শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬


জাহান্নামিরা যেভাবে আক্ষেপ ও অনুতাপ করবে!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মাদ আবু আখতার।।

কেউ ভুল করার পর তার খারাপ পরিণতি দেখতে পেলে তার সে ভুলের জন্য আক্ষেপ ও অনুতাপ করে৷ পরিণতি যত বেশি ভয়ংকর হয় আক্ষেপ ও অনুতাপ তত বেশি প্রবল হয়৷ দুনিয়ার কোন ভুলের কারণে যে ক্ষতি হয় অনেক সময় তা বিভিন্নভাবে পুষিয়ে নেয়া যায়৷ কিন্তু পাপকাজ করে বিনা তাওবায় মারা গেলে এজন্য জাহান্নামে যে ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে তা থেকে মুক্তির কোন উপায় নেই৷

তাই দুনিয়ার সামান্য ক্ষতিতে আমরা যেমন আফসোস করি পরকালে পাপিষ্ঠরা তাদের পাপের পরিণতি স্বরুপ জাহান্নামে গিয়ে এর চেয়ে কোটি কোটি গুণ বেশি আফসোস করবে৷ মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনের অনেক আয়াতে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন৷

দুনিয়ার সব কৃতকর্মের জন্য পরকালে আল্লাহ তায়ালার নিকট বিচারের সম্মুখীন হতে হবে অনেকের মধ্যে এ বিশ্বাস নেই৷ ফলে জান্নাতের অফুরন্ত নেয়ামত লাভের আশা এবং জাহান্নামের কঠিন শাস্তির ভয় তাদের অন্তরে নেই৷ তারা প্রতিনিয়ত নেক আমলের ব্যাপারে চরম অবহেলা করছে এবং বিনাদ্বিধায় আল্লাহ তায়ালার নাফরমানি করছে৷

এভাবে তারা নিজেদেরকে অপুরণীয় ক্ষতির মধ্যে নিক্ষেপ করছে৷ কিয়ামতের দিন যখন তারা ভয়াবহ পরিণতি নিজের চোখে দেখতে পারবে তখন তাদের আফসোসের কোন সীমা থাকবে না৷ এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন, "নিশ্চয় তারা ক্ষতিগ্রস্ত, যারা আল্লাহর দরবারে বিচারের সম্মুখীন হওয়াকে মিথ্যারোপ করেছে।

এমনকি, যখন কিয়ামত তাদের কাছে হঠাৎ এসে যাবে, তারা বলবেঃ হায় আফসোস, এর ব্যাপারে আমরা কতই না অবহেলা করেছি। তারা তাদের পাপের বোঝা পিঠে বহন করবে। শুনে রাখ, তারা যে বোঝা বহন করবে, তা নিকৃষ্টতর বোঝা।"(সুরা আনআমঃ ৩১)

আমাদের সমাজে অনেকে রাসুলুল্লাহ সা. এর সুন্নাত মেনে চলতে পছন্দ করে না৷ তারা তাদের চাল-চলন, আচার-ব্যবহার, পোশাক-পরিচ্ছদ, লেন-দেন, সভ্যতা-সংস্কৃতি ইত্যাদি জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সা. এর আদর্শ পরিত্যাগ করে পাশ্চাত্যের ইয়াহুদী-খ্রিস্টানদের আদর্শ অনুসরণ করে৷ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এদেরকে জালিম আখ্যা দিয়েছেন৷ কিয়ামতের দিন তারা হাতের আঙ্গুল কামড়াতে থাকবে আর আফসোস করতে থাকবে৷ এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেন, জালিম সেদিন তার হাত দুটি দংশন করতে করতে বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রাসুলের পথ অবলম্বন করতাম।(সুরা ফুরকান ২৭)

সৎসঙ্গে স্বর্গেবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ৷ অনেক অসৎ মানুষ সৎ মানুষের সংস্পর্শে সৎ হয়ে গড়ে উঠে৷ আবার অনেক সৎ মানুষ অসৎ বন্ধুর সাহচর্যে অসৎ হয়ে যায়৷ তাই বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের ভেবে-চিন্তে বন্ধুত্ব করা উচিত৷ যার সাথে বন্ধুত্ব করলে নিজের ঈমান-আমলের ক্ষতি হবে তার সাথে কখনো বন্ধুত্ব করা যাবে না৷ তা না হলে কিয়ামতের দিন এরূপ বন্ধুত্ব করার জন্য আফসোস করে বলতে হবে, "হায় আমার দূর্ভাগ্য! আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। (সুরা ফুরকান ২৮)

ধনসম্পদ ও ক্ষমতার মোহে পড়ে অনেকে নেক আমলের ব্যাপারে অবহেলা করে এবং নির্দ্বিধায় বিভিন্ন পাপকাজে লিপ্ত হয়৷ কিয়ামতের দিন যখন তাদের আমলনামা বাম হাতে দেয়া হবে তখন তাদের ধন সম্পদ ও ক্ষমতা কোন কাজে আসবে না৷ তখন শুধু আফসোস করা ছাড়া কিছুই করার থাকবে না৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন, যার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবেঃ হায়! আমায় যদি আমার আমল নামা না দেয়া হতো।

আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব! হায়, আমার মৃত্যুই যদি শেষ হত। আমার ধন-সম্পদ আমার কোন উপকারে আসল না। আমার ক্ষমতাও বরবাদ হয়ে গেল।ফেরেশতাদেরকে বলা হবে ধর একে গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও, অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। অতঃপর তাকে শৃঙ্খলিত কর সত্তর গজ দীর্ঘ এক শিকলে। (সুরা হাক্কাহ ২৬-৩২)

কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা প্রাণীদেরও বিচার করবেন৷ দুনিয়াতে কোন শক্তিশালী পশু দুর্বল পশুর উপর অন্যায়ভাবে আঘাত করলে তার প্রতিশোধ গ্রহণের ব্যবস্থা করবেন৷ এরূপ বিচার শেষে সকল প্রাণী আল্লাহর হুকুমে মাটির সাথে মিশে যাবে৷ তা দেখে কাফিরগণ অনুরূপ মাটির সাথে মিশে যাওয়ার আকাঙ্খা প্রকাশ করবে৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন, কাফের বলবে হায়, আফসোস-আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম।"(সুরা নাবাঃ ৪৹)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, সেদিন কামনা করবে সে সমস্ত লোক, যারা কুফুরী করেছিল এবং রাসুলের নাফরমানী করেছিল, যেন যমীনের সাথে মিশে যায়। আল্লাহর নিকট তারা কোন বিষয় গোপন করতে পারবে না।(সুরা নিসা ৪২)

আমাদের অনেকেই নেক আমলের মুল্য বুঝি না৷ তাই নেক আমলের প্রতি তেমন কোন আগ্রহবোধ করি না৷ পরকালে যখন নেক আমলের মুল্য বুঝে আসবে দুনিয়াতে নেক আমলের ব্যাপারে যারা অবহেলা করেছে তারা আফসোস করতে থাকবে৷ আল্লাহ তায়ালা তাদের ব্যাপারে বলেন,"সে বলবেঃ হায়, এ জীবনের জন্যে আমি যদি কিছু (নেক আমল) করতাম! (সুরা ফাজরঃ ২৪)

যারা এ দুনিয়াতে আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করে না তারা যখন জাহান্নামের কঠিন শাস্তি ভোগ করবে তখন তাদের আফসোসের শেষ থাকবে না৷ আল্লাহ বলেন,"যেদিন জাহান্নামের অাগুনে তাদের মুখমন্ডল ওলট পালট করা হবে; সেদিন তারা বলবে, হায়। আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম ও রসূলের আনুগত্য করতাম। (সুরা আল-আহযাব ৩৬)

আল্লাহর জিকির থেকে যারা গাফেল হয় তাদের সামনে শয়তান পাপকাজকে অত্যন্ত আকর্ষণীয়রূপে তুলে ধরে৷ ফলে শয়তানের ধোকায় পড়ে তারা বিভিন্ন পাপে লিপ্ত হয়৷ কিয়ামতের দিন তাদেরকে এজন্য আফসোস করতে হবে৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমুখ হয়, আমি তার জন্যে এক শয়তান নিয়োজিত করে দেই, অতঃপর সে-ই হয় তার সঙ্গী। শয়তানরাই মানুষকে সৎপথে বাধা দান করে, আর মানুষ মনে করে যে, তারা সৎপথে রয়েছে।

অবশেষে যখন সে আমার কাছে আসবে, তখন সে শয়তানকে বলবে, হায়, আমার ও তোমার মধ্যে যদি পূর্ব-পশ্চিমের দূরত্ব থাকত। কত নিকৃষ্ট সঙ্গী সে। (সুরা জুখরুফ ৩৬-৩৮)

দান সাদকার ক্ষেত্রে অনেক মানুষ খুব কার্পণ্য করে৷ যারা আল্লাহর রাস্তায় দান সাদকা করতে কার্পণ্য করে তারা মৃত্যুর পর এর অপরিসীম ফযীলত দেখে পুনরায় এ দুনিয়ায় ফিরে এসে দান সাদকা করার আকাঙ্খা প্রকাশ করবে৷ কিন্তু তাদের সে আশা পুরণ হবে না৷ আল্লাহ তায়ালা এ ব্যাপারে বলেন, আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর।

অন্যথায় সে বলবে হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সাদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম। প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন। (সুরা মুনাফিকুন ১৹-১১)

শেষ বিচারের দিন নিজের কৃত পাপকর্মের জন্য শয়তানকে ভর্ৎসনা করে কোন লাভ হবে না৷ বরং শয়তানই পাপীদের ভর্ৎসনা করবে৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন,যখন সব কাজের ফায়সলা হয়ে যাবে, তখন শয়তান বলবেঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে সত্য ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং আমি তোমাদের সাথে ওয়াদা করেছি, অতঃপর তা ভঙ্গ করেছি।

তোমাদের উপর তো আমার কোন ক্ষমতা ছিল না, কিন্তু এতটুকু যে, আমি তোমাদেরকে ডেকেছি, অতঃপর তোমরা আমার কথা মেনে নিয়েছ। অতএব তোমরা আমাকে ভৎর্সনা করো না এবং নিজেদেরকেই ভৎর্সনা কর। আমি তোমাদের উদ্ধারে সাহায্যকারী নই। এবং তোমরাও আমার উদ্ধারে সাহায্যকারী নও। ইতোপূর্বে তোমরা আমাকে যে আল্লাহর শরীক করেছিলে, আমি তা অস্বীকার করি। নিশ্চয় যারা জালেম তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।(সুরা ইবরাহীম ২২)

বাপ দাদার অনুসরণ করে, নেতার আনুগত্য করে কিংবা অন্য কারো অনুসরণ করে যারা আল্লাহর নাফরমানী করে তাদেরকে এজন্য অনুশোচনা করতে হবে৷ আল্লাহ তায়ালা এ সম্পর্কে বলেন,"তারা বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের কথা মেনেছিলাম, অতঃপর তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল।হে আমাদের পালনকর্তা! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদেরকে মহা অভিসম্পাত করুন।(সুরা আহযাবঃ ৬৭-৬৮)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, অনুসৃতরা যখন অনুসরণকারীদের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়ে যাবে এবং যখন আযাব প্রত্যক্ষ করবে আর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে তাদের পারস্পরিক সমস্ত সম্পর্ক। অনুসারীরা বলবে, কতইনা ভাল হত, যদি আমাদিগকে পৃথিবীতে ফিরে যাবার সুযোগ দেয়া হত। তাহলে আমরাও তাদের প্রতি তেমনি অসন্তুষ্ট হয়ে যেতাম, যেমন তারা অসন্তুষ্ট হয়েছে আমাদের প্রতি। এভাবেই আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে দেখাবেন তাদের কৃতকর্ম তাদেরকে অনুতপ্ত করার জন্যে। অথচ, তারা কখনো আগুন থেকে বের হতে পারবে না।"(সুরা বাকারাঃ ১৬৬-১৬৭)

কাফিরগণ দুনিয়াতে ইসলাম গ্রহণ না করার জন্য কিয়ামতের দিন অত্যন্ত আক্ষেপ ও অনুশোচনা করবে৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন,"কোন এক সময় কাফেররা আকাঙ্ক্ষা করবে যে, কতই না ভালো হত হত, যদি তারা মুসলমান হত। (সুরা হিজর ২)

বন্ধু-বান্ধব, স্ত্রী-সন্তান ও আত্মীয় স্বজনের মায়ায় পড়ে যারা অন্যায় করে কিয়ামতের দিন আল্লাহর আজাব থেকে কেউই তাদের বাঁচাতে পারবে না৷ আল্লাহর আজাব এত ভয়ঙ্কর হবে যে তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিজের একান্ত প্রিয় সন্তান-সন্তুতি, স্ত্রী-পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং পৃথিবীর সকলকে মুক্তিপণ দিয়ে হলেও আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচতে চাইবে৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন,তারা এই আজাবকে অনেক দুরবর্তী বিষয় বলে মনে করে, আর আমি একে নিকটবর্তী দেখছি। সেদিন আকাশ হবে গলিত তামার মত।

পর্বতসমূহ হবে রঙ্গীন পশমের মত, বন্ধু বন্ধুর খবর নিবে না যদিও একে অপরকে দেখতে পাবে। সেদিন গোনাহগার ব্যক্তি মুক্তিপনস্বরূপ দিতে চাইবে তার সন্তান-সন্ততিকে, তার স্ত্রীকে, তার ভাইকে, তার আত্মীয়-স্বজনকে যারা তাকে আশ্রয় দিত এবং পৃথিবীর সবকিছুকে, অতঃপর নিজেকে রক্ষা করতে চাইবে। কখনই নয়।

নিশ্চয় এটা লেলিহান আগুন। যা চামড়া তুলে দিবে। সে সেই ব্যক্তিকে ডাকবে যে সত্যের প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করেছিল ও বিমুখ হয়েছিল। সম্পদ পুঞ্জীভূত করেছিল, অতঃপর আগলিয়ে রেখেছিল। (সুরা মা'আরিজঃ ৬-১৮)

যারা আল্লাহর হুকুম অমান্য করে হক্কুল্লাহ আদায় না করে অথবা অন্যায়ভাবে মানুষের উপর জুলুম করে হক্কুল ইবাদ নষ্ট করে তারা তাদের জুলুমের জন্য আফসোস করবে৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা বললঃ হায়, দুর্ভোগ আমাদের, আমরা অবশ্যই জালিম ছিলাম।"(সুরা আম্বিয়াঃ ১৪)

অন্য আয়াতে বলেন,আমোঘ প্রতিশ্রুত সময় নিকটবর্তী হলে কাফেরদের চক্ষু উচ্চে স্থির হয়ে যাবে; হায় আমাদের দূর্ভাগ্য, আমরা এ বিষয়ে বেখবর ছিলাম; বরং আমরা জালিম ছিলাম। (সুরা আম্বিয়া-৯৭)

কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার পর থেকেই কাফির বেঈমানগণ তাদের কৃতকর্মের জন্য আক্ষেপ ও অনুতাপ করতে শুরু করবে৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন,"তারা বলবে, হায় আমাদের দুর্ভোগ! কে আমাদেরকে নিদ্রাস্থল থেকে উখিত করল? রহমান আল্লাহ তো এরই ওয়াদা দিয়েছিলেন এবং রসূলগণ সত্য বলেছিলেন।"(সুরা ইয়াসিনঃ ৫২)

অন্য আয়াতে বলেন, তারা বলবে, দুর্ভাগ্য আমাদের! এটাই তো প্রতিফল দিবস।(সুরা সাফ্ফাতঃ ২৹)

আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে পাপকাজের ভয়াবহ পরিণতি জাহান্নামের কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করতে যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসুল প্রেরণ করেছেন৷

আর রাসুলুল্লাহ সা. এর পর নবী রাসুলদের অবর্তমানে নায়েবে নবী হিসেবে দ্বীনদার আলেমদের উপর এ দায়িত্ব অর্পণ করেছেন৷ নবী-রাসুল বা আলেমদের সতর্ক করা সত্ত্বেও যারা পাপ কাজ হতে বিরত হয় না তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম৷ সেখানে তাদের আফসোসের কোন সীমা থাকবে না৷ কিন্তু সে আফসোসে তাদের কোন লাভ হবে না৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন,"যারা তাদের পালনকর্তাকে অস্বীকার করেছে তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। সেটা কতই না নিকৃষ্ট স্থান।

যখন তারা তথায় নিক্ষিপ্ত হবে, তখন তার উৎক্ষিপ্ত গর্জন শুনতে পাবে। ক্রোধে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে। যখনই তাতে কোন সম্প্রদায় নিক্ষিপ্ত হবে তখন তাদেরকে তার সিপাহীরা জিজ্ঞাসা করবে। তোমাদের কাছে কি কোন সতর্ককারী আগমন করেনি? তারা বলবেঃ হ্যাঁ আমাদের কাছে সতর্ককারী আগমন করেছিল, অতঃপর আমরা মিথ্যারোপ করেছিলাম এবং বলেছিলামঃ আল্লাহ তা’আলা কোন কিছু নাজিল করেননি। তোমরা মহাবিভ্রান্তিতে পড়ে রয়েছ।

তারা আরও বলবে যদি আমরা শুনতাম অথবা বুঝতাম, তবে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না। অতঃপর তারা তাদের অপরাধ স্বীকার করবে। জাহান্নামীরা দূর হোক। (সুরা মুলক ৬-১১)

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে জাহান্নামী হয়ে নিজের কৃতকর্মের জন্য আক্ষেপ অনুতাপ করা হতে রক্ষা করুন এবং ঈমানের সাথে নেক আমল করার মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ করার তাওফিক দান করুন৷ আল্লাহম্মা আমীন৷

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ