋণ মুক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করি। যেহেতু ফরজ নামাজের পর দোয়া কবুল হয়। একনিষ্ঠতার সাথে ইবাদত বন্দেগি করে নিজেকে সপে দেই। বিশিষ্ট সাহাবী হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান, আমার ইবাদতের জন্য তুমি ঝামেলামুক্ত হও, আমি তোমার অন্তরকে প্রাচুর্য দিয়ে ভরে দেব এবং তোমার দারিদ্র্য ঘুচিয়ে দেব। আর যদি তা না করো, তবে তোমার হাত ব্যস্ততায় ভরে দেব এবং তোমার অভাব দূর করে দিব না।'তিরমিজি।

লেখক: ইসলাম বিষয়ক গবেষক

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ