শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে আলেম অন্তর্ভুক্তির দাবি হেফাজতে ইসলামের সিংগাইরে হেফাজতে ইসলামের গণসমাবেশ ২৯ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা হলে ‘হাত ভেঙে’ দেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘জুলাই বিপ্লবে আলেম-শিক্ষার্থীদের অবদান ও প্রত্যাশা’ নিয়ে আলোচনা সভা সোমবার সিলেটে অনুষ্ঠিত বিহানের ‘লেখালেখি ও এডিটিং কর্মশালা’ দেশে ফিরে কর্মফল ভোগ করুন, শেখ হাসিনাকে জামায়াতের আমির রাষ্ট্র সংস্কারে ইসলামবিরোধী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না: জাতীয় পরামর্শ সভা যাত্রাবাড়ীতে জাতীয় পরামর্শ সভায় গৃহীত হলো ৭ প্রস্তাব বারিধারায় হেফাজতে ইসলামের পরামর্শ সভা শুরু ফ্যাসিবাদী সরকারের মূল দায়িত্বের কর্মকর্তারা এখনও অটল রয়ে গেছে

ইসলামের দৃষ্টিতে নাসির-তামিমার বিয়ে যে কারণে অবৈধ!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি নূর মুহাম্মদ রাহমানী।।

জাতীয় দলের আলোচিত ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও এয়ারলাইন্স কোম্পানি সৌদিয়ার কেবিন ক্রু তামিমা সুলতানা তাম্মির বিয়ে হয়েছে গত রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি)। ঢাকার উত্তরার একটি বিলাসবহুল রেস্টুরেন্টে এ বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

কিন্তু সামাজিক কিছু যোগাযোগ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে যে, তামিমার ১১ বছর আগেও একবার বিয়ে হয়েছিল। আগের স্বামীর নাম রাকিব। রাকিব-তামিমার ঘরে ৮ বছরের একটি কন্যাও আছে।

কিন্তু স্বামীকে তালাক না দিয়ে কিংবা শরিয়তসম্মত উপায়ে ডিভোর্স না দিয়ে বিয়ে করেছে ক্রিকেটার নাসিরকে। এ বিষয়ে আগের স্বামী রাকিব আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলেও জানা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে আমরা ইসলামের দৃষ্টিতে দেখব যে, নাসির-তামিমার বিয়ে বৈধ কিনা? অবৈধ হলে কেন অবৈধ?

ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনোভাবেই বনিবনা না হলে স্বামীর জন্য স্ত্রীকে তিন তালাক প্রদানের অধিকার রয়েছে। কিন্তু স্বামীর জন্য উচিত সব অধিকার প্রয়োগ না করা।

এক অথবা দুই তালাকের ওপর যথেষ্ট করা উচিত। কারণ, এক তালাক কিংবা দুই তালাক দিলে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনা যায়। কিন্তু তিন তালাক দিলে ওই স্ত্রী তার জন্য সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যায় এবং ওই স্ত্রীর সঙ্গে তার বিয়ে সহিহ হয় না।

কিন্তু যদি নারীর অন্যত্র বিয়ে হয় এবং দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে তার সহবাসও হয় এরপর ওই দ্বিতীয় স্বামীর মৃত্যু ঘটে কিংবা দ্বিতীয় স্বামী তাকে তালাক দেয় তাহলে ইদ্দত শেষে সে ইচ্ছা করলে প্রথম তালাকদাতা স্বামীর সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেন। বিষয়টি পবিত্র কোরআনেও স্পষ্টভাবে উল্লেখ হয়েছে।

মহান আল্লাহ বলেন, তারপর যদি স্বামী তাকে (তৃতীয়) তালাক প্রদান করে, তবে সে স্ত্রী তার জন্য তৃতীয় তালাকের পর হালাল নয়, যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোনো স্বামীর সঙ্গে বিয়ে করে না নেবে! অতঃপর যদি সে (দ্বিতীয় স্বামী) তাকে তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের (প্রথম স্বামী এবং তার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী) ওপর কোনো পাপ নেই যে, উভয়জন (বিয়ে করে) পরষ্পর মিলে যাবে। যদি উভয়ের খেয়াল হয় যে, তারা আল্লাহর হুকুমের পাবন্দি করবেন। আর এটা আল্লাহর বিধান। আল্লাহ তায়ালা একে সে সব লোকদের জন্য সুস্পষ্ট করেন, যারা উপলব্ধি করে! (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৩০)।

অতএব আলোচ্য বিষয়টিতে তামিমার আগের স্বামীর অভিযোগ সত্য হলে এবং শরিয়ত মোতাবেক কিংবা বাংলাদেশে প্রচলিত মুসলিম পারিবারিক আইন মোতাবেক ডিভোর্স না হওয়ার কথা সঠিক হয়ে থাকলে তামিমার জন্য নাসিরকে বিয়ে করা কোনোভাবেই সঠিক হবে না। ইসলামের দৃষ্টিতে কাজটি হারাম ও অনৈতিক কাজ বলে পরিগণিত হবে।

আর নাসিরের বউ তামিমার আগের স্বামী থেকে শরিয়তসম্মতভাবে ছাড়াছাড়ি বা বিচ্ছেদ হয়ে থাকলে, তবুও তাকে তিনটি ঋতুস্রাব পার করা পর্যন্ত ইদ্দত পালন করতে হবে।

তাই বর্তমানে তাদের পরষ্পর দেখা-সাক্ষাৎ এবং একসঙ্গে থাকা হারাম। শরিয়তে যার কোনো সুযোগ নেই। এখন তারা একান্ত সংসার করতে চাইলে আগের স্বামী থেকে শরিয়তসম্মত উপায়ে তালাক নিয়ে কিংবা শরিয়তসম্মতভাবে ডিভোর্স দেওয়ার মাধ্যমে ইদ্দত পালন করার পর বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। অন্যথায় এটি বিয়ে বলে গণ্য হবে না; বরং যেনা-ব্যভিচার বলে সাব্যস্ত হবে।

সূত্র: সুনানে দারাকুতনী : ৪/৩১; ফাতহুল কাদীর : ৪/৩১, আল বাহরুর রায়েক : ৩/২৪৩।

লেখক: মুহাদ্দিস, জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম বাগে জান্নাত, চাষাঢ়া, নারায়ণগঞ্জ

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ