বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ২৮ কার্তিক ১৪৩১ ।। ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


পরকাল গড়ার লক্ষ্যে জাতির উদ্দেশ্যে হজরত আলী রা. এর হৃদয় নিংড়ানো নসিহত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুযযাম্মিল হক উমায়ের।। তিনি বলতেন, দুনিয় হলো মৃত প্রাণীর ন্যায়৷ সুতরাং যে দুনিয়া থেকে কিছু পেতে চায়, সে যেনো কুকুরদের সাথে ওঠাবসা করাকে গ্রহণ করে নেয়৷

তিনি বলতেন, মানুষ বালেগ হয়ে আল্লাহ তায়ালাকে চিনে মৃত্যু বরণ করা, শিশুকালে মৃত্যু বরণ করার চেয়ে বহু গুণে উত্তম৷ যদিও শিশু অবস্থায় মারা গেলে বিনা হিসাবে বেহশত পাওয়া যায়৷

তিনি বলতেন, তোমরা আমল বেশি করার চেয়ে আমল কবুল করানোর মেহনত বেশি করো৷ কারণ, যে আমলের সাথে তাকওয়া থাকবে, সেই আমল পরিমানে কম হলেও শক্তির দিক দিয়ে অনেক বেশি প্রমাণিত হবে৷

তিনি বলতেন, মানুষের উচিত আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কারো কাছে আশা-ভরসা না রাখা৷ এবং গুনাহ ছাড়া অন্য কিছুকে ভয় না করা৷

যারা যে বিষয় জানে না সেই বিষয় জানতে লজ্জাবোধ করা উচিত নয়৷ তেমনি যারা আলেম তাঁদেরকে কোন অজানা বিষয়ে প্রশ্ন করলে, আমার সেটি জানা নেই- এই কথা বলতে লজ্জাবোধ করা উচিত নয়৷

তিনি বলেন, আমার নিজের উপর সবচেয়ে বেশি নফসের অনুসরণ এবং দীর্ঘ আশা-আকাঙ্খার ভয় হয়৷ কারণ, নফসের অনুসরণ করার কারণে মানুষ সত্যপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়৷ আর দীর্ঘ আশা-আকাঙ্খার কারণে মানুষ পরকালকে ভুলে যায়৷

বিজ্ঞ ফেকাহবীদ হলো ওই ব্যক্তি, যে মানুষকে আল্লাহ তাআলার রহমত থেকে হতাশ করে না৷ এবং আল্লাহ তাআলার শাস্তির ভয় থেকেও নির্ভয় করে না৷ এবং আল্লাহ তাআলার অবাধ্যতা ও গুনাহের কাজেও ছাড় দেয় না৷ এবং কুরআনুল কারীম থেকে সরে অন্য দিকে ধাবিত হয় না৷

যেই ইবাদতে ইলম নেই, ওই ইবাদতের মধ্যে কোন কল্যাণ নেই৷ আর যেই ইলমে বুঝশক্তি নেই, সেই ইলমের মধ্যেও কল্যাণ নেই৷ আর যেই পড়াশোনাতে কোন গবেষণা নেই, সেই পড়াশোনাতেও কোন কল্যাণ নেই৷

তাঁর সামনে ফালুদা রাখা হলো৷ তিনি দেখে বললেন, হে ফালুদা! নিশ্চয় তোমার ঘ্রাণ অনেক সুন্দর৷ তোমার রং সুন্দর৷ তোমার স্বাদ অনেক৷ কিন্তু যে জিনিসের অভ্যাস আমি এখনো করিনি, সেটিতে আমি অভ্যস্ত হতে পারিনি৷ এই বলে তিনি ফালুদা ফিরিয়ে দেন৷

তিনি হজরত উসমান রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর শাহাদাতের পর খাবার গ্রহণ করেননি৷ এতে বুঝা যায়, তাঁদের মধ্যে মহব্বতের সম্পর্ক কী পরিমান গভির ছিলো!

তিনি জামা তালি দিয়ে পরতেন৷ কারণ হিসেবে বলতেন, তালিযুক্ত কাপড় পরার দ্বারা অন্তরে বিনয় সৃষ্টি হয়৷ এও বলতেন, যে ঈমানদারগণ এটি অনুসরণ করবে৷

শীত মওসুমে তিনি ঠান্ডাকে সহ্য করতেন৷ এমনকি শীতে শরীরে কাঁপুনি এসে যেতো৷ তবুও তিনি চাদর ব্যবহার করতেন না৷ সরকারী কোষাগার থেকে চাদর গ্রহণ না করার কারণ জানতে চাইলে, তিনি বলেন, আমি বায়তুল মাল থেকে চাদর গ্রহণ করে মুসলমানদের জন্যে বরাদ্দকৃত সম্পদ কমানোর মাধ্যম হতে পারি না৷ অথচ, তখন বায়তুল মালে যতেষ্ট পরিমান চাদর স্টক ছিলো৷

তিনি বলতেন, তাকওয়া হলো, গুনাহের উপর অটল না থাকার এবং নিজের ইবাদত ও আনুগত্যের উপর আত্মতৃপ্তি না করার নাম৷

সূত্র: আকওয়ালে সালফ

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ