শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার 'উলামায়ে কেরামদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব'   নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই  সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ

ওমর ইবনে আবদুল আজীজ ও পাঠাগার ব্যবস্থা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবু সাঈদ হিজরি সালের প্রথম শতাব্দীতে যেসব খলিফা অতিবাহিত হয়েছেন, লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠায় তাদের আগ্রহ ছিল অনেক বেশি। কিতাব সংগ্রহ ও পাঠাগারের সমৃদ্ধি এক ধরনের প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এর অবশ্য কারণও ছিল। তখন ক্ষমতার মসনদে যেতে হলে শরীয়তের প্রাজ্ঞ ব্যক্তি হতে হতো। ইলমের ময়দানে সমকালীন উলামায়ে কেরাম কর্তৃক স্বীকৃত হতে হতো।

এজন্য তারা একদিকে যেমন কিতাব সংগ্রহ ও পাঠাগারের সমৃদ্ধির প্রতি জোর দিতেন, অনুরূপ বিভিন্ন কিতাবাদী অধ্যয়নপূর্বক শরীয়তে পরিপুষ্ট হবার প্রতিও মনোনিবেশ করতেন। আলেমদের সাথে সুসম্পর্ক রাখা, লাইব্রেরিকে তাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া, লেখালেখি ও রচনার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা ছিল তাদের অন্যতম ব্রত। আলেমদের স্বীকৃতি তার সাম্রাজ্যকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করবে। জ্ঞান-বিজ্ঞানে আলেমদের অবদান তার সময়কালকে উজ্জ্বল রাখবে। এজন্য নিজেদের স্বার্থেই আলেমদের সাথে সম্পর্ক রাখা খলিফাদের জন্য অবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের মত অন্যান্য সভ্যতা সংস্কৃতির প্রতিও খলিফাদের যথেষ্ট আগ্রহ ছিল। এজন্য অন্যান্য ভাষার জ্ঞান-বিজ্ঞানের গ্রন্থাদি অনুবাদের প্রতিও তারা গুরুত্ব দিতেন। ফলে তাদের পাঠাগারে অন্যান্য জ্ঞান-বিজ্ঞানের কিতাবাদির‌ও বিশাল সম্ভার গড়ে উঠেছিল। জীবনীভিত্তিক ইতিহাসের গ্রন্থবলীতে এর বহু উদাহরণ পাওয়া যাবে।

প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক জালাল উদ্দীন কিতফি প্রণীত আখবারুল উলামা বিআখবারিল হুকামা গ্রন্থে এসেছে, খলিফা উমর ইবনে আবদুল আজিজ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর গ্রন্থাগারে চিকিৎসাশাস্ত্রের বিখ্যাত কিতাব আহরানুন নাস ছিল। একবার এ কিতাবের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা উঠলে তার গুণাগুণে তিনি মুগ্ধ হন। সেবককে তিনি কিতাবটি গ্রন্থাগার থেকে এনে তার নামাজের স্থানে রাখতে বলেন। যেন কিতাবটি আদ্যোপান্ত পড়ে শেষ করতে পারেন। শেষ করার পর তার কাছে মনে হলো, কিতাবটির ব্যাপক প্রচার-প্রসার হওয়া উচিত। পরে এ বিষয়ে তিনি ইস্তেখারা করেন। চল্লিশ দিন পর যখন তার মন সায় দিলো, তিনি কিতাবটির ব্যাপক প্রচার-প্রসার শুরু করলেন।

ইমাম ইবনে আব্দিল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি তার অমর গ্রন্থ জামিউ বয়ানিল ইলমি ওয়া ফাযলিহিতে বলেন, ইমাম যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজ রহমতুল্লাহি আলাইহি তার খেলাফতকালে বড় বড় মুহাদ্দিসদের কাছে এই মর্মে পত্র প্রেরণ করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যে সকল হাদিস বিশুদ্ধ সূত্রে তাদের নিকট পৌঁছেছে, তা যেন খলিফা বরাবর লিখে পাঠায়।

তখন আমরা বিপুলসংখ্যক সহিহ হাদিসের সংকলন তৈরি করি। তিনি সংকলনগুলো খেলাফতের অন্তর্ভুক্ত সকল শহরে প্রেরণ করেন।
ঘটনা দুটি থেকে একথা প্রতীয়মান হয় যে, খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজ রহমতুল্লাহি আলাইহি যেভাবে সুনানে রাসুলের প্রচার-প্রসার করেছেন, অনুরূপ জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার প্রচার-প্রসারেও অবদান রেখেছেন।

উভয়টির মাঝে কোন বৈপরীত্য জ্ঞান করেননি। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে, তিনিসহ অন্যান্য উমাইয়া খলিফাদের খেলাফতকালে দ্বীনি ইলমের প্রচার-প্রসার‌ই অধিক পরিমাণে হয়েছে। তবে খেলাফতের অধীনে যেসব পাঠাগার গড়ে উঠেছে, তাতে দ্বীনি বিষয়াদির মতো জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার কিতাবাদির‌ও বিপুল সমাহার ছিল।

প্রখ্যাত আরবি সাহিত্যিক ইয়াকুত হামাবি মু’জামুল উদাবা গ্রন্থে বলেন, ‘উমাইয়া খলিফা খালিদ ইবনে ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া ছিলেন বিশিষ্ট কবি। ছিলেন চিকিৎসা বিজ্ঞান ও রসায়ন শাস্ত্রের‌ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্ব।… কথিত আছে, তিনি আরব-আজমের কোন ইলম শেখা বাকি রাখেননি।’ ইবনে খাল্লীকান বলেন, তিনি চিকিৎসা ও রসায়ন শাস্ত্র বেশ ভালোভাবেই আয়ত্ত্ব করেছিলেন। এ বিষয়ে তার কিছু কিতাব রয়েছে। সেগুলো তাঁর জ্ঞানের গভীরতার পরিচয় বহন করে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ