আ.স.ম আল আমীন
আফসোস আমার, আমি যদি অমুককে বন্ধু না বানাইতাম, আমার কাছে সত্য দ্বীনের উপদেশ আসার পর সে আমাকে বিচ্যুত করে দিয়েছিল। আর শয়তান তো সর্বদা মানুষকে বিপদের সময় একা রেখে চলে যায় (সুরা ফুরকান ২৮-২৯)আজকাল বন্ধু ছাড়া কেউ চলতে পারেনা, কাহারো ভালো বন্ধু থাকে কাহারো খারাপ বন্ধু থাকে।
বন্ধু মানুষের জীবন কে কঠিন ভাবে প্রভাবিত করে, তাই কাউকে বন্ধু বানানোর আগে যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়। তাহলে সে বন্ধু তাকে মন্দের দিকে ডেকে নিয়ে যায়, তাকে দ্বীনি পরিবেশ থেকে দূরে সরিয়ে নেয়। রাসুল (সঃ) এর মক্কী যুগে উবাই ইবনুল খলফ ও উকবা ইবনে আবি মুআইত ছিল একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
একদিন উকবা রাসুল সা. এর মাজলিসে এসে কিছু কথা শুনলো। সেটা জেনে গিয়েছিল উবাই ইবনুল খলফ। তখন উবাই উকবার কাছে আসলো, আর জিজ্ঞেস করলো তুমি নাকি মোহাম্মদের সাথে উঠাবসা শুরু করেছো? তার কথা শুনছো? আমি তোমার সাথে আর কথা বলবোনা। তখন উবাই কসাম করে বললো, তুমি যদি আর মুহাম্মদের কাছে যাও তোমার চেহারা আমি আর দেখবনা, আর যদি চাও তোমার সাথে আমার বন্ধুত্ব টিকে থাকুক তাহলে তোমাকে মুহাম্মাদের মুখে থুথু মেরে আসতে হবে। (নাউজুবিল্লাহ)
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, মানুষ তার বন্ধুর দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়, তাই প্রত্যেকের খেয়াল রাখা উচিত সে কার সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করছে। রাসুল সঃ আরো বলেছেন, তুমি ঈমানদার লোক ব্যাতিত অন্য কাহারো সাথী হয়োনা এবং আল্লাহভীরু মুত্তাকী লোক ছাড়া কেউ যেন তোমার খাদ্য না খায়।
বন্ধু নির্বাচনে তিনটি গুনকে প্রধান্য দিতে হবে, ১- খোদাভীরু ২- আমানতদারি ৩- সত্যবাদী আল্লাহ তায়া’লা ইরশাদ করেন, যখন সে দিনটি আসবে তখন মুত্তাকিরা ছাড়া অবশিষ্ট সব বন্ধুই একে অপরের দুশমন হয়ে যাবে। (সুরা যুখরুফ-৬৭)
প্রিয় ভাইয়েরা আমার, তাই আমাদের বন্ধুত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে তার চরিত্র, কর্ম, আচার ব্যবহার, কথা বার্তা, চিন্তা- চেতনা স্বভাব ইত্যাদি। তাই আল্লাহ আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, জীবনে অসৎ খোদাদ্রোহী বন্ধু থেকে হেফাজত করুন, এমন বন্ধু আমাদের দান করুন যাদের নিয়ে জান্নাতেও এক সাথে থাকতে পারি। এমন বন্ধু আল্লাহ আমাদের দান করুন যারা আমাদের জান্নাতের পথে আহবান করে।
লেখক, শিক্ষার্থী, মা'হাদুল ইকতিসাদ ওয়াল ফিকহীল ইসলামী, ঢাকা
-এটি