শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

তালেবানের বিরুদ্ধে সহায়তাকারী আফগান দোভাষীদের হত্যা করছে যুক্তরাষ্ট্র !

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রায় দুই দশক ধরে নিজের দেশের মাটিতে যুক্তরাষ্ট্রকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছে কয়েক হাজার আফগান নাগরিক। তারা ছিল দোভাষী। তালেবানদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে তারা বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছে। এবার সেই দোভাষীদের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

সেনা প্রত্যাহার শুরু করলেও তাদের তালেবানের হাত থেকে বাঁচাতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি দেশটির সরকার। আশ্রয়ের আবেদন করলেও নানা কারণ দেখিয়ে ভিসা দিচ্ছে না।

তবে চলতি সপ্তাহে কিছু দোভাষীকে আশ্রয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। কিন্তু এতেও জুড়ে দেওয়া হয়েছে নানা শর্ত।

শুক্রবার রয়টার্সের খবরে বলা হয়, গত একদিন আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানির বৈঠক হয়েছে। ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে মার্কিন সেনাবাহিনী দেশটি থেকে প্রত্যাহারের পর কীভাবে পরিচালিত হবে তা নিয়েও আলোচনা হয়।

২০০১ সালে টুইন টাওয়ার হামলার পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধর নামে আফগানিস্তানে আগ্রাসন শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এই অসম যুদ্ধে মার্কিন সেনাদের সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় দোভাষীরা।

২০০২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের সঙ্গে হাজার হাজার আফগান দোভাষী হিসেবে কাজ করেছে। এই সংখ্যা অন্তত ১ লাখ হতে পারে বলে মনে করা হয়। বিশ্বের সর্বোচ্চ দারিদ্রের হারের (এডিবির তথ্য অনুযায়ী ৪৭.৩ শতাংশ) দেশটিতে এই চাকরি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ছিল খুবই লোভনীয়। নগদ ডলারের লোভে দোভাষীরা রুটিন অফিস ছাড়াও বিশেষ অভিযানে অংশ নিত। বলতে গেলে, আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের চোখ ও কানের কাজ করত তারা। কিন্তু আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহার ঘোষণার পর পরিবার নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন দোভাষীরা।

মার্কিন ও ন্যাটো সেনাদের সহযোগিতা করায় তাদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসাবে দেখে তালেবান।

এক রিপোর্ট মতে, প্রতি ৩৬ ঘণ্টায় একজন দোভাষীকে হত্যা করা হচ্ছে। অনেককেই প্রতিনিয়ত হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই দোভাষী আফগানদের জন্য ‘স্পেশাল ইমিগ্রান্ট ভিসা’ (এসআইভিএস) আবেদনের সুযোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অংশ হিসাবেই ২০০৯ সালে এই প্রোগ্রাম চালু করা হয়। কিন্তু ভিসার পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে কমপক্ষে ৯ মাস সময় লাগে। কখনো কখনো বছরের পর বছর লেগে যায়।

এই প্রোগ্রামের অধীনে কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে এসআইভি আবেদনকারীদের জন্য নতুন করে শর্ত আরোপ করা হয়।

বলা হয়, আবেদনকারীকে অন্তত দুই বছর মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে কাজ করার প্রমাণ থাকতে হবে। এরকম হলে তার আবেদন বাতিল করা হবে। এরপরও এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র যেতে এখন পর্যন্ত অন্তত আবেদন করে অপেক্ষায় রয়েছেন অন্তত ১৮ হাজার দোভাষী। আবেদন করলেই ভিসা মিলছে না। এদের বেশির ভাগই এখন ভয়ানক অবস্থায় রয়েছেন।

কেউ পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে পালিয়ে গেছেন আবার কেউ নির্বাসনে যাওয়ার চষ্টো চালাচ্ছেন। এ ভিসার জন্য যোগ্য হতে হলে দোভাষীদের অবশ্যই নিজেকে ‘বিপদগ্রস্ত’ হিসাবে প্রমাণ করতে হবে। দুবছর পর ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এমন ঘটনাও আছে।

বিপদের দিনে যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণকে বিশ্বাসঘাতকতা হিসাবে অভিহিত করছে দোভাষীরা। বিপদগ্রস্ত দোভাষীদের নিয়ে কাজ করা পেশাদার সংগঠনগুলোও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি এসব দোভাসীকে পুনর্বাসনের আহ্বান জানিয়েছে।

ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জুডিশিয়াল ইন্টারপ্রিটারস'র চেয়ারম্যান রবার্ট ক্রুজ বলেছেন, ‘আফগান দোভাষীদের দ্রুতই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া উচিত।’

এনটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ