শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

বিদায়ের পথে রমজান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির হিসাব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হাসান মুরাদ।।
আশা-প্রত্যাশা মানব জীবনে বেঁচে থাকার এক মহাশক্তি। আশা হল; না পেয়েও পাওয়ার স্বপ্নে নিরব থাকা। হতাশার গ্লানি যদি কখনো জীবনে ছুঁয়ে যায়, সেখান থেকেও আশার বীজ বপন করা। আর মুমিনের জীবনে হতাশাও নেকী। শুধু প্রয়োজন সবরের। জীবনের বাঁকেবাঁকে আমরা আশার প্রাসাদ গড়ি। শেষ বিকেলে হিসেব করি, কি পেলাম কি হারালাম।

কেউ প্রাপ্তির আনন্দে হই আত্মহারা, কেউ বঞ্চিতের বেদনায় দিশেহারা। এভাবেই বয়ে চলছে জীবন নদী। সে স্রোতে গত হচ্ছে দিন, সপ্তাহ, মাস, বছর, যুগযুগান্তর। যেদিন থেকে প্রাপ্তবয়ষ্কের খাতায় নাম উঠেছে সেদিন হতে কত রমযান জীবনে এলো গেলো। কখনো কি ভেবেছি রমযানে কি পেলাম, কি পেলাম না? কি প্রত্যাশা করেছিলাম আর কি পেয়েছি? না কি প্রত্যাশা-প্রাপ্তির চিন্তা ছাড়াই অতীত করেছি সব রমজান?

রজবের চাঁদ থেকে রমযান পাওয়ার ব্যাকুলতায় বারবার মুখরিত হয়েছে খোদা প্রমিকদের যবানে “ হে আল্লাহ আমাদের রজব-শাবানের বরকাত দাও এবং রমযান পর্যন্ত পৌছিয়ে দাও।”

আল্লাহ আমাদের করুনা করে দান করেছেন মাহে রমজান। আরশের মালিক আমাদের রহমতের ছায়ায় শিতল করবেন, মাগফিরাতের চাদরে ঢেকে নিবেন, আর জাহান্নাম থেকে নাজাতের ফরমান জারি করবেন, এই তো মুমিনের প্রত্যাশা। রমজান তো আসেই মুমিনকে পাপশূন্য করে, সজীব করতে।জাহান্নাম থেকে মুক্তির খোশ-পয়গাম শোনাতে। একজন মুমিনের জীবনে এর থেকে বড় প্রত্যাশা আর কী হতে পারে?

কিন্তু আফসোস! আমরা রমজানের বাঁকা চাঁদ দেখে আনন্দে মসজিদে গিয়েছি, রোজা রেখেছি। আবার ঈদের আনন্দে মসজিদ ছেড়ে বাজার ধরছি। দুনিয়ার সওদা কিনতে আখেরাতের সওদা বিনাশ করছি। ২৭ শে রমযান ক্বদরের রাত মনে করে শেষ মুনাজত করে ভাবি সিবা অর্জন শেষ। বিদায় রমযান আবার দেখা যাবে আগামী বছর।তারপর ব্যস্ত হয়ে পড়ি নানান ব্যস্ততায়।

এক মাসের অর্জন যেন মুহূর্তেই ম্লান। ভুলে যাই কী প্রত্যাশা ছিল রমজানে।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন শ্রমিক যেমন দিনশেষে মুজুরি পায়, মুমিন বান্দাও তেমন রোজা শেষে পুরুস্কার পায়। সে পুরস্কার ক্ষমার, নাজাতের। সুতরাং তার থেকে বোকা আর কে যে পুরস্কারের সময় থাকে গায়েব! প্রাপ্তির এ সময়তো রোনাযারির, অশ্রু দানের। নিজেকে বড় অপরাধী ভেবে দরবারে ইলাহীতে মিনতি করতে থাকা।

হায়! আমার কি গোনাহ মাফ হল? আমি কি আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে পেরেছি? তাকওয়া অর্জন করতে পরেছি?
হযরত মাওলানা ইদরীস সন্দ্বীপী রহ: বলতেন, শিশু বাচ্চা তার সব প্রয়োজন পুরণ করে কেঁদে কেঁদে। তার না আছে চাওয়ার ভাষা না আবেদনের শক্তি। তাই সে কাঁদে এবং সব পেয়ে যায়। সুতরাং মানুষ যদি মালিকের কদমে মাথা রেখে বিনয়ের সাথে চোখ থেকে অশ্রু ফেলে, মালিক তাকে ক্ষমা না করে পারেন?  আমাদের দিলতো পাথর ,কিছু দিল তো পাথরের চেয়েও শক্ত।তাই আমাদের চোখে পানি নেই। শেষ রাতে, মৃদু আধারে যারা কাঁদে তাদের রমজান কত সুন্দর। মালিকের সাথে তাদের প্রেম কত গভীর।

খুব ইচ্ছে করে এমন দিলের পরশ পেতে । কিন্তু পাব কোথায় সে দিলওয়ালা । এখন তো হাত বাড়ালে প্রায় সবই পাওয়া যায়। শুধু অভাব তাদের, যাদের চোখদুটো অশ্রুবিগলিত। তাই বলে হতাশ হবোনা। হাল ছাড়ব না। দরবারে ইলাহিতে করুনা কামনা করতে থাকব।

চলুন রমজানের শেষ সময়টুকু সবাই মালিকের কদমে সিজদায় লুটে পড়ি। কাঁদতে না পারলেও কাঁদার ভান তো ধরতে পারি। আশা রাখি মালিক আমাদের ক্ষমা করে দিবেন। জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন। এটাই তো আমাদের বড় প্রাপ্তি।

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ