মুযযাম্মিল হক উমায়ের।। তিনি বলতেন, দুনিয় হলো মৃত প্রাণীর ন্যায়৷ সুতরাং যে দুনিয়া থেকে কিছু পেতে চায়, সে যেনো কুকুরদের সাথে ওঠাবসা করাকে গ্রহণ করে নেয়৷
তিনি বলতেন, মানুষ বালেগ হয়ে আল্লাহ তায়ালাকে চিনে মৃত্যু বরণ করা, শিশুকালে মৃত্যু বরণ করার চেয়ে বহু গুণে উত্তম৷ যদিও শিশু অবস্থায় মারা গেলে বিনা হিসাবে বেহশত পাওয়া যায়৷
তিনি বলতেন, তোমরা আমল বেশি করার চেয়ে আমল কবুল করানোর মেহনত বেশি করো৷ কারণ, যে আমলের সাথে তাকওয়া থাকবে, সেই আমল পরিমানে কম হলেও শক্তির দিক দিয়ে অনেক বেশি প্রমাণিত হবে৷
তিনি বলতেন, মানুষের উচিত আল্লাহ তায়ালা ছাড়া কারো কাছে আশা-ভরসা না রাখা৷ এবং গুনাহ ছাড়া অন্য কিছুকে ভয় না করা৷
যারা যে বিষয় জানে না সেই বিষয় জানতে লজ্জাবোধ করা উচিত নয়৷ তেমনি যারা আলেম তাঁদেরকে কোন অজানা বিষয়ে প্রশ্ন করলে, আমার সেটি জানা নেই- এই কথা বলতে লজ্জাবোধ করা উচিত নয়৷
তিনি বলেন, আমার নিজের উপর সবচেয়ে বেশি নফসের অনুসরণ এবং দীর্ঘ আশা-আকাঙ্খার ভয় হয়৷ কারণ, নফসের অনুসরণ করার কারণে মানুষ সত্যপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়৷ আর দীর্ঘ আশা-আকাঙ্খার কারণে মানুষ পরকালকে ভুলে যায়৷
বিজ্ঞ ফেকাহবীদ হলো ওই ব্যক্তি, যে মানুষকে আল্লাহ তাআলার রহমত থেকে হতাশ করে না৷ এবং আল্লাহ তাআলার শাস্তির ভয় থেকেও নির্ভয় করে না৷ এবং আল্লাহ তাআলার অবাধ্যতা ও গুনাহের কাজেও ছাড় দেয় না৷ এবং কুরআনুল কারীম থেকে সরে অন্য দিকে ধাবিত হয় না৷
যেই ইবাদতে ইলম নেই, ওই ইবাদতের মধ্যে কোন কল্যাণ নেই৷ আর যেই ইলমে বুঝশক্তি নেই, সেই ইলমের মধ্যেও কল্যাণ নেই৷ আর যেই পড়াশোনাতে কোন গবেষণা নেই, সেই পড়াশোনাতেও কোন কল্যাণ নেই৷
তাঁর সামনে ফালুদা রাখা হলো৷ তিনি দেখে বললেন, হে ফালুদা! নিশ্চয় তোমার ঘ্রাণ অনেক সুন্দর৷ তোমার রং সুন্দর৷ তোমার স্বাদ অনেক৷ কিন্তু যে জিনিসের অভ্যাস আমি এখনো করিনি, সেটিতে আমি অভ্যস্ত হতে পারিনি৷ এই বলে তিনি ফালুদা ফিরিয়ে দেন৷
তিনি হজরত উসমান রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর শাহাদাতের পর খাবার গ্রহণ করেননি৷ এতে বুঝা যায়, তাঁদের মধ্যে মহব্বতের সম্পর্ক কী পরিমান গভির ছিলো!
তিনি জামা তালি দিয়ে পরতেন৷ কারণ হিসেবে বলতেন, তালিযুক্ত কাপড় পরার দ্বারা অন্তরে বিনয় সৃষ্টি হয়৷ এও বলতেন, যে ঈমানদারগণ এটি অনুসরণ করবে৷
শীত মওসুমে তিনি ঠান্ডাকে সহ্য করতেন৷ এমনকি শীতে শরীরে কাঁপুনি এসে যেতো৷ তবুও তিনি চাদর ব্যবহার করতেন না৷ সরকারী কোষাগার থেকে চাদর গ্রহণ না করার কারণ জানতে চাইলে, তিনি বলেন, আমি বায়তুল মাল থেকে চাদর গ্রহণ করে মুসলমানদের জন্যে বরাদ্দকৃত সম্পদ কমানোর মাধ্যম হতে পারি না৷ অথচ, তখন বায়তুল মালে যতেষ্ট পরিমান চাদর স্টক ছিলো৷
তিনি বলতেন, তাকওয়া হলো, গুনাহের উপর অটল না থাকার এবং নিজের ইবাদত ও আনুগত্যের উপর আত্মতৃপ্তি না করার নাম৷
সূত্র: আকওয়ালে সালফ
-এটি