শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬


হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহু তায়ালার আত্মশুদ্ধিমূলক ১০ নসিহত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুযযাম্মিল হক উমায়ের।।

হযরত উসমান রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু। তিনি ইসলামের তৃতীয় খলিফা ছিলেন৷ শুরুর দিকে হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর দাওয়াতে ইসলাম গ্রহণ করেন৷ তিনি বলতেন, আমি ইসলামের চতুর্থ ব্যক্তি৷

হুজুর সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের দুই মেয়েকে তাঁর সাথে বিয়ে দেয়ার কারণে তাঁকে ‘যূন নূরাইন’ তথা দুই নূরের অধিকারী বলা হতো৷ দশ জন জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবীদের মধ্যে তিনি তিন নম্বর ৷ তিনি বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও গণিমতের অংশ পেয়েছিলেন৷

মসজিদে নববীর স্থান তাঁর টাকা দ্বারাই ক্রয় করা হয়েছিলো৷ মুসলমানদের সুমিষ্ট পানির ব্যবস্থার জন্যে তিনিই রোমা নামক কূপ ক্রয় করে সকলের জন্যে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন৷ কিন্তু আফসোসের বিষয় হলো, শাহাদতের দিন জালেমরা তাঁকে মসজিদে নববীতে নামায আদায় করতে দেয়নি এবং পানির লাইনও বন্ধ করে দিয়েছিলো৷

ইসলামের জন্যে তিনি সবচেয়ে বেশি আর্থিক সহয়তা করেছিলেন৷ তিনি ৩৫ হিজরীতে রাষ্ট্রদ্রোহীদের হাতে নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করেন৷( রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু)৷ তাঁর কিছু আত্মশুদ্ধিমূলক উপদেশ নিচে তুলে ধরা হলো:


 

১>তোমরা আল্লাহ তাআলার সাথে ব্যবসা করো, লাভবান হবে৷

২> ইবাদত বলা হয়, আল্লাহ তাআলার বিধানাবলীকে সংরক্ষণ করা৷ কারো সাথে দেয়া ওয়াদা পূর্ণ করা৷ যা কিছু হাতে আসে, তাতে সন্তুষ্ট থাকা৷ কোন কিছু না আসলে, সবর করা৷

৩> দুনিয়ার চিন্তা-ভাবনা করার দ্বারা অন্তরে অন্ধকার সৃষ্টি হয়৷ আর পরকালের ফিকির করার দ্বারা অন্তরে নূর সৃষ্টি হয়৷

৪> মুত্তাকী হলো ওই ব্যক্তি, যে মনে করে আমি ছাড়া সকলেই মুক্তি পেয়ে যাবে৷ আমিই হয়তো পরকালে ধরা পড়ে যাবো৷

৫> সবচেয়ে সর্বনাশ ওই ব্যক্তির হবে, যে লম্বা জীবন পেয়েও পরকালের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারেনি৷

৬> যে ব্যক্তির জন্যে দুনিয়া জেলখানা হবে, তার জন্যে কবর আরামের স্থান হবে৷

৭> যদি তোমাদের অন্তর পবিত্র হয়ে যায়, তাহলে পবিত্র কুরআনুল কারীমের তিলাওয়াত বা শোনা থেকে তোমাদের অন্তর পরিতৃপ্ত হতে পারে না৷

আরো পড়ুন: জাতির উদ্দেশে হযরত আবু যর রা.-এর দরদমাখা ভাষণ

৮> গৃহবন্দীর দিন সাহাবাগণ তাঁর কাছে জানতে চান, আপনি তো এখন মসজিদে যেতে পারছেন না৷ যদি এইসব রাষ্ট্রদ্রোহীদের মধ্যে কেউ নামাযের ইমামতি করে, তাহলে আমরা কী তার পিছনে নামায আদায় করবো?

উত্তরে তিনি বলেন, নামায ভালো জিনিস৷ যখন তোমরা মানুষদেরকে ভালো কাজ করতে দেখো, তখন তোমরা তাদের সাথে ভালো কাজে অংশগ্রহণ করো৷ তবে মন্দ কাজে কারো সঙ্গ দেয়া থেকে বিরত থাকো৷

৯> দুনিয়া হলো চাকচিক্য ও মনোরম দৃশ্যের ন্যায়৷ যা দর্শককে নিজের দিকে আকৃষ্ট করে৷ এবং অনেককে ধোঁকায় ফাঁসিয়ে দেয়৷ সুতরাং তোমরা দুনিয়ার দিকে আকৃষ্ট হয়ো না৷ দুনিয়ার উপর ভরসা করো না৷ কারণ, দুনিয়া ভরসা করার মতো উপযুক্ত বস্তু নয়৷ আর মনে রেখো! যে ব্যক্তি দুনিয়াকে ছেড়ে দিয়েছে, দুনিয়া নিজে তাঁর পিছনে পিছনে অপদস্ত হয়ে ঘুরতে থাকে৷

১০> যারা দুনিয়া থেকে চলে গিয়েছে তাদের থেকে উপদেশ গ্রহণ করো৷ তারপর চেষ্টা-প্রচেষ্টা করো৷ উদাসীন হয়ো না৷

সূত্র: আকওয়ালে সালফ।

আরো পড়ুন: হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা.-এর হৃদয়কাড়া ১০ উপদেশ

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ