শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর কমিটি ঘোষণা উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই: ধর্ম উপদেষ্টা পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে আলেম অন্তর্ভুক্তির দাবি হেফাজতে ইসলামের সিংগাইরে হেফাজতে ইসলামের গণসমাবেশ ২৯ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা হলে ‘হাত ভেঙে’ দেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘জুলাই বিপ্লবে আলেম-শিক্ষার্থীদের অবদান ও প্রত্যাশা’ নিয়ে আলোচনা সভা সোমবার সিলেটে অনুষ্ঠিত বিহানের ‘লেখালেখি ও এডিটিং কর্মশালা’ দেশে ফিরে কর্মফল ভোগ করুন, শেখ হাসিনাকে জামায়াতের আমির রাষ্ট্র সংস্কারে ইসলামবিরোধী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না: জাতীয় পরামর্শ সভা যাত্রাবাড়ীতে জাতীয় পরামর্শ সভায় গৃহীত হলো ৭ প্রস্তাব

এক হচ্ছে দুই জমিয়ত: ভাঙনের ১৪ বছর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবদুল্লাহ তামিম
নির্বাহী সম্পাদক>

বিভক্তির ১৪ বছর পর আবারো এক হচ্ছে ভারতের মুসলিমদের শক্তিশালী সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ।

গতকাল শুক্রবার দুদিনব্যাপী বৈঠক শেষে দুই জমিয়ত এক হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আল্লামা আরশাদ মাদানির জমিয়তের ওয়ার্কিং কমিটি গত মাসে একীভূতকরণের জন্য সম্মতি দেয়ার পর দুই জমিয়ত এক হওয়ার পক্রিয়া শুরু করে।

শুক্রবার শেষ হওয়া দুই দিনব্যাপী আলোচনার পর, ভারতের অন্যতম বৃহত্তম মুসলিম সংগঠন জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দের (জেইউএইচ) মাওলানা মাহমুদ মাদানী দল আল্লামা আরশাদ মাদানির জমিয়তের সাথে একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য একটি প্রস্তাব পাস করে।

শুক্রবার নিউ দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জমিয়ত উলমায়ে হিন্দের দুই দিনব্যাপী জাতীয় কার্যনির্বাহী সম্মেলনের পর নতুন করে দুই জমিয়তকে একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ ভারতের বৃহত্তম মুসলিম সংগঠনগুলির মধ্যে একটি। যার প্রায় দেড় কোটি কোটি সদস্য।

গতকাল শুক্রবার দীর্ঘ আলোচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয় যে জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দের ওয়ার্কিং কমিটি সংগঠনের সাম্প্রতিক পুনর্মিলন প্রক্রিয়া শুরু করবে। উপস্থিত উলামায়ে কেরাম পুনর্মিলনের প্রক্রিয়ার প্রশংসা করে ও স্বাগত জানায়।

উভয় জমিয়তই ইসলাম, দেশ ও মানবতার জন্য কাজ করে চলে পাল্লা দিয়ে৷ ২০১৫ সালের রমজানে ভারতীয় মুসলমানগণ একটি খুশির সংবাদ শুনতে পান৷ ‘উভয় জমিয়ত নিজেদের চিন্তার পার্থক্য ভুলে গিয়ে দেশ ও জাতির জন্য এক সঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্তে উপনিত হয়েছে৷

ঈদের পর দিল্লির হেড অফিসে জমিয়তের (দু’দলেরই) নেতৃবৃন্দ গোল টেবিল বৈঠকে মিলিত হন৷ পরস্পরের মতপার্থক্যের জায়গা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করেন৷ তবে কর্ম-কৌশল নির্ধারণে কিছুটা মতপার্থক্য রয়ে যায়৷ ফলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আর জনগণ শুনতে পায় না৷

যদিও উভয় জমিয়ত নয়া দিল্লির আইটিওতে অবস্থিত একি কেন্দ্রীয় অফিসে যার যার মতো কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলো এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমাবেশে সবাই একই মঞ্চে উপস্থিত হচ্ছিলেন৷

কয়েকদিন আগে দিল্লির ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জমিয়তের(এম) শান্তি সম্মেলনেও দুই মাদানিকে এই মঞ্চে দেখা গেছে৷ ব্যক্তি পর্যায়েও তাদের সুসম্পর্ক বজায় ছিলো৷

দুই জমিয়তের একীভূত করণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে আল্লামা আরশাদ মাদানী বলেন, ভারতের বর্তমান অবস্থায়, বিশেষত মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে যে চক্রান্ত চলছে, দেশেরতরে অসীম আত্মত্যাগের ইতিহাসের ধারক এবং মুসলমানদের এক শতবর্ষী মহৎ সংগঠন হিসাবে এই সংকট মোকাবেলায় জমিয়তের উচিৎ একসাথে কাজ করা।

একীভূত হওয়ার এই উদ্যোগকে একটি গণদাবি উল্লেখ করে আল্লামা মাদানী বলেন, ভারতের পরিস্থিতির কারণেই কেবল এই উদ্যোগ নয়, বরং এই ঐক্য আজ সকলের প্রাণের দাবি। আশা করি আগামী কিছুদিনের ভেতরই আল্লাহ তাআলা এই একীভূত হওয়ার এমন পথ ও পন্থা তৈরি করে দেবেন, যা সকলের জন্যই ইনশাআল্লাহ প্রশান্তিয় হবে।

ভারতীয় মুসলমানদের সবচে প্রাচীন রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন ‘জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ’। ১৯১৯ সালে হজরত শায়খুল হিন্দ মাহমূদ হাসান দেওবন্দী রহ.-এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় এই সংগঠন৷

শায়খুল আরব ওয়াল আজম হজরত সাইয়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানি রহ. ছিলেন তার একান্ত সহযোগী৷ সংগঠনটি ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা আন্দোলনে ঐতিহাসিক অবদান রাখে৷ স্বাধীনতার পর থেকে ভারতীয় মুসলমানদের যে কোনো সংকটে জমিয়ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে৷

মুসলমানদের আকিদা-বিশ্বাস, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা রক্ষা, শিক্ষা-দীক্ষা, জাতীয় পর্যায়ে মুসলিম নেতৃত্ব গঠনে ভূমিকা, মুসলিম যুবকদের অযথা রাষ্ট্রীয় হয়রানি থেকে রক্ষা, মুসলিম নারীদের অধিকার আদায়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে আসছে জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ৷

প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ ৯৯ বছর পর্যন্ত নেতৃত্বের পরিবর্তন আসলেও দলটির মাঝে কোনো বিভক্তি বা ফাটল সৃষ্টি হয়নি৷ কিন্তু ২০০৮ সালে এসে শত বছরের ঐক্যের বন্ধনে চির ধরে৷

তখনকার জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের প্রেসিডেন্ট মাওলানা সাইয়্যিদ আরশাদ মাদানি ও সেক্রেটারি জেনারেল, মাওলানা মাহমুদ আসআদ মাদানি’র চিন্তায় পার্থক্য দেখা দেয়৷ দু’জনের দর্শন দু’দিকে মোড় নিতে থাকে৷ শেষ পর্যন্ত জমিয়ত দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়৷ দেশের উলামা-তলাবাও দু’গ্রুপে বিভক্ত হয়৷ আম জনতা অনেকটা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে৷ সূত্র: উর্দু পয়েন্ট, রোজনামা, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ইন্ডিয়ান টিভি

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ