শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
তাপপ্রবাহ নিয়ে নতুন সংবাদ দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর রাঙামাটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ

মাহে রমজান: অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনের ইশতেহার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি এনায়েত কবীর

জবাবদিহিতা। সাধারণ একটি শব্দ। কিন্তু অপরাধ মূক্ত সমাজ গঠনে এর প্রভাব অনেক। কারণ জবাবদিহিতার মানসিকতা না থাকলে মানুষ বেপরোয়া হয়ে যায়। সংঘটিত হয় অনিয়ন্ত্রিত এবং সমাজবিরোধী বহু কার্যকলাপ। ফলে সমাজে তৈরি হয় বহুমুখী নৈরাজ্য ও অস্থিরতা।
তাই অপরাধমুক্ত সমাজ গঠনে জবাবদিহিতার মানসিকতা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

রমজানের রোজা মানুষকে জবাবদিহিতার প্রশিক্ষণ প্রদান করে। পৌঁছে দেয় জবাবদিহিতার উচ্চ শিখরে। কারণ খাবার গ্রহণের সামর্থ ও সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন একজন রোজাদার সারাদিন কেন না খেয়ে থাকে? লুকিয়ে লুকিয়ে ডুব দিয়ে কেন পানি পান করে না? কেন সে নিরবে নিভৃতেও পাপে জড়ায় না?এ সবকিছু থেকে বিরত থাকার মূল কারণ হলো জবাবদিহিতার মানসিকতা। কারণ একদিন তাকে এমন মহাপরাক্রমশালীর সামনে জবাবদিহি করতে হবে যিনি- يعلم خائنة الأعين وما تخفى الصدور চোরাই চোখের খেয়ানত এবং অন্তরের লুকায়িত বিষয় সম্পর্কেও তিনি জানেন। সূরা গাফির, আয়াত-১৯।

তাই মহান এক সত্তার সামনে জবাবদিহিতার চেতনা থেকেই রোজাদার ব্যক্তি যাবতীয় অন্যায়-অপরাধ থেকে বিরত থাকার সর্বাত্মক চেষ্টা করে। তাছাড়া রোজাদার ব্যক্তি জানে, শুধু পানাহার ত্যাগ করার নামই রোজা নয়। কারণ নবিজি জানিয়েছেন, যে ব্যক্তি রোজা রেখে মিথ্যাচারিতা ও মন্দ কাজ পরিত্যাগ করেনি তার পানাহার বর্জনের কোন গুরুত্ব আল্লাহর কাছে নেই। আল্লাহ তায়ালা তাঁর পানাহার ত্যাগ করার কোনই পরোয়া করেন না। সহিহ বুখারী হাদিস নং- ১৯০৩।

এছাড়া রোজাদার ব্যক্তি বিশ্বাস করে যে, রোজা হলো জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষার ঢাল স্বরূপ। তাই আত্মরক্ষার হাতিয়ার রোজাকে রক্ষার জন্য অহংকার, কুপ্রবৃত্তি, শয়তানের প্ররোচনা থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে। জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে হবে নিজের মাঝে বেড়ে ওঠা পশুত্বের যাবতীয় স্বভাব। নিজেকে মুক্ত রাখতে হবে পাপের যাবতীয় কালিমা থেকে।

ফলে সিয়াম পালনকারী জিহ্বার মাধ্যমে সংঘটিত সব ধরনের পাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখেন। কান দ্বারা সংগঠিত যাবতীয় অন্যায় থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখেন। সর্বপ্রকার অবৈধ এবং অন্যায় জিনিসের প্রতি দৃষ্টিপাত করা থেকে নিজের চোখকে নিরাপদ রাখেন।

হাতের মাধ্যমে সংগঠিত সব রকম অন্যায় থেকে নিজেকে নিবৃত রাখেন। নিজের মনকে অনৈতিক লোভ-লালসা ও চাহিদা থেকেও নিরাপদ রাখেন। দুনিয়ার বিভিন্ন রং তামাশার প্রতি মনকে আকৃষ্ট হতে দেননা। এভাবে সিয়াম পালন করলে রোজাদার মুক্তাকি উপাধিতে ভূষিত হন।
আর মুত্তাকিদের জন্য রয়েছে আল্লাহর অবারিত কল্যাণ ও রহমতের প্রতিশ্রুতি।

কোরআনে পাকে ঘোষিত হয়েছে, যদি জনপদের লোকেরা মুমিন হত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তবে আমি তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর যাবতীয় কল্যাণ উন্মুক্ত করে দিতাম। সূরা আরাফ-৯৬।

এছাড়া পাপ মুক্ত থাকার এই চেতনা সে সারা বছরই লালন করে। কারণ হাদিসে পাকে নবীজি ইরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালার কসম, মুসলমান এই মাসে সারা বছরের জন্য ইবাদতের শক্তি ও পাথেয় সংগ্রহ করে। এই মাস মুমিনের জন্য গনিমত।মুসনাদে আহমদ২/৩৩০, মাজমাউয যাওয়ায়েদ ৩/১৪০।

তাই রোজার সৌরভে প্রতিটি মানুষ যখন মুত্তাকির গুণে গুণান্বিত হয়ে যাবে তখন সমাজ বা রাষ্ট্র কোন অপরাধ সংঘটিত হবে না। সে সমাজ তখন প্রবাহিত হবে মঙ্গল ও শান্তির সুবাতাস।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ