শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর কমিটি ঘোষণা উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই: ধর্ম উপদেষ্টা পাঠ্যপুস্তক সংশোধন কমিটিতে আলেম অন্তর্ভুক্তির দাবি হেফাজতে ইসলামের সিংগাইরে হেফাজতে ইসলামের গণসমাবেশ ২৯ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা হলে ‘হাত ভেঙে’ দেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘জুলাই বিপ্লবে আলেম-শিক্ষার্থীদের অবদান ও প্রত্যাশা’ নিয়ে আলোচনা সভা সোমবার সিলেটে অনুষ্ঠিত বিহানের ‘লেখালেখি ও এডিটিং কর্মশালা’ দেশে ফিরে কর্মফল ভোগ করুন, শেখ হাসিনাকে জামায়াতের আমির রাষ্ট্র সংস্কারে ইসলামবিরোধী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না: জাতীয় পরামর্শ সভা যাত্রাবাড়ীতে জাতীয় পরামর্শ সভায় গৃহীত হলো ৭ প্রস্তাব

বৃষ্টির সময় রাসূল সা. যেসব আমল করতেন!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

নাঈম উদ্দীন জামী।।

বৃষ্টি মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে এক নেয়ামত। বৃষ্টির মাধ্যমে মাঠ-ঘাট, তরু-লতা সজীব হয়ে ওঠে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ❝আমি আকাশ থেকে বরকতময় বৃষ্টি বর্ষণ করি❞ (সূরা কাফ, আয়াত : ৯)।

বৃষ্টির সময় রাসূল সা. বেশ কিছু আমল করতেন। প্রতিটি মুমিনের উচিত প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসূল সা. এর অনুসরণ করা। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ❝তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসুলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ❞ (সূরা আহজাব : ২১)।

বৃষ্টির সময় রাসূল সা. যে সকল আমল করতেন, তা হলো-

এক. রহমতের জন্য দোয়া করা: রাসুল সা. বৃষ্টি দেখলেই মহান আল্লাহর দরবারে উপকারী বৃষ্টির জন্য দোয়া করতেন। হযরত আয়েশা রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. বৃষ্টি হতে দেখলে বলতেন, 'আল্লাহুম্মা ছাইয়িবান নাফিয়া'। অর্থাৎ হে আল্লাহ, এমন বৃষ্টি আমাদের ওপর বর্ষণ করুন যাতে ঢল, ধস বা আজাবের মতো কোনো অমঙ্গল নিহিত নেই। (বোখারি : ১০৩২)

দুই. বৃষ্টির পানি স্পর্শ করা: বৃষ্টির আল্লাহর দেয়া রহমত। তাই সুন্নত হলো, বৃষ্টির ছোঁয়া পেতে পরিধেয় মেলে ধরা যাতে বৃষ্টির পানি আপনার শরীর স্পর্শ করে। হাদিস শরীফে এসেছে আনাস রা. বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সা. এর সাথে থাকাকালে একবার বৃষ্টি নামল। রাসুলুল্লাহ সা. তখন তাঁর পরিধেয় প্রসারিত করলেন, যাতে পানি তাকে স্পর্শ করতে পারে। আমরা বললাম, আপনি কেন এমন করলেন? তিনি বললেন, কারণ তা তার রবের কাছ থেকে মাত্রই এসেছে। (মুসলিম : ৮৯৮)

৩.বৃষ্টি চলাকালে দোয়া করা: যে সব সময়ে দোয়া করলে আল্লাহ তায়ালা ফিরিয়ে দেন না সেসব সময়ের মধ্যে বৃষ্টির সময় দোয়া করা অন্যতম। হযরত সাহল বিন সাদ রা. বলেন, দুই সময়ের দোয়া ফেরত দেয়া হয় না - আজানের সময় দোয়া এবং রণাঙ্গণে শত্রুর মুখোমুখি হওয়াকালের দোয়া। অন্য বর্ণনা মতে, বৃষ্টির সময়ের দোয়া। (আবু দাউদ : ২৫৪০)

তাই আমাদের উচিত এ সময়ে বেশি বেশি দোয়া করা।

৪.অতিরিক্ত বৃষ্টি থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করা: অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দোয়া করতে হবে। রাসুল সা. একবার অতিরিক্ত বৃষ্টিতে দোয়া করেছিলেন- ‘আল্লাহুম্মা হাওয়াইলাইনা ওয়া আলাইনা’। অর্থ- হে আল্লাহ! আমাদের এখানে নয়, আশেপাশে বৃষ্টি বর্ষণ করো। (সুনানে নাসায়ি: ১৫২৭)

৫.ঝড়ের সময় দোয়া পড়া: আয়েশা রা. বলেন, ‘যখন আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হতো এবং ঝড়ো বাতাস বইতো; তখন রাসুলুল্লাহ সা. এর চেহারায় পেরেশানির ভাব ফুটে উঠত। এ অবস্থায় এদিক-সেদিক পায়চারী করতে থাকতেন এবং এ দোয়া পড়তে থাকতেন, 'আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাহা ওয়া খাইরা মা-ফিহা ওয়া খাইরা মা-উরসিলাত বিহি, ওয়া আউজু বিকা মিন শার্রিহা-ওয়া শার্রি মা-ফিহা-ওয়া শার্রি মা-উরসিলাত বিহি।'

{অর্থাৎ হে আল্লাহ আমি তোমার কাছে এ ঝড়ের কল্যাণ কামনা করছি। যে কল্যাণ রয়েছে এর মধ্যে এবং যে কল্যাণ পাঠানো হয়েছে এর সঙ্গে। আর তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি এ ঝড়ের অকল্যাণ থেকে। যে অকল্যাণের মধ্যে রয়েছে এবং যে অকল্যাণ দিয়ে একে পাঠানো হয়েছে।} অতঃপর যখন বৃষ্টি হতো, তখন তিনি শান্ত হতেন।'

আয়েশা রা. আরও বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সা. কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি যে, লোকজন মেঘ দেখলে বৃষ্টির আশায় আনন্দিত হয়ে থাকে, আর আপনি এতে পেরেশান হয়ে থাকেন?' রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, 'আমি এ ভেবে শঙ্কিত হই যে, তা আমার উম্মতের ওপর আজাব হিসেবে পতিত হয় কিনা, কেননা পূর্ববর্তী উম্মতদের ওপর এ পদ্ধতিতে আজাব পতিত হয়েছিল।' [মুসলিম : ৮৯৯]

৬. বৃষ্টি শেষে দোয়া করা: বৃষ্টি শেষ হয়ে এলে রাসূল সা. সাহাবায়ে কিরামকে বিশেষ একটি দোয়া পড়ার তাগিদ দিয়েছেন- ‘মুতিরনা বিফাদলিল্লাহি ওয়া রাহমাতিহ’। অর্থ- আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতে আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে। (সহিহ বুখারি, হাদিস : হাদিস : ১০৩৮)

লেখক: শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ