শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

বিজ্ঞান ভিত্তিক, কর্মমূখী ও সার্বজনীন ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব ইশার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক:  জাতীয় শিক্ষা দিবস উপলক্ষ্যে “বিদ্যমান শিক্ষা কাঠামো সংস্কার ও চলমান সংকট নিরসনের দাবিতে শিক্ষা সমাবেশে”র আয়োজন করে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন।

গতকাল শুক্রবার ( ১৭ সেপ্টেম্বর)  শাহবাগ জাতীয় যাদুঘর চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত হয় এই শিক্ষা সমাবেশ।

সেখানে বিদ্যমান শিক্ষা কাঠামো সংস্কারে  প্রস্তাব পেশ করা হয়। প্রস্তাবপত্রে বলা হয়েছে, ‘আমাদের স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সুবর্ণজয়ন্তী পার করছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমরা একটি সর্বজনবিদিত ও জনআকাক্ষিত শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে পারিনি।

আরো বলা হয়েছে, বারবার শিক্ষাআইন, শিক্ষানীতি ও শিক্ষাকারিকুলাম পরিবর্তন করা হলেও জাতীয় চরিত্র বিবেচনায় স্বতন্ত্র কোন শিক্ষাকাঠমো গড়ে ওঠেনি। যার মাঝে দেশের অধিকাংশ জনগোষ্ঠির চিন্তা ও আদর্শের
প্রতিফলন ঘটবে। আমরা এখনো বিতাড়িত ব্রিটিশ প্রদত্ত দর্শন ও থিওরি অনুযায়ী আমাদের দেশের শিক্ষক্রম পরিচালনা করছি। অধিকাংশ জনগোষ্ঠী মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও ড. কুদরতে খুদা প্রণিত ধর্মহীন শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে অন্যায্য ও অনৈতিক চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা সিলেবাসে পাঠদান করছি। অপরদিকে ত্রিমুখী শিক্ষাধারার চলমান ব্যবস্থাপনার ফলে জাতীয় জীবনে চিন্তার ভিন্নতা ও দূরত্ব দিনদিন বর্ধ্বমান। ধর্মহীন কর্মশিক্ষা ও কর্মহীন ধর্মশিক্ষা আমাদের মাঝে তীব্র সঙ্কট সৃষ্টি করে চলেছে। সব মিলিয়ে দেশের সামগ্রিক শিক্ষাকাঠামো আমাদেরকে চরম
বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

আরো বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ে জ্ঞান উৎপাদন ও বিতরণের কথা থাকলেও রেঙ্কিংয়ে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠাই করে উঠতে পারছেনা। কোন কোন বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জ্ঞান শিক্ষা দিলেও তাদের চরিত্র গঠন, দক্ষতার উন্নয়ন ও সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে পারছেনা।

শিক্ষার সকল উপাদান যেমন বিদ্যালয়, শিক্ষাক্রম, পাঠ্যপুস্তক এবং আধুনিক উপাদান গাইড
বই, কোচিং সেন্টার, হাউজ টিউটর, সাজেশন্স ইত্যাদি সবকিছু থাকার পরও প্রাতিষ্ঠানিক
শিক্ষাব্যবস্থা থেকে উত্তীর্ণ অনেক শিক্ষার্থীকে সমাজ তার প্রয়োজনের তুলনায় অনুপযোগী
বিবেচনা করছে। বেকার সমস্যা যেন জ্যামিতিক হারেই বাড়ছে। চাকরির বাজারে সীমাহীন
প্রতিযোগিতা থাকলেও উদ্যোক্তার বাজারে যেন ক্ষরা চলছে। স্পষ্টতই, সমাজের চাহিদা দ্রুত
বদলে যাচ্ছে এবং শিক্ষাব্যবস্থা তার সাথে তাল রেখে চলতে পারছে না। তাহলে বিদ্যমান
সমস্যা কোথায়?

বিদ্যমান শিক্ষা কাঠামো সংস্কারে আমাদের নীতিগত প্রস্তাব:

১. বিদ্যমান শিক্ষা কাঠামো সংস্কার করে একমূখী অন্তর্ভূক্তিমূলক টেকশই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু
করতে হবে।

২. বিজ্ঞান ভিত্তিক, কর্মমূখী ও সার্বজনীন ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে হবে।

৩. ঔপনিবেশিক শিক্ষা কাঠামোর পরিবর্তে নিজস্ব বোধ-বিশ্বাসের আলোকে স্বকীয় জাতীয়
শিক্ষাক্রম চালু করতে হবে।

৪. শিক্ষার সকল স্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

৫. জাতীয় শিক্ষা কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে বরেণ্য শিক্ষাবিদ, অভিভাবক প্রতিনিধিদের সাথে
বিজ্ঞ ওলামায়ে কেরামদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

বিদ্যমান শিক্ষা কাঠামো সংস্কারে আমাদের প্রস্তাবনা:

১. বাংলাদেশী অভিবাসীরা যে শ্রম দেয় তার তুলনায় অনেক কম রেমিট্যান্স পাঠাতে পারে।
তার কারণ কারিগরি জ্ঞানের অভাব। তাই বাংলাদেশকে কাঙ্খিত উন্নয়নের স্তরে
পৌঁছাতে অষ্টম ও দশম শ্রেণির পর বর্তমান শিক্ষা পদ্ধতির পাশাপাশি প্রতিটি উপজেলায়
২-৪ বছরের কারিগরি ডিপ্লোমা কোর্স শুরু করা হোক।

২. দ্বাদশ শ্রেণি বা সমমান পাশের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে সকল নাগরিক
বাধ্যতামূলক ছয়মাসের ট্রেনিং নেওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া হোক। এই
ট্রেনিংয়ে প্রতিটি নাগরিককে দেশপ্রেম, দেশের সংবিধান ও দেশের প্রতি দায়িত্ব ও
কর্তব্য, ট্রাফিক আইন, মানবিকতা, সমাজকর্ম ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান দেওয়া হোক।

৩. বর্তমানে শিক্ষার্থীদের পাবলিক পরীক্ষায় যেভাবে সরকারী সার্টিফিকেট দেয়া হয়,
সেভাবে সেচ্ছাসেবী কাজকে মূল্যায়ন করে সার্টিফিকেট প্রদান করা হোক।

৪. বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে দরিদ্র ও মেধাবি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ চালু করা হোক।
অন্তত ৫০% শিক্ষার্থীকে মেধা ও আর্থিক সক্ষমতার উপর ভিত্তি করে দেওয়া হোক বৃত্তি।
পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের জন্য সরকার এত টাকা খরচ করছে, কিন্তু পকেটমানি জোগাতে
আমাদের শিক্ষার্থীদের টিউশনি আর জ্যামের রাস্তায় পার করতে হয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ
সময়। যদি মাসে পাঁচ হাজার টাকা স্কলারশিপ দেয়া হয়, তাহলে শিক্ষার্থীদের চার-পাঁচ
ঘন্টা সময় সাশ্রয় হবে। যে সময়টাতে তারা গবেষণায় মনোনিবেশ করতে পারবে। আশা
করি বৈশ্বিক পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে বাংলাদেশ ইতিবাচক পরিবর্তনের পথেই
হাঁটবে।

৫. সময়ের বিবেচনায় এবং সমাজের চাহিদা মাথায় রেখে আমাদের শিক্ষাক্রমকে ঢেলে
সাজাতে হবে। এক্ষেত্রে দূরদর্শী চিন্তাভাবনা করতে হবে। আগামী দশ বছরে সমাজে কী
ধরনের দক্ষতা, যোগ্যতার প্রয়োজন হবে সে অনুযায়ী শিক্ষাক্রম সাজাতে হবে। খেয়াল
রাখতে হবে যেন দশ বছরে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি পর্বেই পাঁচ-সাত বছর কেটে না যায়।
সাথেসাথে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদা বিবেচনায় রাখতে হবে
অপ্রয়োজনীয় বিষয় বাদ দিয়ে প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তবে লক্ষ্য
রাখতে হবে যেন কোনোভাবেই বিষয়বস্তুর ভার শিক্ষার্থীর জন্য অসহনীয় না হয়।
প্রত্যেক শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক প্রণেতাকে মাথায় রাখতে হবে যে, শিক্ষার্থী শুধু একটি
বিষয় পড়ে না, তাকে অন্যান্য বিষয়ও পড়তে হয়।

৬. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের ক্ষেত্রে ক্যাচমেন্ট এরিয়ার পাশাপাশি জনসংখ্যার ঘনত্বের
বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। তা না হলে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থী অনুপাত ঠিক
থাকবে না। এক্ষেত্রে জনবহুল এলাকার স্কুলগুলোতে এই অনুপাত ঠিক রাখতে শিফট
অনুযায়ী বিদ্যালয় পরিচালিত হতে পারে।

৭. মূল্যায়ন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। আধুনিক মূল্যায়ন পদ্ধতিসমূহ ব্যবহার করতে
হবে। পাঠ্যবইয়ের সাথে মিল রেখে অভীক্ষা তৈরি করতে হবে। তা হয় না বলেই
শিক্ষার্থীরা অভীক্ষার প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আশায় গাইড বইয়ের শরণাপন্ন হয়। খুঁজে
ফেরে সাজেশন্স। আর বিদ্যমান মূল্যায়ন পদ্ধতিতে যারা মেধাবী হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে
তারা অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় তাদের সাফল্য ধরে রাখতে পারছে না

৮. আধুনিক শিখন-শেখানো পদ্ধতির প্রয়োগ, বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানের গভীরতা, শিক্ষার্থীর
শিখনে সাহায্য করা, উপযুক্ত মূল্যায়ন কৌশলের প্রয়োগ সবকিছুর জন্য প্রয়োজন দক্ষ ও
যোগ্য শিক্ষক। তার জন্য শিক্ষকতাকে আকর্ষণীয় পেশা হিসেবে উপস্থাপন করতে হলে
এ পেশায় সম্মান ও সম্মানী দুটোই বাড়াতে হবে। শিক্ষককে দক্ষ করে তুলতে শিক্ষক
শিক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। পাশাপাশি প্রচলিত শিক্ষক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা থেকে
বেরিয়ে এসে তাত্ত্বিক জ্ঞানমূখী বাস্তব দক্ষতা ও তার প্রয়োগমুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা
করতে হবে।

৯. সবশেষে বলতে চাই- আদর্শ শ্রেণিকক্ষে দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক যদি সময়ের চাহিদা পূরণে
সক্ষম এমন বিষয়বস্তু সম্বলিত পাঠ্যপুস্তক অনুসরণ করে আধুনিক শিখন-শেখানো
পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীকে শিক্ষালাভে সহায়তা করেন এবং যথাযথভাবে মূল্যায়ন করেন
তবেই সম্ভব হবে আকাক্সিক্ষত মাত্রায় শিখনফল অর্জন। সার্থক হবে শিক্ষাব্যবস্থা, অর্জন
করা সম্ভব হবে শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্য। শিক্ষার্থীর জীবনের প্রথম পাবলিক পরীক্ষার
সার্টিফিকেট অটো পাসের মাধ্যমে আসা কিছুতেই কাম্য নয়। এসএসসিতে অটো পাস
হলে পড়াশোনায় শিক্ষার্থীদের যে দুর্বলতা থেকে যাবে তার প্রভাব ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবনেও
পড়বে।

কোভিড-১৯ পরবর্তী শিক্ষা সংকট নিরসনে আমাদের প্রস্তাবনা:

১. সেশনজট কমিয়ে নিয়ে আসতে আমাদের প্রস্তাবনা
যেখানে সাত কলেজের সামান্য সেশনজট সমস্যা সমাধান করতে হিমশিম খেতে হয় সেখানে
দীর্ঘ ১৮ মাস প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার প্রভাব কি হতে পারে এটি চিন্তার বিষয়। তাই শিক্ষাবর্ষের
মেয়াদ কমিয়ে আনা ও শিক্ষার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। প্রতি
শিক্ষাবর্ষ থেকে অনধিক তিন মাস করে কমিয়ে দিলে তিন-চার বছর পরে শিক্ষার এ ক্ষতি
পুষিয়ে যাবে। অনুরূপভাবে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি চার মাসের সেমিস্টার থেকে এক মাস
করে মাইনাস করলে এক বছরেই আরেকটি সেমিস্টার সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। এটি
তুলনামূলকভাবে একটি যুক্তিসংগত ও কার্যকর বিকল্প হবে। ইথিওপিয়ার মত দেশে যদি
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের প্রথম তিন বছর ৯ থেকে ১০ মাসে নিয়ে এসে তাদের পাঠদান
চালাতে পারে আমাদের তো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

২. অংশগ্রহণমূলক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ
দৈনিক প্রথম আলোর এক রিপোর্টে দেখা যায় শিক্ষা নিয়ে কাজ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা
মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ড ও এনসিটিবি। তাদের
চিন্তা শুধু স্কুল খোলা ও পরীক্ষা নেওয়া। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তাদের কোন চিন্তা নেই।
তাই সংকট চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সরকারি-বেসরকারি,
ব্যক্তিগত সংস্থা এবং সুশীলসমাজ ও বিজ্ঞ আলেম ওলামাদের সমন্বয় করে অংশগ্রহণমূলক
উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. কারিকুলাম ও পাঠ্যক্রম সংকুচিত করা
দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারনে পূর্ব নির্ধারিত সিলেবাসে পাঠদান করতে হলে দীর্ঘ
সময়ের প্রয়োজন হবে, যা করোনা পরিস্থিতিতে অনেক কষ্টসাধ্য হবে। তাই ক্ষতি পোষাতে
আমাদের প্রস্তাবনা হল। শিক্ষা কারিকুলামসহ পাঠ্যক্রম হ্রাস এবং সংশ্লেষিত করা। এমনটি হলে
শিক্ষার্থীরা গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ে মনোনিবেশ করতে এবং সেগুলো ভালোভাবে শিখতে
সক্ষম হবে। যেমন ভারত এবং কানাডায় এটা চালু করে ভাল ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে।

৪. শিক্ষার্থীদের ড্রপআউট রোধ করতে আমাদের প্রস্তাবনা
সম্প্রতি সেভ দ্যা চিলড্রেনসহ শিশুদের নিয়ে কাজ করা ৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থার এক গবেষণা
রিপোর্টে প্রকাশ যে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪১ ভাগ মেয়ে ও ৩৩ ভাগ ছেলে শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে।
ঝরেপড়া শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে,
নারী, প্রতিবন্ধী, আর্থিকভাবে অসচ্ছল, আদিবাসী ও পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের জন্য
বিশেষ প্রণোদনার মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষাগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

৫. আবাসিক হল খোলা রাখার ওপর আমাদের প্রস্তাবনা
ছাত্রাবাস বা আবাসিক হলগুলোতে যাতে শুধু শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে পরীক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি
মেনে হলে অবস্থান করতে পারে, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এছাড়া
হলগুলোতেও প্রাথমিক চিকিৎসা এবং শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনের সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে
কাজ করে পুরোদমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে
আবাসিক হলের অবস্থা আর আগের মতো থাকতে পারে না। তাই এখনি বাস্তবায়নযোগ্য
পরিকল্পনা করার প্রস্তাব করছি।

৬. বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরপর ক্যাম্পাসগুলোতে অবস্থিত মেডিকেল সেন্টারগুলোর
সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইসোলেশনের ব্যবস্থা, অসুস্থ হলে শিক্ষার্থীদের দেখাশোনার ব্যবস্থা
উন্নত করতে হবে।

পরিশেষে আমরা আশা করছি, সরকার আমাদের প্রস্তাবনাসহ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে একটি
গঠনমূলক শিক্ষাকাঠামো তৈরির মাধমে দেশকে বিদ্যমান শিক্ষাকাঠামো সংস্কার ও চলমান
সংকট নিরসনে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

আরো পড়ুন: স্বাধীনতার ৫০ বছরেও আমরা শিক্ষার সংকট থেকে বের হতে পারিনি: নূরুল করীম আকরাম

আরো পড়ুন: ‘আদর্শিক প্রজন্ম গড়তে শিক্ষার সকল স্তরে কুরআন-নামাজ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে’

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ