শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আ.লীগ নেতাকর্মীর প্রভাবে নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সংবর্ধনা বাতিল আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা ইসলামি লেখক ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত, আসছে নতুন কর্মসূচি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে উত্তপ্ত খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার

মাওলানা ইসহাক ওবায়দী: আমার সাহিত্য ও লেখালেখির মহান দিকপাল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মিযানুর রহমান জামীল।।

জীবন টিকিয়ে রাখতে উষ্ণ মধুর প্রয়োজনীয়তা কেবল মৌমাছিই উপলব্ধি করতে জানে। পাহাড়ের পেটে আগুনের তাপ বুঝতে পারে কেবল বিজ্ঞানীরা। সাগরের বুকে ঘূর্ণির শক্তি নাবিকরাই বলতে পারে। বলছি— মাওলানা ইসহাক ওবায়দীর কথা। জানাযার পূর্বে হযরতকে নিয়ে আলোচনার সুযোগ হয়। সমাজে তাঁর মত ইসহাক ওবায়দীদের কত বেশি প্রয়োজন তা কেবল তার সংশ্রবধন্য আলেম ওলামা, পীর-মাশায়েখ এবং লেখক-সাংবাদিকরাই বেশি উপলব্ধি করতে পারেন ! তিনি এখন রহমাতুল্লাহি আলাইহি।

ছিলেন হাফেজ্জী হুজুর রহ— এর প্রেস সচিব, অসংখ্য আন্দোলন সংগ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী ও সহযোগী। তিনি আমার সাহিত্য ও লেখালেখির মহান দিকপাল। সেনবাগ বশীরিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার মুহতামিম। গতকাল আমাদের এতীম করে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করে জান্নাতুল ফেরদৌসের মেহমান হিসেবে কবুল করুন।

২০১৭ সালে চাটখিল দারুস সালামে কলমসৈনিকের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে তাঁকে প্রধান অতিথি করে বর্ণাঢ্য সাহিত্য আসরের আয়োজন করা হয়। সেদিনের আলোচনা, মতবিনিময়, আত্মজীবনীর উপর বিশেষ আলোকপাত, সব স্মৃতির খামে আবদ্ধ হয়ে গেলো আজ। তিনি বলতেন— যে কোনো কাজ একজন মুরুব্বির অধীনে করা চাই। দারুর রাশাদের মুহতামিম সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভীর খলীফা মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান দা. বা.— এর সংশ্রব থেকে যেন সরে না যাই।

মাওলানা ইসহাক ওবায়দীর ব্যক্তিত্বের উজ্জ্বলতা যে কাউকে আভিভূত করত৷ তার হৃদয়ে জ্বলন যে কাউকে ভাবিয়ে তুলত। কেবল দেশ নয়, তাঁর মন-মননে সারা দুনিয়ার উম্মতের ফিকির ছিল। তাঁর সাথে আমার কেবল মৌখিক নয়; হৃদয় ও আত্মার বন্ধন ছিল। কাছে আসার এবং কাছে থাকার ইতিহাস ছিল। জীবন গড়ার তাকিদে আমার প্রতি মধুর ধমক ছিল, স্নিগ্ধ শাসন ছিল৷ ছিল উৎসাহ উদ্দীপনার নিদারুণ সবক। আগামীকে সাজানোর বার্তা দিয়ে তিনি গত হয়ে গেলেন— ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিঊন!

২০০৭ সালে মাসিক আল কাউসারে (সম্ভবত সেপ্টেম্বর সংখ্যায়) " বাংলা সাহিত্যে ওলামায়ে কেরাম" বিষয়ে আমার একটি লেখা ছাপা হয়। পরের সংখ্যায় ঐ লেখার উপর তিনি উৎসাহমূলক প্রশংসা-বাণী লিখেন। সেই লেখালেখির জের ধরেই মাওলানা ইসহাক ওবায়দী রহ.— এর সঙ্গে আমার দীর্ঘ পরিচয়। একদিন তো হঠাৎ তিনি হাজির হলেন নোয়াখালীর জামিয়া ইসলামিয়া মাইজদীতে। জামিয়ার বর্তমান উস্তাদ মুফতী নিজামুল হাদী সাহেবসহ অনেকেই তখন ঢাকার বিভিন্ন মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষার্থী। তারপর তিনি আমাকে দফতরে তলব করেন। তখনই আমি তাঁর আলো ঝলমল সোহবতের সন্ধান পাই।

পরিবারের সদস্যের মত আমাদের অনেক ঘরোয়া বিষয় সমাধান দেয়ার চেষ্টা করতেন। কারণ তিনি আমাদের অঙ্গনের অনেক বিষয়ের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন। কোনো লৌকিকতা পছন্দ করতেন না। সাফ কথা পছন্দ করতেন। হকের পক্ষে তাঁর অম্লান অবদান চিরদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তাঁর কালোত্তীর্ণ বই, মানোত্তীর্ণ লেখালেখি, প্রাণোচ্ছল দাওয়াত ও আত্মশুদ্ধির জীবন্ত সাক্ষী আমি। তার সঙ্গে আমার জীবনধ্যায় বেশি লম্বা না হলেও তেমন ছোটও না। সেই অছোট জীবন নিয়ে কলম হাতে আবারও ফিরবো ইনশাআল্লাহ।

লেখক: সাহিত্য ও সাংবাদিকতা বিভাগ মাদরাসা দারুর রাশাদ।

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ