শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬


যে আয়াত দ্বারা আবু বকরের পক্ষে সাক্ষ্য দিলেন আল্লাহ তাআলা!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মাদ নুরুল ইসলাম।। যখন সূরা বাকারাহ'র দুইশো পঁয়তাল্লিশ নম্বর আয়াত নাযিল হলো, তখন ইহুদিদের মাঝে শোরগোল পড়ে গেলো। আয়াতটি ছিল, এমন কে আছে যে, আল্লাহকে কর্জ দেবে? উত্তম কর্জ; অতঃপর আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ-বহুগুণ বৃদ্ধি করে দিবেন। আল্লাহই সংকোচিত করেন এবং তিনিই প্রশস্ততা দান করেন এবং তাঁরই নিকট তোমরা সবাই ফিরে যাবে।

কর্জ দ্বারা বোঝানো হয়েছে আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা। আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে জান্নাত কিনে নেওয়া। কিন্তু ইহুদিরা বুঝতে ভুল করলো। তিরস্কার করে বলল, মুসলমানদের আল্লাহ দেখি বড় ফকির! আমাদের থেকে কর্জ চাচ্ছেন। তাদের রব আমাদের মুখাপেক্ষী; আমরা হলাম ধনী, বিত্তবান! সাধারণত একজন মানুষ আরেকজনের কাছে কোন জিনিস কর্জ চাই তখন, যখন তার কাছে থাকে না। তবে, তার কাছে এই জিনিসটা এই মুহূর্তে খুব প্রয়োজন! ইহুদিরা সেরকম ভেবে রবকে তিরস্কার করতে লাগলো।

এক ইহুদি তিরস্কার করতে শুনে ফেলেন আবু বকর রা.। তিনি এটা সহ্য করতে পারলেন না। আর এটা সহ্য করার মতো বিষয়ও না! রাগে-ক্ষোভে তাঁর আঁখিদ্বয় লাল বর্ণে ছেয়ে গেলো। সজোরে ইহুদির গালে বসিয়ে দিলো এক চড়। এরপর আবু বকর রা. চলে গেলেন।

চড় খেয়ে ইহুদি বিচার নিয়ে গেলে নবীজি সা.-র কাছে। বিচার দিলো, আপনার সাহাবী আবু বকর আমাকে থাপ্পড় মেরেছে। নবীজি সা. শুনে বললেন ‘ তুমি হয়তো ভুল বলছো। আমার আবু বকর কখনো কাউকে থাপ্পড় দিতে পারে না। তোমাকে উমর থাপ্পড় দিয়েছে। কারণ, উমর হলেন রাগী।

ইহুদি নাছোড়বান্দা, ‘ না, আমাকে আবু বকরই থাপ্পড় দিয়েছে। আমি আবু বকরকে চিনি। যখন ইহুদি জোর দিয়ে বললেন— নবীজি সা. বললেন, ‘ আচ্ছা, ঠিক আছে। আবু বকরকে ডাকো।’ আবু বকর নবীজির খেদমতে উপস্থিত হলেন। নবীজি সা. বললেন, হে আবু বকর! তুমি এই ব্যক্তিকে কেন থাপ্পড় মারলে?

আবু বকর রা. ভদ্রতার সহিত নরম সূরে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল সা.! এই ব্যক্তি আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে ফকির বলেছে তাই থাপ্পড় দিয়েছি।’ ইহুদি সাথে সাথে বলে উঠলো, ‘আবু বকর মিথ্যা বলছে। আমি এরকম বলিনি। নবীজি সা. বললেন, তোমার পক্ষে সাক্ষী পেশ করো।

আবু বকর রা. বললেন, ‘ ইয়া রাসুলুল্লাহ সা.! সেখানে শুধুমাত্র আমিই ছিলাম। সাক্ষী পাবো কোত্থেকে?

রাসূল সা. নিষ্ঠাবান বিচারক ছিলেন। সাহাবা রা. যতই প্রিয় হোক না কেন বিচারের ক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেন না। কারো পক্ষপাতিত্ব করতেন না। রাসূল সা. বললেন, যদি তুমি সাক্ষী পেশ করতে না পারো, তাহলে তুমি ইহুদিকে যেভাবে থাপ্পড় দিয়েছিলে ঠিক সেভাবে ইহুদিও তোমাকে একটা থাপ্পড় দিবে।

সাথে সাথে আল্লাহ তাআলা আবু বকর রা.-র পক্ষে সাক্ষ্য হিশেবে রাসূল সা.-র উপর আয়াত নাযিল করেন। আয়াতটি হলো, ‘নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাদের কথা শুনেছেন, যারা বলেছে যে, আল্লাহ হচ্ছেন অভাবগ্রস্ত আর আমরা বিত্তবান!’ সূরা আলে ইমরান ১৮১

কারণ, যখন আবু বকর রা. ইহুদিকে থাপ্পড় দিয়েছিলেন সেখানে শুধুমাত্র আবু বকর রা. ছিলেন। এছাড়াও আরো একজন অদৃশ্য সাক্ষী উপস্থিত ছিলেন— তিনি হলেন আমার আপনার স্রষ্টা! সাক্ষী হিশেবে তিনিই ছিলেন। সুতরাং উপযুক্ত সাক্ষ্য পেয়ে রাসূল সা. আবু বকর রা.-র পক্ষে রায় দেন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ