শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার 'উলামায়ে কেরামদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব'   নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই  সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ

নির্বাচনী সহিংসতা রোধে যে পরামর্শ ইসলামি রাজনীতিবিদদের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

নুরুদ্দীন তাসলিম।।

ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, সহিংসতা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ঘটেই চলেছে। নির্বাচনী মাঠে নানা ইস্যুতে চলছে সংঘাত-সহিংসতা। প্রার্থীরা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে মারমুখী আচরণে। ফলে চলতি বছরেই নির্বাচনী সহিংসতায় মারা গেছে ৩৮ জন। আর আহত হয়েছেন ২ হাজারের বেশি নেতাকর্মী ও সমর্থক।

এ নিয়ে নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ।

[caption id="" align="alignnone" width="325"]তফসিলের পক্ষে সিইসি, আপত্তি চার কমিশনারের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা।[/caption]

সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বিগ্ন সিইসি নিজেও

চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে গত ২ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদা বলেছেন এসব ঘটনায় নির্বাচন কমিশন বিব্রত ও উদ্বিগ্ন। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা ইতিবাচক নয় বলেও মন্তব্য করেন সিইসি।

এ সময় সিইসির পাশে থাকা নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের এসব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা। আমরা ম্যাসেজ দিতে চাই, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে এর দায় তাদের উপরও বর্তাবে।

সিইসির এমন বক্তব্যও আশ্বাসের পরও থামছে না নির্বাচনী সহিংসতা। গতকালও কক্সবাজারে সহিংসতায় আহত হওয়ার পর মারা গেছেন জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ-সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।

[caption id="" align="alignnone" width="300"]কাদিয়ানীরা মুসলিম উম্মাহর ভয়ঙ্কর শত্রু জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া।[/caption]

‘উদ্বেগের কারণ কেন চিহ্নিত করছে না সিইসি’

এই সংঘর্ষের পেছনে দেশে গণতন্ত্র ও সুস্থ রাজনীতির চর্চা না থাকা এবং জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত না হওয়াকে প্রধান কারণ বলে মনে করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া ।

এছাড়াও এই ইসলামি রাজনীতিবিদের দৃষ্টিতে, ‘নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয়। তাদের হাতে যে ক্ষমতা আছে তারা এর সঠিক প্রয়োগ করতেও ব্যর্থ’।

তিনি বলেছেন, সিইসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সংঘর্ষের ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন। শুধু মুখে না বলে এই উদ্বেগের কারণগুলো কেন তারা চিহ্নিত করছে না? কেন যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না?- প্রশ্ন করেন তিনি।

‘যেহেতু উদ্বেগ আছে; তাই উদ্বেগের যথাযথ কারণও আছে। এই কারণগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের যথাযথ ব্যবস্থা নিলেই তো সংঘর্ষ কমে আসে’- বলেন তিনি।

‘সংঘর্ষ কারা তৈরি করছে তাদের চিহ্নিত করুন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দায়িত্ব পালনে কতটা তৎপর বিষয়টি তদন্ত করুন’- তাহলেই তো উদ্বেগের কারণগুলো অনেকাংশেই চিহ্নিত হয়ে যায়’ আওয়ার ইসলামকে বলেন তিনি।

‘নির্বাচন কমিশন একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, তাদের উচিত নিজেদের মত করে কাজ করা, তদন্ত করা। কিন্তু এ বিষয়টিতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছে তারা। তারা যদি নিষ্ঠার সাথে  কাজ করতেই না পারে; বারবার ব্যর্থ হয় তাহলে দায়িত্ব ছেড়ে দিক’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামি রাজনীতিবিদ মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া।

[caption id="" align="alignnone" width="299"]our Islam » অন্তত এক মাসের বাড়িভাড়া মওকুফ করুন: শেখ ফজলে বারী মাসউদ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।[/caption]

‘পৃথিবীর কোন গণতান্ত্রিক আইনে সমর্থন যোগ্য নয়’

একই বিষয়ে  ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (আইএবি) ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশন এক ধরনের কাগুজে নির্বাচন কমিশন। নিজের পক্ষ থেকে কিছু করার পরিবর্তে এই কমিশন বিশেষ ক্ষমতাসীন বলয়ের ইশারা-ইঙ্গিতে কাজ করে। তাই এই কমিশন থেকে আমরা ভালো কিছু আশা করতেই পারি না’।

তিনি বলেন, ‘অতীতে আমরা বারবার নিরুপায় হয়ে তাদের কাছ থেকে ভাল কিছুর প্রত্যাশা করেছি; কিন্তু কোনভাবেই আশানুরূপ কিছু পাইনি’।

মাওলানা ফজলে বারী মাসউদে ভাষ্য, ‘ ক্ষমতাসীনদের যে অগণতান্ত্রিক ও অসহিষ্ণু আচরণ তারই প্রতিফলন ঘটছে বর্তমান নির্বাচনগুলোতে’।

তিনি আরো সংযোগ করেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীদের জোরজবরদস্তি মূলক মনোনয়ন প্রত্যাহার করার ঘটনা ঘটছে, এমন স্বৈরাচারী আচরণ পৃথিবীর কোন গণতান্ত্রিক আইনে সমর্থন যোগ্য নয়’।

নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে, তারাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তৎপর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন-

এ বিষয়ে ইসলামী আন্দোলনের নগর সভাপতির বক্তব্য হলো, ‘কথার কথা এবং লোক দেখানোর জন্য কিছু বক্তব্য দিতে হয় তারই ধারাবাহিকতা রক্ষায় এ জাতীয় তিন-চারটে বক্তব্য আমরা বিভিন্ন সময় শুনতে পাই। মূলত  এগুলো কার্যকরী কোন বক্তব্য ও পদক্ষেপের আওতায় পড়ে না’- বলেন তিনি।

তিনি মনে করেন, ‘নির্বাচনে সহিংসতা বন্ধে নতুন পদক্ষেপ, নতুন আইনের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় হলো; যেসব ক্ষমতা সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে দেয়া হয়েছে তারা যদি এর সঠিক ব্যবহার করে তাহলে যে সহিংসতা ঘটছে তা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা সম্ভব। কিন্তু এক্ষেত্রে বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে কমিশন। তারা প্রমাণ করেছে যে নির্দিষ্ট বলয়ের প্রতিপত্তি বিস্তারে কাজ করছে তারা’।

ভোট ছাড়াই ৮১ চেয়ারম্যান - banglanews24.com

 ১১ নভেম্বর ৮৪৬টি ইউপিতে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন

প্রসঙ্গত, চলতি বছরে প্রথম ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই ভাগে। প্রথমে ২০৪টি নির্বাচন হয়েছে ২১ জুন আর ১৬০টি নির্বাচন হয়েছে ২০ সেপ্টেম্বর। দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৬টি ইউপিতে ১১ নভেম্বর, তৃতীয় ধাপে ১ হাজার ৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন হবে ২৮ নভেম্বর। সেই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে ২০টির মতো পৌরসভা নির্বাচনও।

চতুর্থ ধাপের তফসিল হতে পারে শিগগির। তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড। তবে স্থানীয় সাংসদ ও জেলা নেতাদের ইচ্ছায় শরীয়তপুর ও মাদারীপুরে নির্বাচন উন্মুক্ত করা হয়েছে। ডিসেম্বরেই সব ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন করতে চায় নির্বাচন কমিশন।

[caption id="" align="alignnone" width="343"]প্রেমের ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ১১ | প্রথম আলো থামছেই না ভোটের সংঘর্ষ: প্রতীকি ছবি। [/caption]

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও মেয়াদোত্তীর্ণ উপজেলার ভোটে আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে এ পর্যন্ত সংঘর্ষ হয়েছে ১৭৭টি। এতে নিহত হয়েছেন ৩৮ নেতাকর্মী। এখনো নিজেদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এমনকি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটছেই। দিন দিন ‘অভ্যন্তরীণ নির্বাচনী সহিংসতা’র শঙ্কা আরো বাড়ছে।

এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ