শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
তাপপ্রবাহ নিয়ে নতুন সংবাদ দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর রাঙামাটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ

হাদীসের প্রমাণিকতা ও তার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি আব্দুর রহিম: এব্যপারে উম্মতে মুহাম্মাদিয়া একমত যে, কোরআনে কারিমের পর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ উৎস হাদীস। কিন্তু বিংশ শতাব্দির শুরুতে যখন মুসলমানদের উপর পাশ্চাত্য জাতিসমূহের রাজনৈতিক মতবাদের প্রভাব বেড়েছে, তখন স্বল্প জ্ঞানসম্পন্ন মুসলমানদের এমন একটি শ্রেণির উদ্ভব হয়েছে যারা পাশ্চাত্যের চিন্তা-গবেষণা দ্বারা সীমাহীন প্রভাবিত ছিলো। তারা মনে করতো পৃথিবীতে পশ্চাত্যের অনুসরণ ব্যতিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। কিন্তু ইসলামের অনেক বিধিবিধান এই পথে প্রতিবন্ধক। এজন্য তারা ইসলামের বিকৃতির ধারা আরম্ভ করে। যাতে এটাকে পাশ্চাত্য চিন্তাধারা মোতাবেক তৈরি করা যায়।

এই শ্রেণিটিকে আহলে তাজাদ্দুদ বা আধুনিকতাবাদী বলে। হিন্দুস্তানে স্যার সৈয়্যদ আহমদ খান, মিসরে ত্বাহা হোসাইন, তুর্কিতে জিয়া পোগ আলফ এই শ্রেণির পথ প্রদর্শক। এই শ্রেণির উদ্দেশ্য ততোক্ষণ পর্যন্ত অর্জিত হতে পারেনি যতোক্ষণ পর্যন্ত হাদীসকে পথ থেকে না সরানো যায়। কারণ, হাদীসসমূহে জীবনের প্রতিটি শাখার সাথে সংশ্লিষ্ট এরূপ বিস্তারিত দিক-নির্দেশনা রয়েছে, সেগুলো পাশ্চাত্য চিন্তাধারার সাথে সুস্পষ্ট সাংঘর্ষিক। এ কারণে এই শ্রেণির কেউ কেউ হাদীসকে প্রমাণ হিসেবে মানতে অস্বীকার করে।

এ ডাক হিন্দুস্তানে সর্বপ্রথম স্যার সৈয়্যদ আহমদ খান ও তার বন্ধু মৌলভি চেরাগ দেয়। কিন্তু তারা হাদীস অস্বিকারের মতবাদ প্রকাশ্যে ও সুস্পষ্ট ভাষায় পেশ করার পরিবর্তে এ পদ্ধতি অবলম্বন করে যে, যেখানে কোন হাদীস নিজের দাবি পরিপন্থি পরিলক্ষিত হয়েছে, সেখানে এর বিশুদ্ধতাকে অস্বিকার করেছে। চাই এর সূত্র যতই শক্তিশালী হউক না কেন এবং সাথে সাথে কোথাও কোথাও এ বিষয়টিও প্রকাশ করে যে, এই হাদীসগুলো বর্তমান যুগে প্রমাণ নয়। এর সাথে সাথে কোন কোন স্থানে মতলব উদ্ধারে সহায়ক ও উপকারী হাদীসগুলো দ্বারা প্রমাণও দিতে আরম্ভ করে। এর মাধ্যমেই তারা বাণিজ্যিক সুদকে হালাল বলে মত প্রকাশ করেছে, মু’জিজাগুলোকে অস্বীকার করে, পর্দাকে অস্বীকার করে এবং বহু পাশ্চাত্য মতবাদকে বৈধতার সার্টিফিকেট দেয়।

হাদীস অস্বীকারের মতবাদ তাদের পর আরো উন্নতি হয় এবং এই মতবাদ কিছুটা সাংঘঠনিকভাবে আব্দুল্লাহ চকরালবির নেতৃত্বে সামনে অগ্রসর হয়। তিনি ছিলেন একটি ফিরকার প্রতিষ্ঠাতা। নিজেকে যিনি আহলে কুরআন বলতেন। তার উদ্দেশ্য ছিলো হাদীসকে পুরোপুরি অস্বীকার করা। এরপর আসলাম জয়রামপুরি আহলে কুরআন থেকে সরে এসে এই মতবাদকে আরো সামনে এগিয়ে নেয়। এমনকি গোলাম আহমদ পারভেজ এই ফিতনার নেতৃত্বে হাতে নেন এবং এটাকে একটি সুশৃঙ্খল মতবাদ ও চিন্তাধারার রূপ দেয়। যুবকদের জন্য তার লেখায় বিরাট আকর্ষণ ছিলো। এজন্য তার যুগে এই ফিতনা সবচেয়ে বেশি ছড়ায়। আমরা এখানে এই ফিতনার মৌলিক মতবাদের উপর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা করবো।

লেখক: সিনিয়র মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া জহিরুদ্দিন আহমদ মাদরাসা মানিকনগর, ঢাকা।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ