শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

শায়েখ ডক্টর ইউসুফ আল-কারযাভির সংক্ষিপ্ত জীবন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম।।

মিশরীয় ইসলামি স্কলার, লেখক গবেষক আল্লামা ডক্টর ইউসুফ আল-কারযাভি ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন। খবর আল-জাজিরার

আল জাজিরার ব্রেকিং নিউজে জানা যায়, ডক্টর ইউসুফ আল-কুরযাভি আজ সোমবার বিকেলে কাতারে ইন্তিকাল করেন। সোমবার তার অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টেও তার মৃত্যুর ঘোষণা দেওয়া হয়।

মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছে ৯৬ বছর।

মিশরের রাষ্ট্রপতি আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির বিরোধিতার কারণে মুরসির ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আল-কারাদাভি মিশরে ফিরে আসতে পারেননি। ২০১১ সালের বিপ্লব যা সাবেক রাষ্ট্রপতি হোসনি মুবারককে উৎখাত করেছিল তার আগে এই ধর্মীয় নেতা মিশর থেকে নির্বাসনে ছিলেন।

ডক্টর ইউসুফ আল-কারযাভি মিশর থেকে কাতারে আসেন ২০১৩ সালে। তাকে কাতারের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছিল। এরপর তিনি আর দেশে ফিরে যেতে পারেননি। মিশরের সরকার তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন।

ইউসূফ আল-কারযাভী হলেন একজন মিশরীয় ইসলামি স্কলার। ইসলামিক বিভিন্ন বিষয়ে লেখা তার কয়েকশ গ্রন্থ রয়েছে। সবগুলোই পাঠক মহলে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। আল জাজিরা টেলিভিশনে শরীয়াহ এবং জীবন নামক তার অনুষ্ঠান তাকে পৃথিবীব্যাপি পরিচিত করে তোলে। তিনি মিশর ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুড এর পরামর্শক। তাকে ব্রাদারহুড়ের শীর্ষস্থানীয় নেতা মনে করা হয়। তিনি আলেমদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইত্তেহাদুল আলামী লি উলামাইল মুসলিমীন এর সভাপতি ছিলেন।

৯ সেপ্টেম্বর ১৯২৬ সালে মিশরের গারবিয়্যা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

শিক্ষা জীবন শুরু করেন ছোবেলাতেই। দশ বছর বয়স হবার আগেই হিফজ সম্পন্ন করেন। অতপর আল-আজহারের শিক্ষাপদ্ধতিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা করেন। উচ্চ মাধ্যমিকে তিনি সারা মিশরে দ্বিতীয় হন। আল আজহারের উসুলুদ দ্বীন অনুষদ থেকে অনার্সو মাষ্টাস এবং পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার পিএইচডি বিষয় ছিল “যাকাত এবং সামাজিক সমস্যা সমাধানে তার প্রভাব।”

প্রাথমিক জীবন
দুই বছর বয়সে তার বাবা মারা যান। চাচা তার শিক্ষাদিক্ষার ভার বহন করেন। ইখওয়ানুল মুসলেমিনের সাথে সম্পৃক্ততার কারণে তাকে বেশ কয়েকবার কারাবরণ করতে হয়। প্রথমবার ১৯৪৯ সালে। এরপর প্রেসিডেন্ট জামাল আব্দুন নাসেরের আমলে তিনবার। ১৯৫৪ সালের জানুয়ারিতে প্রথমবার। একই সালের নভেম্বর মাসে দ্বিতীয়বার। এবার তিনি ২০ মাস কারাগারে কাটান। শেষবার ১৯৫৩ সালে। ১৯৬১ সালে তিনি কাতারে প্রথম পাড়ি জমান। ১৯৭৩ সালে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠা করেন এবং ডিপার্টমেন্ট প্রধান হিসেবে যোগ দেন।

পুরস্কার ও সম্মাননা
১৪১১ হিজরীতে ইসলামী অর্থণীতিতে অবদান রাখায় ব্যাংক ফয়সল পুরস্কার লাভ করেন। ১৪১৩ হিজেরীতে ইসলামী শিক্ষায় অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক বাদশাহ ফয়সাল পুরস্কারের জন্য তাকে সিলেক্ট করা হয়। মুসলিম বিশ্বের নোবেল খ্যাত এ পদকটির পাওয়ার সন্মানটা এ বছর তার ভাগ্যে জোটে। ১৯৯৭ সালে ব্রুনাই সরকার তাকে হাসান বাকলি পুরস্কারে সম্মান প্রদান করে।

বাংলায় অনুদিত তার বই সমূহ
সুন্নাহর সান্নিধ্যে
ইসলামী পুনর্জাগরণ: সমস্যা ও সম্ভাবনা
ইসলামে হালাল হারামের বিধান
ঈমান ও সুখ
বুদ্ধিদীপ্ত জাগরণের প্রত্যাশায়
ইসলামের বিজয় অবশ্যম্ভাবী
আধুনিক যুগ ইসলাম কৌশল ও কর্মসূচী
ইসলাম ও চরমপন্থা
ইসলাম ও শিল্পকলা
ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থাঃ তত্ত্ব ও প্রয়োগ
ইসলামে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা
ইসলামে এবাদতের পরিধি
ইসলামে দারিদ্র বিমোচন
ইসলামের যাকাতের বিধান ১ম ও ২য় খণ্ড
জেরুজালেম বিশ্ব মুসলিম সমস্যা
ইসলাম ও মানবিক মূল্যবোধ
(আমাদের দাওয়াত)জীবনবিধান ও ইসলাম
মানুষ মর্যাদা ও সৃষ্টির উদ্দেশ্য
উমর ইবনে আবদুল আজিজ
আলিম ও স্বৈরশাসক
ইমাম হাসান আল বান্না
ইসলামের ব্যাপকতা
তাকফির: কাফির ঘোষণায় বাড়াবাড়ি ও মূলনীতি
ইমাম বান্নার পাঠশালা
অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানে যাকাতের ভূমিকা

সূত্র: উইকিপিডিয়া, আল জাজিরা, আরাবিয়া আরবি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ