সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ ।। ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১০ রমজান ১৪৪৬


‘মুতালা’বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে এক শায়েখের ত্যাগ ও কোরবানির গল্প

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

|| মুফতি আব্দুল মাজিদ ||

মাওলানা আব্দুল মালেক হাফিজাহুল্লাহর সঙ্গে আলহামদুলিল্লাহ মাঝে মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় সফরে যাওয়ার সুযোগ হয়ে থাকে ৷ সফরে জীবন সংশোধনের অসংখ্য উপাদান ও পাথেয় হুজুরের থেকে সংগ্রহ করে থাকি, একটি পাথেয় সংগ্রহের গল্প আজকে শুনাব ৷

গত ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর অর্থাৎ বছরের শেষ দিন চুয়াডাঙ্গা জেলার উলামায়ে কেরামের দাওয়াতে সেখানে হুজুরের সোহবতে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল ৷ দুটি প্রোগ্রামে হুজুর বয়ান করেছিলেন ৷

একটি হলো আসরের পরে বুজুর্গগড়ি মাদ্রাসায় ওলামাদের মজলিসে ‘একজন আলেমের গুণাবলী ও বৈশিষ্ট্য’র ওপর হুজুর গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলেছিলেন ৷ দ্বিতীয়টি হল, চুয়াডাঙ্গা শহরের একটি ময়দানে বাদ এশা সাধারণ মুসলমানদের উদ্দেশ্যে কিছু দ্বীনী কথা বলেছিলেন ৷

বিদায় সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা ওলামা পরিষদের সভাপতি ও সেক্রেটারী বন্ধুবর জুনায়েদ ভাই ও মোস্তফা কামাল ভাই হুজুরের হাতে ৩০০০০ টাকার একটি খাম হাদিয়া হিসেবে পেশ করলেন ৷ হুজুর খামটা হাতে পেয়ে জিজ্ঞাস করলেন আপনাদের ওলামা পরিষদের নিজস্ব কোন লাইব্রেরী বা কুতুব খানা আছে কি? তারা বললেন , না ৷ হুজুর বললেন এই টাকাটা দিয়ে এখানে ওলামা পরিষদের উদ্যোগে একটি লাইব্রেরির যাত্রা শুরু করুন ৷

তারা দারুন বিব্রত হল, এবং বলল হুজুর আপনি হাদিয়া নিয়ে যান আমরা লাইব্রেরি করে নিব , কিন্তু হুজুর তা মানলেন না ৷
অবশেষে হুজুর বিজয়ী হলেন এবং তারা টাকাটা ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হল, হুজুর তাদের মনজয় করার জন্য দীর্ঘক্ষণ চাপাচাপির পর ১০০০ টাকা গ্রহণ করলেন ৷ আবার হেমায়েতপুরে নেমে আমাকে বাড্ডার একটি গাড়িতে উঠিয়ে ভাড়া হিসাবে সেই টাকা দিয়ে দিলেন ৷ হযরতের এই কাজ থেকে আমাদের শিক্ষণীয় কয়েকটা বিষয় আছে ৷

একটি হচ্ছে , নিজের গাটির থেকে ১০-১৫ হাজার টাকার তেল ও ড্রাইভারের খরচ বহন করে নিঃস্বার্থভাবে দাওয়াতের কাজ করা এবং এখলাসের এমন প্রমাণ দেয়া ৷ এই জন্য আমার কাছে মনে হয়েছে ব্যক্তি মাওলানা আব্দুল মালিকের চেয়ে তার এখলাসের পরিধি আরো বড়।

দ্বিতীয়টি হচ্ছে , মানুষকে কোন কিছু শেখাতে হলে নিজ থেকে কোরবানির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করা ৷

তৃতীয় হচ্ছে, বিভিন্ন এলাকায় আমাদের ওলামায়ে কেরামের যে সংগঠনগুলো আছে সেগুলোকে পড়াশোনা ও গবেষণামুখি করার চেষ্টা করা৷

চতুর্থটি হচ্ছে , একজন অভিভাবক হিসাবে তার শিষ্যতুল্যদের মধ্যে কি ঘাটতি আছে সেটা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা ও তার সমাধানের নিজ থেকে চেষ্টার উদ্যোগ নেয়া ৷

পঞ্চমটি হচ্ছে, অর্থব্যয়ের সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা হচ্ছে কিতাব ক্রয়করা ও ইলম চর্চার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা ৷

আল্লাহ তায়ালা এমন দয়ালু বটবৃক্ষদের ছায়া এ জাতির উপরে দীর্ঘ করেন ও তাদেরকে মূল্যায়ন করার তৌফিক দান করেন।

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ