শরীফ মুহাম্মদ।।
৯৯৯ টাকা
৪৪৯ টাকা
১৯৯ টাকা
১ টাকা ঝুলিয়ে রেখে এভাবে মূল্য নির্ধারণ করতে দেখা যায়। বেশিরভাগ মোবাইল প্যাকেজ এরকমই। এই বাকি থাকা ১ টাকা আর পরিশোধ করা হয় না। পরিশোধ করার ইচ্ছা কিংবা কোনো প্রস্তুতিও থাকে না। পরীক্ষামূলক-ভাবে ওই ১ টাকা চেয়ে দেখা গেছে, বিক্রেতা খুবই মন খারাপ করে। এটা যে শুধু মোবাইল রিচার্জের দোকানে হয় তা না, মাঝারি-বড় ব্যবসার অনেক জায়গাতেও এটা হচ্ছে।
অনেক সময় তো মোবাইল রিচার্জের দোকান থেকে এটাও বলা হয়, প্যাকেজটা এভাবে ১ টাকা ঝুলিয়ে রেখে করা হয়েছে, ওই টাকাটা বিক্রেতার কাছে রেখে আসার জন্যই!
কর্পোরেট বিজনেসের হিসাবে ছোট একক লেনদেনের ১ টাকা আসলে অনেক টাকা। ১ কোটি গ্রাহকের কাছ থেকে এক টাকা করে রেখে দিলে একদিনের মার্জিন আয় ১ কোটি টাকা। একজন ছোট দোকানদার হয়তো এভাবে দিনে ১০০ অথবা ২০০ টাকা 'উপার্জন' করে।
এই ১ টা টাকা আসলে কার? ছোট কিংবা বড় হিসাবে এই যে ১ টাকা আটকে রাখা হচ্ছে এটা কিভাবে পরিশোধ করা হবে? একজন ছোট ব্যবসায়ী যদি বছরে একহাজার জনের কাছে ১ টাকার দেনার দায়ে আবদ্ধ থাকেন, তিনি এটা কিভাবে পরিশোধ করবেন? সবার কাছে কি দায়মুক্তি চাইতে পারবেন কিংবা টাকা পৌছাতে পারবেন? এর চেয়ে তো একজনের কাছে ১০০০ টাকার দেনা থাকার ঝুঁকি কম।
নাকি এই ১ টাকা পরিশোধ করার দরকার নেই? কাস্টমার দ্বিধায়-লজ্জায় টাকাটা চাইবে না আর আমারও দিতে হবে না, ব্যাপারটা এরকম কি? ব্যবসার মধ্য দিয়ে অ-প্রয়োজনীয়ভাবে 'শখের' ঋণের নিচে পড়ে যাচ্ছে মানুষ! এ কি আধুনিক ব্যবসা-চিন্তার এক 'সৃজনশীল' দায়? পরিশোধের চিন্তাশূন্য এক অভিনব ঋণের ফাঁদ? ঋণের পাহাড়?
আল্লাহ তাআলা আমাদের ক্ষমা করুন, আমরা ছোট ছোট অংকের বড় বড় পাহাড়গুলোর দিকে যেন চোখ রাখি। আখের, আমাদের বাঁচতে তো হবে!
এমন ১ টাকা/ ৫ টাকা/ ১০ টাকা ঝুলিয়ে রেখে মূল্য নির্ধারণ করা বন্ধ করুন। অথবা বেচাকেনার সময় ওই ভাংতি টাকা দেওয়ার জন্য পূর্ণ প্রস্তুত থাকুন এবং পরিষ্কারভাবে ক্রেতার দিকে টাকাটা এগিয়ে দিন। অথবা বিষয়টা খুলে বলে শুরুতেই সাফ করে নিন, মাফ চেয়ে নিন। (শেষ সুরতটা সৌজন্যপরিপন্থী, কিন্তু লেনদেনের দায় থেকে বাঁচার জন্য নিরাপদ।)
এএ/এনটি