শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার 'উলামায়ে কেরামদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব'   নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই  সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ

শিক্ষার্থীরা আখেরাতমুখী ভাবনা থেকে সরে আসায় সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে: মাওলানা নাসীম আরাফাত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

নুরুদ্দীন তাসলিম।।

কওমি মাদরাসাগুলোতে মূলত পাঠ্যবই বা ইবারত পড়ার প্রতি জোর দেওয়া হয়। মূল মতনকে সামনে রেখে সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের প্রচলন আছে। মূল্য যোগ্যতার বাইরে এই সিলেবাসে পড়াশোনা করা কঠিন। সাম্প্রতিক ছাত্র-ছাত্রীরা কিতাবের মূল মতন থেকে কিছুটা দূরে সরে যাচ্ছে। নোট-গাইড নির্ভর হয়ে পড়ছে। তাদের এই নোট নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে আসতে কী করণীয় এ বিষয়ে আওয়ার ইসলামের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগের সিনিয়র মুহাদ্দিস মাওলানা নাসীম আরাফাত

তিনি বলেছেন, আগের দিনে আমাদের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য থাকত ইসলামকে বোঝা, কিতাব  ও ফেকহা বোঝা, কিতাব অনুযায়ী আমল করা, মোটকথা দুনিয়াবী কোন চাওয়া-পাওয়া তাদের মাঝে ছিল না। উস্তাদরা যেভাবে বলতেন তারা সেভাবেই চলত।

‘কিন্তু বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মানসিকতায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। রেজাল্ট ভালো করা এখন তারা নিজেদের উদ্দেশ্য বানিয়ে নিয়েছে। বিভিন্ন মাদরাসায় এখন শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট কেন্দ্রিক পড়াশোনা করানো হয়। বোর্ড পরীক্ষায় রেজাল্ট ভালো করার গ্যারান্টি সম্বলিত  ব্যানারও দেখা যায় অনেক জায়গায়। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা ভালো রেজাল্ট করার জন্য যে কোনো ধরনের পন্থা অবলম্বন করলে শিক্ষকরা বিষয়টিকে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নেন’ বলেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, সব মিলিয়ে  শিক্ষার্থীদের ভিতরে অনেকটা এমন মনোভাব তৈরি হয়ে গেছে যে পরীক্ষায় রেজাল্ট ভালো করাটাই মূল উদ্দেশ্য। এতে শুধু শিক্ষার্থীদের দোষারোপ করা ঠিক হবে না, অনেক মাদ্রাসাতে শিক্ষকরাও ছাত্রদের বোর্ডের পুরাতন প্রশ্নগুলো দিয়ে অনুশীলন করে থাকেন। পরীক্ষার আগের রাতেও শিক্ষার্থীরা গাইড নিয়ে পড়ে থাক ‘।

তিনি বলেন, ‘এমনও দেখা যায় অনেক শিক্ষার্থী পরীক্ষার হলে দাঁড়িয়ে প্রশ্নে কি বলা হয়েছে তা জানতে চায়। এরপর সে বাংলায় উত্তর লিখে দিচ্ছে। অবস্থা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছাত্রদের আমরা যতই বোঝানোর চেষ্টা করছি, তারা আমাদের কথা কানে তুলছে না’।

এ থেকে উত্তরণে বেফাক বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় সামনে এগোচ্ছে। কিন্তু এত চেষ্টার পরেও খুব ফলাফল খুব আসছে বলে মনে হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন,  শিক্ষার্থীদের চিন্তাভাবনায় এ বিষয়টা ঢুকে গেছে যে ভালো রেজাল্ট-এর মাধ্যমে  পুরো দেশে  সাড়া ফেলে দেয়ার মাঝেই  স্বার্থকতা’।

‘সার্টিফিকেটকে কেন্দ্র করে দুনিয়াবি কর্মক্ষেত্রে নিজেকে যুক্ত করার মানসিকতাও তৈরি হয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে’।

‘এক সময় শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা শেষে দেওবন্দ থেকে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করতে চাইতো; কিন্তু বর্তমানে সার্টিফিকেট ভিত্তিক পড়াশোনা করে আল-আজহার, মদিনা ইউনিভার্সিটির সহ বিভিন্ন জায়গায় পড়াশোনার মানসিকতা তৈরি হয়েছে। দুনিয়াকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্দেশ্য, ঐতিহ্য চেতনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে’ বলে মনে করেন এই শিক্ষাবিদ আলেম।

‘এ থেকে উত্তরণে মুরুব্বীরা চিন্তাভাবনা করে যাচ্ছেন । অনেকে বিভিন্ন ছুটিতে ছোট ছোট কোর্সের ব্যবস্থা রেখেছেন। কোন কোন মাদরাসায় দুর্বল শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভিন্নভাবে মেহনত করা হচ্ছে। তবে কোন পথে আসলে সফলতা সেটা সময় সাপেক্ষ বিষয় এবং তা অনেক কঠিন মনে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষাবিদ মাওলানা নাসীম আরাফাত।

তিনি বলেন, ‘মূল কথা হল কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে আখেরাতমুখী যে চিন্তা ভাবনা ছিল সেটা থেকে তারা অনেকটাই দূরে সরে এসেছে। এতে করে এ ধরনের সমস্যাগুলো বেড়ে চলেছ ‘।

‘এ থেকে উত্তরণে বেফাক থেকে শুরু করে সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে বোর্ড যদি কোন ধরনের সফলতা নিয়ে আসতে পারে তাহলে দেশ জাতির জন্য তা অনেক বড় কল্যাণ বয়ে আনবে’ বলে মন্তব্য করেছেন রাজধানীর জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগের মুহাদ্দিস মাওলানা নাসীম আরাফাত।

এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ