রফিকুল ইসলাম জসিম
নিজস্ব প্রতিবেদক>
দেশ ও সমাজের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, সেবা ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য গুনীজন সম্মাননা পেলেন কমলগঞ্জের কৃতি সন্তান ও প্রাক্তন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলহাজ্ব ডাঃ কাইয়ুম উদ্দিন। বাংলাদেশ মণিপুরী সাহিত্য সংসদের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সমাজের তিন গুনীজনকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২২ জুলাই) বিকেল ৩টায় সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ মণিপুরী সাহিত্য সংসদের সভাপতি এ কে শেরামের সভাপতিত্বে গুণীজন সংবর্ধনায় ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সদ্বীপ কুমার সিংহ, লেখক ও দৈনিক সিলেট মিররের সম্পাদক আহমদে নূর।
শিল্প-সংস্কৃতি, সমাজ উন্নয়ন, ক্রীড়া ও শিক্ষা খাতে যারা বিশেষ অবদান রেখেছেন মণিপুরী সমাজের এরকম বিশিষ্ট গুণীজনদের ১৯৭৯ সাল থেকে সম্মাননা জ্ঞাপন করে আসছেন বাংলাদেশ মণিপুরী সাহিত্য সংসদ। এবছর আলহাজ্ব ডা. কাইয়ুম উদ্দিন সহ সম্মাননা প্রাপ্ত অন্যরা হলেন- সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র এডভোকেট এস সি সিনহা ও রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রাণা কুমার সিনহা।
আলহাজ্ব ডাঃ মো: কাইয়ুম উদ্দিন একজন কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব।তিনি শুধু নিরেট একজন চিকিৎসক এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বাতিঘরই নন, তিনি একাধারে সমাজকর্মী, সমাজ সংস্কারক, শিক্ষানুরাগী এবং দাতা হিসেবে পরিচিত। তিনি ইসলামী দ্বীনের প্রচার-প্রসারে তিনি অত্যন্ত নিবেদিত প্রাণ ব্যক্তিত্ব। বিশেষ করে ইসলামের প্রচার-প্রসারে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মৌলানা আব্দুস সোবহান ইসলামী গণ পাঠাগার তার এটি এক অনন্য সৃষ্টি।
ডা. কাইয়ুম উদ্দিন ১৯৫৪ সনের ১ জানুয়ারী চা, বন আর হাওর পরিবেষ্টিত, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত আদমপুর ইউনিয়নের খরস্রোতা ধলাই নদীর পাড়ে নয়নাভিরাম পশ্চিম জালালপুর গ্রামে মৌলানা আব্দুস সোবহান এর ঔরসে এবং সালাইমান বিবির কোলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন আদমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
আদমপুর এম এ ওয়াহাব উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ ও সপ্তম এবং কমলগঞ্জ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে অষ্টম, নবম ও দশম এবং সিলেট সরকারি কলেজ (এম সি কলেজ)-এ উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। অতঃপর তিনি ১৯৭৪ সনে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৮০ সনে দক্ষিণ কমলগঞ্জের প্রথম ডাক্তার হিসেবে আবির্ভূত হন। এম.বি.বি.এস পাশ এবং ইন্টার্নি সম্পন্ন করার পর তিনি বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগে মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগ দেন।
ডা: কাইয়ুম উদ্দিন দীর্ঘ কর্মজীবনে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে বিশেষত সুনামগঞ্জের হাওর বাওর পরিবেষ্টিত তাহিরপুর ও শাল্লা উপজেলায়, পাহাড়-বন বেষ্টিত পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর ও সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং বান্দরবান জেলার রুমা ও থানচি, সিলেটের বিশ্বনাথ এবং সর্বশেষ মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০১১ সনে অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি আদমপুরবাজার সংলগ্ন নিজ বাসভবনে অবসর জীবন যাপন করছেন।
-এটি