শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার 'উলামায়ে কেরামদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব'   নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই  সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ

রক্তদানে হোক আত্মার বন্ধন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।। আব্দুর রউফ আশরাফ ।।

পৃথিবীতে অদ্বিতীয় কোন দান থাকে তাহলে তা হল রক্তদান। নিঃস্বার্থে রক্তদান এটি পৃথিবীর সকল দেশের সর্বশ্রেণীর মানুষেরা দিয়ে আসছেন। উন্নত দেশে বেশিরভাগ রক্তদাতাই হলেন স্বেচ্ছায় রক্তদাতা, যারা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে রক্তদান করেন। দরিদ্র দেশগুলোতে এ ধরনের প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছায় রক্তদাতার সংখ্যা অনেক কম, বেশিরভাগ রক্তদাতাই কেবল তাদের পরিচিতজনদের প্রয়োজনে রক্তদান করেন।

বেশির ভাগ রক্তদাতাই সমাজসেবামূলক কর্মসূচি মনে করে রক্তদান করেন, তবে কিছু মানুষ পেশাদার রক্তদাতা, অর্থাৎ তারা অর্থ বা কোন ভাতার বিনিময়ে রক্তদান করে থাকেন। আবার রক্তদাতা তার ভবিষ্যত প্রয়োজনে রক্ত পেতে পারেন। আবার কিছু সংখ্যাক আছেন যারা এ ভেবে রক্তদান করেন, যে আমার আত্মীয়স্বাজন বিপদেআপদে রক্তা পাবো। এ মনে করে অনেক রক্তদাতা বিভিন্ন ব্লাডা গ্রুপে সংযুক্ত হয়ে রক্তদান করেন।

ধর্মীয় দৃষ্টিতে রক্তদান অত্যন্ত পুণ্য বা সওয়াবের কাজ। পবিত্র কুরআনের সূরা মায়েদার ৩২নং আয়াতে উল্লেখিত রয়েছে, ‘.আর যখন কেউ কোনো মানুষের জীবন রক্ষা করল, সে যেন সমগ্র মানবজাতির জীবন রক্ষা করল।’ বলা হয়েছে- ‘নিঃশর্ত দানের জন্যে রয়েছে চমৎকার পুরস্কার। তারা লাভ করে আশীর্বাদধন্য দীর্ঘজীবন ও অমরত্ব।’ আসলে সব ধর্মেই রক্তদানকে উৎসাহিত করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে রক্তদানের মাধ্যমে প্রাণ বাঁচানো একটি মহৎ কাজ এবং বড় ইবাদত।

রক্ত কখন দিবো এবং কেন ?

যখন কোনো অসুস্থ ব্যক্তির জীবননাশের আশঙ্কা দেখা দেয় এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের মতে তার শরীরে অন্যের রক্ত দেওয়া ছাড়া বাঁচানোর কোনো পন্থা থাকে না, তখন রক্ত দিতে কোনো অসুবিধা নেই। বরং এ ক্ষেত্রে ইসলাম রক্তদানে উৎসাহ দিয়েছে।

রক্ত দেওয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ অসুস্থ ব্যক্তির মৃত্যুর আশঙ্কা নেই, কিন্তু রক্ত দেওয়া ছাড়া তার জীবনের ঝুঁকি বেড়ে যাবে অথবা রোগমুক্তি বিলম্বিত হয়; এমন অবস্থায় রক্ত দেওয়া আবশ্যিক জায়েজ।

মানুষের জীবন ও দেহের সুরক্ষায় রক্ত অপরিহার্য অনুষঙ্গ। কিন্তু মানুষে মানুষে অনেক তফাৎ! কেউ রক্ত দেয়; আবার কেউ রক্ত নেয়। কেউ কেউ তো এমনও আছে, যারা রক্তের বন্যা বইয়ে দিয়ে নিষ্ঠুর জিঘাংসায় লিপ্ত হয়। খুনখারাবি মারামারি হানাহানি করে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে টেটাবিব্ধ হয়ে রক্তের স্নাত ঘটাই। প্রেম-বিরহে হাত কেটে অযথা রক্ত ক্ষয় করি। ছলনা ভরা ভালোবাসার ফাঁদে পড়ে রক্ত ঝড়ানোর ঘটনা বাড়ছে অহরহ।

খুন-পিয়াসী ‘খুনিয়া’ হয়ে ওঠে। মানবতার গায়ে এঁকে দেয় কলঙ্ক-চিহ্ন। কিন্তু এ রক্তই অনেকে  ভ্রাতৃত্ব ও মানবতার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে মুমূর্ষু রোগীর জন্য আনন্দচিত্তে ও অকাতরে বিলিয়ে দেয়। শুধু সওয়াব-পুণ্যের আশায়; আর একটুখানি হাসির ঝিলিক দেখতে।

রক্তদানের অনেক উপকারীতা রয়েছে। চিকিৎসকেরা গবেষণা মতে একজন সুস্থ্য স্বাস্থ্যসম্মত মানুষ চার মাস অন্তর অন্তর রক্ত দিতে পারে।
নিয়মিত রক্তদান করলে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমে।

রক্তদানে প্রথম এবং প্রধান কারণ,একজনের দানকৃত রক্ত আরেকজন মানুষের জীবন বাঁচাবে।

এক গবেষণায় দেখা যায়, যারা বছরে দুই বার রক্ত দেয়, অন্যদের তুলনায় তাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে। বিশেষ করে ফুসফুস, লিভার, কোলন, পাকস্থলী ও গলার ক্যান্সারের ঝুঁকি নিয়মিত রক্তদাতাদের ক্ষেত্রে অনেক কম পরিলক্ষিত হয়েছে।

রক্ত দিয়ে স্থাপিত বন্ধন এবং সম্পর্ক গুলি অর্থ দিয়ে প্রতিষ্ঠিত বন্ধন এবং সম্পর্কের চেয়ে অনেক বেশী। রক্তদানে হয়না ক্ষতি বরং রক্তদানে মানবতা বেঁচে থাকে। আসুন আমরা নিঃস্বার্থে রক্তদানে সম্প্রীতর মানবতার সেতু বন্ধন অটুট রাকি।

শিক্ষক: জামিয়া মাদানিয়া ইসলামিয়া হলদারপুর

কেএল/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ