শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আ.লীগ নেতাকর্মীর প্রভাবে নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সংবর্ধনা বাতিল আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা ইসলামি লেখক ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত, আসছে নতুন কর্মসূচি

চার মাসের ব্যবধানে বিদায় নিলেন দেওবন্দের যে চার আলেম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোস্তফা ওয়াদুদ
নিউজরুম এডিটর

আরবি প্রবাদ আছে ‘মাউতুল আলিম মউতুল আলম’-একজন আলেমের মৃত্যু মানে একটি পৃথিবীর মৃত্যু। গত চার মাসের ব্যবধানে আমরা হারিয়েছি বিশ্বখ্যাত চার তারকা আলেমকে। যারা ছিলেন ভারত উপমহাদেশের ইলমী রাহবার। দারুল উলুম দেওবন্দের আদর্শ সিপাহসালার। উম্মাহর দরদী বিশ্বখ্যাত সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের নেতা। যাদের ত্যাগ ও ইলমী খেদমাত বিশ্ববাসী কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে আজীবন।

গত ২০২০ ছিলো আমুল হুজুনের বছর। শোকের বছর। বাংলার শীর্ষ আলেমদের হারানোর বছর। আর ২০২১ শুরু হয়েছে বিশ্ব আলেমদের বিদায় দিয়ে। দেশের জনগণের শোকে কাতরের বছর। এদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ আলেম হারানোর বেদনায় মর্মাহত। কোটি জনতার হৃদয়ের মানুষগুলো বিদায় নিয়েছে এ বছর।

যারা মানুষকে ডাকতো হকের পথে। শোনাতো কুরআনের বাণী। পৌঁছাতো রাসূলের কথা। যাদের হৃদয়গ্রাহী আলোচনা শুনে দীনের পথ লাভ করতো এদেশের কোটি কোটি মানুষ। হেদায়াতের আলোয় আলোকিত হতো মানুষের চিত্ত-মন-হৃদয় ও অন্তর। কিন্তু এখন থেকে তারা আর কোনোদিন মানুষকে নামাজের জন্য ডাকবেন না। শোনাবেন না হেদায়াতের বাণী। তাদের দরদমাখা নসিহত আর আমাদের কর্ণকুহরে বেজে উঠবে না।

এক. বিখ্যাত আদীব মাওলানা নূর আলম খলীল আমিনী রহ. (১৯৫২-২০২১) ইংরেজি

গত ৩ এপ্রিল সোমবার রাত ৩ টা ১৫ মিনিটে তিনি ইন্তেকাল করেন দারুল উলুম দেওবন্দের বিখ্যাত আদীব আল্লামা নূর আলম খলীল আমিনী রহ.। ইন্তোকালের আগে মাওলানা নুর আলম খলিল আমিনী রহ. ১৫ দিন যাবৎ অসুস্থ ছিলেন। অক্সিজেন লাগানো হয়েছিল, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মৃত্যুর দুইদিন আগে কিছুটা সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু পরদিন দুপুর থেকে তার শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হলে মধ্যরাতের দিকে তিনি দেওবন্দে নিজের বিশ্রামাগারে ইন্তেকাল করেন।

তিনি ছিলেন আরবি ম্যাগাজিন ‘আদ-দাঈ’ এর চিফ এডিটর। মাওলানা নূর আলম খলিল আমিনী রহ. দারুল উলুম দেওবন্দে তিন দশক ধরে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের খেদমত আঞ্জাম দিয়ে আসছিলেন। এছাড়াও তিনি হিন্দুস্তান থেকে প্রকাশিত মাসিক আদ দাঈ ম্যাগাজিনের চিফ এডিটর ছিলেন।

তিনি আরবি উর্দূ দুই ভাষাতেই প্রায় ১০টির মত কিতাব লিখেছেন এবং কিতাবগুলোও আহলে ইলমের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয়।

তাঁর তার লিখিত বই ‘فلسطین في انتظار صلاح دين’ (ফিলিস্তিন ফি ইন্তিজারি সালাহিদিন) আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণার অর্ন্তভুক্ত ছিল। এছাড়া তার مفتاح العربية (মিফতাহুল আরব) বইটি বিভিন্ন মাদরাসায় দরসে নিজামির সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত।

তিনি ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপালের বাইরে আরব ও ইউরোপের দেশগুলোতেও বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। তার আরবি কিতাবগুলো আরব দেশের পাঠকরা খুব আগ্রহভরে পড়েন। বিশ্বজুড়ে তার অসংখ্য শাগরিদ রয়েছে।

মাওলানা নূর আলম খলিল আমিনী রহ. বিহারের সীতামরাহী জেলার রায়পুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। ১৯৫২ সালের ১৮ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। তিনি ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট অফ অনার লাভ করেন।

স্ত্রী, তিন ছেলে ও কন্যা সন্তান রেখে ইন্তেকাল করেছেন মাওলানা খলিল আহমদ আমিনী রহ.। তার জানাজা ও দাফন কাফন সম্পন্ন হয়েছিলো দারুল উলুম দেওবন্দেই। তার ইন্তেকালের খবর ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক প্রকাশ করতে দেখা গেছে তার ভক্তকূল ও বিশ্বব্যাপী থাকা তার শাগরেদদের।

দুই. ইবনে হাজার ছানী মাওলানা হাবীবুর রহমান আজমী রহ. (১৯৪৪-২০২১) ইংরেজি

গত ১৪ এপ্রিল (৩০ রমজান) বৃহস্পতিবার ভোর সকালে ৭৭ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন দারুল উলূম দেওবন্দের প্রবীণ উস্তাদ ইবনে হাজার ছানীখ্যাত মাওলানা হাবিবুর রহমান আজমী রহ.। সম্প্রতি তিনি তার নিজ শহর আজমগড়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

দারুল উলূম দেওবন্দ থেকে প্রকাশিত মাসিক পত্রিকা দারুল উলূম দেওবন্দের সম্পাদক ছিলেন মাওলানা হাবিবুর রহমান আজমী রহ। তিনি আসমাউর রিজাল সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ ছিলেন। ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় শিক্ষক ছিলেন তিনি।

মাওলানা হাবিবুর রহমান আজমী রহ ইতিহাসের প্রতি গভীর নজর রেখেছিলেন। ইসলামের ইতিহাস ও অন্যান্য বিষয়ের অনেকগুলো বই রচনা করেন তিনি। জনসাধারণের মধ্যে তার বইগুলো বেশ জনপ্রিয় ছিলো।

তিন. আমীরে হিন্দ মাওলানা কারি উসমান মানসুরপুরী রহ. (১৯৪৫-২০২১) ইংরেজি

দারুল উলুম দেওবন্দের কার্যনির্বাহী মুহতামিম ও জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের (একাংশ) সভাপতি সাইয়েদ মাওলানা কারী উসমান মানসুরপুরী রহ. গত (২১ মে) শুক্রবার জুমার নামাজের পর (দুপুর দেড়টায়) তিনি ইন্তেকাল করেন। এর আগে ৫ মে (বুধবার) তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন।

কারী সাইয়েদ উসমান মানসুরপুরী শাইখুল ইসলাম হজরত মাওলানা সাইয়েদ হুসাইন আহমাদ মাদানী রহ. এর সুযোগ্য জামাতা। দারুল উলুম দেওবন্দের কার্যনির্বাহী মুহতামিম। দেওবন্দের সদরুল মুদাররিসীন আল্লামা সাঈদ আহমদ পালনপুরী রহ. এর ইন্তেকালের পর তিনি বিশ্বখ্যাত বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দের কার্যনির্বাহী মুহতামিম হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হোন।

অল ইন্ডিয়া মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াতের সদর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। ভারতের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সংগঠন জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের (একাংশ) সভাপতিও ছিলেন তিনি।

চার. দেওবন্দের নায়েবে মুহতামিম মাওলানা আব্দুল খালেক সাম্ভলী রহ. (১৯৫০-২০২১) ইংরেজি

চলে যাওয়ার এ মিছিলে যুক্ত হলেন দেওবন্দের নায়েবে মুহতামিম ও মুহাদ্দিস আল্লামা আবদুল খালেক সাম্ভলী রহ.। গত শুক্রবার (৩০ জুলাই) বিকাল ৪টায় ভারতের মুজাফফরনগর এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন তিনি। ইন্নালিল্লাহি ওয়িন্না ইলাইহী রাজিউন।

মরহুমের জানাজার নামাজ ভারতের স্থানীয় সময় রাত ১১ টায় দেওবন্দের মুলসূরীতে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তাকে দেওবন্দের মাকবারায়ে কাসেমীতে দাফন করা হয়। মুত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৫ বছর। তিনি দীর্ঘদিন যাবত ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

তার ইন্তেকালে শোক প্রকাশ করেছেন দেওবন্দের মুহতামিম আল্লামা মুফতি আবুল কাসেম নোমানী, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের (একাংশের) সভাপতি আল্লামা আরশাদ মাদানীসহ ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিখ্যাত আলেমরা।

আল্লামা আব্দুল খালেক সাম্ভলীর রহ. এর আগে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য মিরাঠের স্থানীয় এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। এরপর গত ২১ জুন দিল্লির রাজীব গান্ধি ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। হাসপাতালে ভর্তির দুদিন পর ২৩ জুন সুস্থ হয়ে মাদরাসায় ফিরেছিলেন তিনি। এরপর পুনরায় গত ২৬ জুলাই থেকে অসুস্থতাবোধ করলে মুজাফফর নগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো দেওবন্দের নায়েবে মুহতামিম ও মুহাদ্দিস আল্লামা আব্দুল খালেক সাম্ভলী রহ. কে।

আল্লামা আব্দুল খালেক সাম্ভলী রহ.  ১৯৫০ সালের ৫ জানুয়ারি মুরাদাবাদ জেলার সানভাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। দারুল উলুম দেওবন্দের নায়েবে মুহতামিম আল্লামা আবদুল খালেক সাম্ভলি রহ. ছিলেন একজন মুরব্বি উস্তাদ। দীর্ঘ ৩৯ বছর উস্তাদ হিসেবে ও ১৩ বছর নায়েবে মুহতামিম হিসেবে উম্মুল মাদারিস দেওবন্দে খেদমত করে গেছেন। তাঁর পিতার নাম মাওলানা নাসির আহমেদ। তিনি ছিলেন একজন দয়ালু, নম্র-ভদ্র, সরল মনের অধিকারী ও  প্রতিভাবান ছিলেন।

তার উস্তাদদের মধ্যে হজরত মাওলানা আফতাব আলী, মাওলানা ফরিদ-উদ-দীন, মাওলানা ফখরুদ্দিন মুরাদাবাদী, দেওবন্দের সাবেক মুহতামিম মাওলানা ক্বারী মুহাম্মদ তৈয়ব, মাওলানা মাহমুদ আল হাসান, মাওলানা শরীফ আল হাসান অন্যতম।

আল্লামা আবদুল খালেক সাম্ভলি রহ. এর দরসে অংশ নেয়া এক ছাত্রের স্মৃতিচারণ: হুজুর দেখতে খুব হাল্কা-পাতলা গঢ়নের ছিলেন। চলা-ফেরা ছিল খুব ভাবগাম্ভির্যপূর্ণ। শাহেনশাহী ভঙ্গিতে হাঁটা চলা করতেন। সাধারণত মাথা নিচু করে ও নজর নিচের দিকে দিয়ে হাঁটতেন। সবসময় মাথার উপর আরবদের মত সাদা রঙের রুমাল রাখতেন। এত স্বাভাবিকভাবে চলতেন যে, কেউ চাইলেই দেখা করতে পারতেন। এমনকি রাস্তায় হাঁটা অবস্থায় চাইলেও দেখা করা যেতো। কথা খুব মেপে মেপে বলতেন। খুব ফাসিহ, বালিগ সাহিত্যপূর্ণ শব্দে কথা বলতেন। তার সাধারণ কথাও খুব আদীবানা মানের মনে হতো।

তার দরস ছিল খুবই স্পষ্ট। চাইলে যে কেউ শব্দে শব্দে নোট করতে পারত। প্রতিটা শব্দের তাহকীক করে করে পড়াতেন। সাথে আরবির বিভিন্ন প্রবাদ দিয়ে ব্যবহার দেখাতেন। মাঝে মাঝে মিজাহ করতেন। ছাত্ররা হেসে দিত। হুজুরও হাসতেন।
দেওবন্দে উস্তাদদের দরসে পার্চা দেয়ার প্রচলন ছিল। শুধু পালনপুরী সাহেব রহ.দরসে দেয়া যেত না। বাকি সব হুজুরের দরসে দেয়া যেত। সে সুবাদে হুজুরের দরসেও ছাত্ররা ইলমি-গাইরে ইলমি পার্চা দিত। হুজুর খুব সুন্দর করে একজন মুশফিক মুরব্বির মত করে উত্তর দিতেন। যেগুলো উত্তর দেয়ার মত হত, সেগুলির উত্তর দিতেন। কেউ উত্তর দেয়ার মত না হলে কখনও রাগ করতেন না। বুঝিয়ে দিতেন।

পাশাপাশি হুজুর যেহেতু নায়েবে মুহতামিম ছিলেন তাই ছাত্রদের বিভিন্ন প্রশ্ন মাদরাসার নেজাম, তালিমাত, দরস গাহ পরিবর্তন ইত্যাদি সম্পর্কেও থাকত। হুজুর সেগুলোরও উত্তর দিতেন যে, মুহতমিম সাহেব বরাবর দরখাস্ত লিখতে। দফতে ইহতিমাম সেটি দেখবে। খুব সুন্দর করে পাশ কেটে যেতেন। এটি হুজুরের খুব চমৎকার কৌশল ছিল। হুজুরের সাধারণ ভাষা ও দরসের ভাষা সাহিত্যের দিক থেকে খুব উঁচা ছিল। বলা যায়, পুরো আদিবানা আন্দাজ ছিল। দারুল উলূমের আদবের খাছ উস্তাদদের একজন ছিলেন হুজুর।

বিখ্যাত এ আলেম ভারতের মুরাদাবাদের সাম্ভাল একালায় ১৯৫০ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সনে দেওবন্দ দাখেলা নেন।  ১৯৭২ সালে অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে দেওবন্দ থেকে ফারেগ হোন। এরপর সে বছরই উস্তাদের নির্দেশে দারুল উলুমের সাধারণ শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ হোন। শিক্ষকতার পাশাপাশি মাদরাসার বিভিন্ন ইন্তেজামি কাজের জিম্মাদারিও পালন করতেন তিনি। এরপর ২০০৮ সাল থেকে মৃত্যু পর্যন্ত নায়েবে মুহতামিম হিসেবে কাজ করে গেছেন দেওবন্দের এ ইলমী তারকা আলেম।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ