শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
উত্তপ্ত খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার ‘উলামায়ে কেরামদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব’ নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই 

আল্লাহু আকবার ধ্বনি তোলা সাহসী তরুণীকে নেটিজেনদের অভিনন্দন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

নুরুদ্দীন তাসলিম।।

হিজাব পরে ক্লাসে বসার বৈধতার জন্য লড়াই করে যেতে হচ্ছে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের মুসলিম শিক্ষার্থীদের। কথিত ধর্মনিরপেক্ষ দেশটিতে হিজাবের অধিকার পেতে কর্ণাটক হাইকোর্টে মামলা করতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের। এই মামলার রায় নিয়ে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে কর্নাটকে।

এর মধ্যেই আজ মঙ্গলবার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা গেছে হিজাব পরিহিতা মুসলিম তরুণীকে ভয় দেখানোর জন্য জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়েছিল উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা, কিন্তু এসব তোয়াক্কা না করে গেরুয়া বাহিনীর নাকের ডগায় আল্লাহু আকবার তাকবীর ধ্বনি তোলেন এই মুসলিম তরুণী। দৃঢ়চিত্তে হেটে যান নিজের ক্লাস রুমে।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন হিজাবের পক্ষে তাকবীর ধ্বনি তোলে কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের কলিজায় কাঁপন ধরিয়ে দেওয়া মুসলিম তরুণী। তার পক্ষে সংহতি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অনলাইন একটিভিস্ট ও ইসলামী চিন্তাবিদদের অনেকেই।

জনপ্রিয় আলোচক ও গবেষক আলেম শায়খ আহমদুল্লাহ নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, `কর্নাটকে ইসলামের ফরজ বিধান হিজাবের কারণে নিপীড়নের শিকার বোনের প্রতি শ্রদ্ধা ও সংহতি৷'

অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও সমাজসেবক সাইমুম সাদী লিখেছেন, একটি শ্লোগানে কেপে উঠলো পুরো বিশ্ব।

ইসলামী রাজনীতিবিদ মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া লিখেছেন, যে ক্যাম্পাসে গেরুয়া উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা 'জয়শ্রীরাম' স্লোগান দিয়ে মুসলিম নারীকে অধিকার বঞ্চিত করতে চায়, সেখানে হেজাবধারী এক সাহসী নারী আকাশ-পাতাল প্রকম্পিত করে আল্লাহু আকবার স্লোগান দিয়ে ঈমানী শক্তি প্রদর্শন করেছেন। তার ঈমানদীপ্ত বীরোচিত এ ঘটনা মুসলমানদের মাঝে নব চেতনা সৃষ্টি করবে। একজন মুসলিম বোন বোরকা পরিধান করলে তাকে কেন ঘেরাও করা হবে? তার চতুর্দিকে 'জয়শ্রীরাম' স্লোগান কেন দেয়া হবে? এটা কোন ধরনের সভ্যতা? হেজাব পরা নারীর অধিকার। এ অধিকার রক্ষার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করাই মানবতার দাবি। বোরকা মুসলিম নারীদের ইসলামি ড্রেসকোড। কোন নাগরিকের ধর্মীয় ড্রেসকোড ব্যবহারের অধিকারে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হলে নিঃসন্দেহে তার মানবাধিকার হরণ করা হয়। মানবাধিকার হরণকারীরা মানবসভ্যতা ধ্বংসের অপচেষ্টায় লিপ্ত। বিশ্বসম্রদায়কে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। নতুবা বিশ্বসম্প্রীতি সাম্প্রদায়িক এ গোষ্ঠি ধ্বংস করে দিবে। স্যালুট বোন তোমাকে...

 

সাংবাদিক ও অনলাইন  অ্যাক্টিভিস্ট মুফতি এনায়েতুল্লাহ সেই তরুণীর ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, Allahu Akbar!
Salute you sister.

মুফতি সামসু্েদআহা কাসেমী লিখেছেন, হে বোন। তোমার প্রতি সশ্রদ্ধ সালাম। একঝাঁক পাষন্ডের সামনে তোমার বজ্রকন্ঠের "আল্লাহু আকবার " ধ্বনি প্রমাণ করে ওরা চাইলেই দ্বীনের বাতি নেভাতে পারবেনা, ইনশাআল্লাহ। তোমার সাথে সুর মিলিয়ে আমরাও বলি,লিল্লাহি তাকবীর, আল্লাহু আকবার।

লেখক ও অনলাইন একটিভিস্ট মাওলানা আব্দুল্লাহ আল-ফারুক লিখেছেন,মাঝে মাঝে আমরা বাংলাদেশে বসে ভারতীয় মুসলমান ও আলেমদের ঈমানি তেজ নিয়ে প্রশ্ন তুলি, সেকুলারিজমের প্রশ্নে তাদের সামান্য আপোষ দেখলে রে রে করে তেড়ে আসি; অথচ শত শত সারমেয় শাবকের সামনে কর্নাটকের এক হিজাবি বোনের নিডরচিত্তে আল্লাহু আকবার ধ্বনি দেখে আমাদের সবার ঈমান আজ খোরাক পেলো। বলুন, ৯০% ভাগ মুসলমানের দেশে এমন অভয়া সাহসিকতা আমাদের কজন দেখাতে পারবে!

প্রিয় বোন, আল্লাহ আপনাদের নুসরাত করুন। হিজাবের আযাদি দান করুন। আমাদের বাংলাদেশের বোনদেরও এমন আত্মমর্যাদাবোধ দান করুন।

আমিন ইয়া রব্ব।

খতিব ও লেখক মাওলানা আলী হাসান তৈয়ব লিখেছেন, আল্লাহু আকবার। নিশ্চয় আল্লাহ সবচেয়ে বড়।
আমরা আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি : কর্নাটকের মজলুম এই বোনদের ঈমান আমাদের ঈমানের চেয়েও অনেক বড়।
নিজের সুখ ও নিরাপত্তা ঠিক রেখে আমরা যারা ইসলামের নামে দলাদলি করি, ঘরানা রক্ষার নামে নিজেদের শক্তিকে খর্ব করি, নিজেদের উত্তম প্রমাণ করতে গিয়ে অন্যদের অধম বলি- সন্দেহ নেই তাদের চেয়েও বড় তামাম মজলুম সিরিয়ীয়, ফিলিস্তিনি ও ভারতীয়দের ঈমান । ইয়া রব্ব, দিলে মুসলিম কো ওহ জিন্দাহ তামান্না...
(চোখের পানি মুখছে মুছতে নিজের ঈমানের ক্ষুদ্রতায় লজ্জিত)।

আরবি ভাষার শিক্ষক মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী বাংলা আরবি ও ইংরেজি তিন ভাষায় আল্লাহু আকবার লিখে একটি ছন্দের অংশ শেয়ার করেছেন,

আল্লাহু আকবার তাকবীর বল
আয়রে দেশের তরুণদল
আল্লহর নামের জয়ধ্বনিতে
থর থর কাঁপবে মুশরিকদল
থর থর কাঁপবে গেরুয়াদল

কথা সাহিত্যিক সালাহুদ্দীন জাহাঙ্গীর  ভাইরাল সেই ভিডিও শেয়ার দিয়ে লিখেছেন, কলিজা লাগে...

মিরপুর মুসলিম বাজার মাদরাসার শিক্ষক ও  লেখক মাওলানা শামিম আহমেদও আল্লাহু আকবার লিখে সংহতি প্রকাশ করেছেন।

অনলাইন  অ্যাক্টিভিস্ট ইফতেখার জামিল লিখেছেন, মালয়েশিয়ায় মুসলিম নারীদের প্রায় সবাই হিজাব পরেন। চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর আগেও এখানে হিজাবের সংস্কৃতি এতটা জনপ্রিয় ছিলো না। গণসচেতনতার প্রভাবে এখন বলতে গেলে সবাই হিজাব পরেন। মহিলা পুলিশ থেকে শুরু করে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরাও যত্ন করে হিজাব করেন।
চল্লিশ বছর পরের কথা ভাবুন, বাংলাদেশেও কি হিজাব জনপ্রিয় করা সম্ভব? আপনার পরিবারে হিজাব আসুক, আপনার এলাকা-প্রতিষ্ঠানে দাওয়াত চলুক। একজন নারী যখন হিজাবকে বেছে নেন, তখন তিনি কেবল হিজাবধারীই হন না, তিনি একইভাবে খলিফাতুল্লাহ হয়ে উঠেন। তিনি ধরতে পারেন, তিনিও আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত খলিফা। তিনি প্রতিবাদ করেন, তিনি জানেন হিজাব পরার মতো প্রতিবাদ করাটাও তার মৌলিক দায়িত্ব।
হিজাব শুধু পোশাক না, হিজাব = ইবাদত ও রাজনীতি।

অনলাইন  অ্যাক্টিভিস্ট হাসিব আর রহমান লিখেছেন,শত শতাব্দীকাল ধরে এই ঈমানী দাস্তান আমাদের অনুপ্রেরণা দেবে...।

এছাড়াও সামাজিক মাধ্যমে হিন্দুত্ববাদীদের হিংসাত্মক মনোভাব এর প্রতি তীব্র ঘৃনা প্রকাশ করেছেন। সবাই ব্যক্তিগত জায়গা থেকে এই মুসলিম তরুণীর প্রতি সংহতি প্রকাশ ও তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। একে হিজাবের পক্ষের দৃষ্টান্তমূলক আন্দোলন হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন নেটিজেনরা।

কেএল/ এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ