শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আ.লীগ নেতাকর্মীর প্রভাবে নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সংবর্ধনা বাতিল আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা ইসলামি লেখক ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত, আসছে নতুন কর্মসূচি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে উত্তপ্ত খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

আল্লাহ আকবার : যে ধ্বনি আকাশ থেকে আঁধার ভেঙে সকাল আনে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মুমিনের জীবনে আল্লাহু আকবর ধ্বনির চেয়ে বড় কোনো ধ্বনি নেই। আল্লাহু আকবর অর্থ—আল্লাহ মহান। এই তাকবির উচ্চারণের মাধ্যমে মূলত আল্লাহর বড়ত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করা হয়। শক্তি-সামর্থ-সম্মান সবদিক থেকে মহান আল্লাহ সবার ঊর্ধ্বে— তাকবির সে অর্থেরই প্রতীক।

হজরত ওমর (রা.) বলেন, ‘আল্লাহু আকবর দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ বাক্য’ (তাফসিরে কুরতুবি)। এ ধ্বনি প্রকাশে উৎসাহিত করে মহান আল্লাহ বলেন,  وَ کَبِّرۡهُ تَکۡبِیۡرًا ﴿۱۱۱﴾ ‘তুমি পূর্ণরূপে তাঁর বড়ত্ব ঘোষণা করো’ (সুরা ইসরা: ১১১)

কারো অন্তরে তাকবিরের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব যত বেশি হবে, তার ঈমানের প্রভাব তত বেশি প্রতিফলিত হবে। তাই ইসলামী শরিয়তে আজান ও নামাজের পাশাপাশি বছরের বিভিন্ন সময় ও জীবনঘনিষ্ঠ নানা অনুষঙ্গে তাকবির পাঠের বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে।

জন্মের পর থেকে আল্লাহু আকবর ধ্বনি শুনে বড় হন উম্মতে মুহাম্মদী। নবজাতকের কানে তাকবির। আজান ও নামাজে তাকবির। চাঁদ দেখার সময়, হজের সময়, কাবা জিয়ারতকালে তাকবির। কঙ্কর নিক্ষেপ করার সময়, আরোহণ করার সময়, তাওয়াফ করাসহ এ ধরনের সব জায়গাতেই আল্লাহু আকবর বলতে হয়।

জিলহজের ১০ দিন আল্লাহর কাছে তাকবিরের চেয়ে আর বড় কোনো আমল নেই। (মুসনাদে আহমদ: ৬১৫৪)
এছাড়াও দুই ঈদে, পশু-পাখি জবাইয়ে, সফরে, বাহনে আরোহনে, উপরে উঠার সময়, এমনকি মৃত্যুশেষে জানাজায়ও তাকবির বলার নিয়ম।

একবার রাসুল (স.)-এর সঙ্গে নামাজ আদায়কালে এক ব্যক্তি বলে উঠল, ‘আল্লাহু আকবার কাবিরা ওয়াল হামদুলিল্লাহ কাসিরা ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতান ওয়া আসিলা’ (অর্থ: আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ, সবচেয়ে বড়। সব প্রশংসা আল্লাহর। আর সকাল ও সন্ধ্যায় তারই পবিত্রতা বর্ণনা করতে হবে)।

নামাজ শেষে রাসুল (স.) জিজ্ঞাসা করলেন, এ কথাগুলো কে বলল? সবার মধ্যে থেকে এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি বলেছি। তখন রাসুল (স.) বললেন, কথাগুলো আমার কাছে বিস্ময়কর মনে হয়েছে। কারণ কথাগুলোর জন্য আসমানের দরজা খুলে দেওয়া হয়েছিল। (সহিহ মুসলিম: ১২৪৫)
আল্লাহ তাআলা বলছেন, وَ لِتُکَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰی مَا هَدٰىکُمۡ وَ لَعَلَّکُمۡ تَشۡکُرُوۡنَ ﴿۱۸۵﴾ আর তিনি তোমাদের যে হেদায়াত দিয়েছেন, সেজন্য তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করো, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। (সুরা বাকারা: ১৮৫)

শয়তান পালায়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেন—

শয়তান যখন সালাতের আজান তথা (আল্লাহু আকবর আওয়াজ) শুনতে পায়, তখন বায়ু ছাড়তে ছাড়তে পালাতে থাকে, যেন আজানের শব্দ তার কানে পৌঁছতে না পারে। মুয়াজ্জিন যখন আজান শেষ করে তখন সে ফিরে এসে (সালাত আদায়কারীর) সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি করতে থাকে। সে পুনরায় যখন ইকামাত শুনতে পায়, আবার চলে যায় যেন এর শব্দ তার কানে না যেতে পারে। যখন ইকামাত শেষ হয় তখন সে ফিরে এসে (সালাত আদায়কারীদের অন্তরে) সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি করতে থাকে। (মুসলিম: ৭৪২ )

৫. অহংকার দূর হয়

অহংকার থেকে বাঁচতে বেশি পরিমাণে তাকবির বা আল্লাহু আকবার পাঠ করা জরুরি। কারণ, মুমিনের অন্তরে যখন আল্লাহর বড়ত্ব দৃঢ়ভাবে স্থাপন হবে, তখন সব অহংকার, হিংসা-বিদ্বেষ থেকে অন্তর পবিত্রতা লাভ করবে। আর এটিই আল্লাহু আকবারের সবচেয়ে বড় প্রভাব। আর অহংকারী না হতে স্বয়ং আল্লাহই নির্দেশ দিয়েছেন।

‘পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে বিচরণ কোরো না। কেননা তুমি তো কখনোই পদভারে পৃথিবী বিদীর্ণ করতে পারবে না। আর উচ্চতায় কখনো পর্বত সমান হতে পারবে না।’ (সুরা বনি ইসরাঈল: ৩৭)

তাকবিরের সৌন্দর্য্যে ভরে উঠুক আমাদের চারপাশ। মুমিন হৃদয়ে উচ্চারিত হোক আল্লাহ আকবার।

কেএল/

 


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ