আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ছাত্র জীবনে আদব-কায়দার প্রতি লক্ষ্য রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ছাত্ররা যেন শিক্ষা-জীবনের শুরু থেকেই এসব বিষয়ের প্রতি খেয়াল রাখে এক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন হাকিমুল উম্মত হযরত থানভী রহ.। ছা্ত্রদের উদ্দেশ্যে থানভী রহ.-এর দেওয়া বিশেষ কিছু উপদেশ শুনুন মুফতি তাকি উসমানি রহ,-এর জবানে।
* ছাত্র জীবনে স্বাস্থ্য ও অবসর সময়কে গনীমত ও সুবর্ণ সুযােগ মনে
করে মূল্যায়ন করবে।
* সকল ছাত্রদের বিশেষ করে দ্বীনি ইলম আহােরণকারীদের সর্ব প্রকার গুনাহ থেকে বিশেষত কাম ভাবের গুনাহ হতে বেঁচে থাকা একান্ত অপরিহার্য। কারণ পাপের দরুন শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিশেষ করে মন-মস্তিষ্ক দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে ইলম অর্জনে ব্যাঘাত ঘটে।
* অন্য ছাত্রের মেধা ও স্মরণ শক্তি নিয়ে কখনও হিংসা করবে না। এতে তােমার কোন ফায়দা তাে হবেই না উল্টো ক্ষতি হবে। সর্বদা পেরেশানির গ্লানি বােঝা হয়ে থাকবে। মন বিক্ষিপ্ত থাকবে। ফলে লেখা-পড়ায় মন বসবেনা। এ ছাড়াও হিংসার কারণে নেক আমল ধ্বংস হয়ে যায় ।
* যদি কেউ তােমাকে উপদেশ দানের উদ্দেশ্যে কোন কথা বলেন তাহলে তার আলােচনা শেষ হওয়ার পূর্বে সেখান থেকে উঠবেনা। এতে আলােচনার অবমূল্যায়ন হয় এবং আলােচক মনে কষ্ট পায় ।
* তােমার সহপাঠী বা অন্য কেউ যদি পড়া বা লেখায় ভুল করে, তাহলে তুমি এতে হাসবে না। এতে জঘন্য দুটি অপরাধ হবে।
এক, তােমার অহংকার প্রকাশ পাবে। দুই, এক মুসলমান ভাই অন্তরে আঘাত পাবে। আর এ উভয়টিই হারাম।
* কিতাব বা বই পত্র অত্যন্ত আদবের সাথে ধরবে। সাবধান! পা যেন, কখনও কিতাব স্পর্শ না করে। * কিতাবের ইবারত বা রিডিং বিশুদ্ধ ভাবে পড়ার চেষ্টা করবে। অপ্রয়ােজনীয় প্রশ্নোত্তরের পেছনে পড়ে মূল কথা হাত ছাড়া করবে না।
* পড়া ভাল ভাবে মুখস্থ করবে। যাতে অন্তরে দৃঢ়ভাবে বসে যায়। কোন রকম মুখস্থ করে উস্তাদকে বুঝ দেয়ার চেষ্টা করবে না। এ ধরণের মুখস্থ বেশী দিন থাকে না। সবকে বা ক্লাশে কখনও অনুপস্থিত থাকবে না। এতে বরকত উঠে যায়। পেছনের পড়া স্মৃতি থেকে হারিয়ে যায়। লেখা পড়ায় আগ্রহ উদ্দীপনা কমে যায়।
* উস্তাদের মর্যাদাবােধ, তার প্রতি সশ্রদ্ধ মােহাব্বত এবং তার আনুগত্যের প্রতি লক্ষ্য রাখবে। এতে সবক ইয়াদ করার ব্যাপারে তােমার আগ্রহ বাড়বে।
* কথা বা কাজে ভুল হয়ে গেলে সাথে সাথে নিজের ভুল স্বীকার করে।
* তুমি বড় আলেম বা উচ্চ শিক্ষিত হয়ে গেলেও নীচের দিকের (ওয়ান-টু-এর) উস্তাদকেও উস্তাদই মনে করবে। বরং বড় উস্তাদের চাইতে তাকে বেশী সম্মান করা উচিৎ। কারণ তিনিই তােমার জন্য বেশী কষ্ট করেছেন। তাঁর প্রতি সম্মান ও কৃতজ্ঞতাই যােগ্যতা ও বিনয়ের পরিচয়।
* ক্লাশ চলাকালীন উস্তাদের সামনে হাসা-হাসি বা এমন কোন আচরণ করবে না যাতে উস্তাদের মনে আঘাত লাগে ।
* ইলম নিয়ে কখনও গর্ব করবে না, বরং আল্লাহর দান ও নেয়ামত জ্ঞান করে শুকরিয়া আদায় করবে।
* সর্বাবস্থায় আল্লাহর সাথে সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখবে। এতে সবকিছু তােমার অনুকূলে এসে যাবে। অন্যথায় সব কিছু তােমার প্রতিকূলে চলে যাবে। আল্লাহ সবাইকে আমল করার তাওফিক দিন। আমীন।
এনটি