শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :

জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে আরো ৭ শতাংশ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: চলমান করোনা মহামারীতে দেশে কমেছে মানুষের আয়। আর এর সাথে পাল্লা দিয়ে লাগামহীনভাবে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা-সার্ভিসের মূল্য বাড়তে থাকায় জীবনযাত্রার ব্যয়ও বাড়ছে প্রতিবছর। গত বছর শুধু রাজধানীতেই জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৭ শতাংশ, যা ৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে নিত্য পণ্যের দাম। শুধুমাত্রই চালের দাম বেড়েছে ২০ ভাগ ।

আজ বুধবার অনলাইনে এক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানায় কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব। ভোক্তাদের স্বার্থে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি কার্যকর বাজার নজরদারির তাগিদ সংগঠনটির।

অন্যদিকে জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে না পেরে অনেকে রাজধানী ছেড়ে পাড়ি দিয়েছেন গ্রামে। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীতে জীবনযাত্রার ব্যয় ও ভোক্তা স্বার্থ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব।

রাজধানীর ১৫টি খুচরা বাজার ও বিভিন্ন সেবা-সার্ভিসের মধ্য থেকে ১১৪টি খাদ্যপণ্য, ২২টি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী এবং ১৪টি সেবা-সার্ভিসের সংগৃহীত মূল্য পর্যালোচনা করে এই তথ্য পেয়েছে ক্যাব।

প্রতিবেদনে ক্যাব বলছে, ২০২০ সালে শুধু রাজধানীতেই জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ এবং পণ্য ও সেবা সার্ভিসের মূল্য বেড়েছে ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ। ২০১৯ সালের চেয়ে ২০২০ সালে চালের দাম বেড়েছে ২০ ভাগ। পেঁয়াজ, রসূন ও তেলের দাম বেড়েছে সাড়ে ২৪ শতাংশের বেশি। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে স্বল্প আয়ের মানুষ।

করোনা মহামারিতে অনেকে কাজ হারালেও নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি। নিত্য পণ্যের দাম বাড়ার পাশাপাশি বাড়তি চাপ হয়েছে ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল। বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে গ্যাস, গণ পরিবহন ও পানির সেবা পেতে। এসময় ভোক্তাদের নয়, বরং ব্যবসায়ীদের স্বার্থ বেশি দেখা হয়েছে বলে, দাবি ক্যাবের।

নিত্য পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের পরামর্শ দেয়া হয় প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। পণ্য ও সেবামূল্য বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ০৮ শতাংশ। ২০১৮ সালে এই বৃদ্ধির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৬ দশমিক শূন্য শতাংশ ও ৫ দশমিক ১৯ শতাংশ।

এর মানে হচ্ছে গত তিন বছরের জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। তিন বছরের মধ্যে ২০২০ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় সর্বাধিক বেড়েছে।

যেসব পণ্যের দাম বেড়েছে: ক্যাবের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। মোটা চালের (পারিজা ও স্বর্ণা) ২৭ দশমিক ৩৪ শতাংশ, পাইজাম চালের ২৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ, বিআর২৮ ও বিআর১১ চালের ২০ দশমিক ৬৮ শতাংশ, মিনিকেট চালের ১৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ, নাজিরশাইল চালের ১৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং সুগন্ধি চালের গড় দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ।

আটার মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে কেজিপ্রতি ৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। ভোজ্যতেলের দাম গড়ে বেড়েছে ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। এর মধ্যে খোলা পাম অয়েলে ১৭ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। চিনি ও গুড়ের দাম প্রতি কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ।

মসলার দাম গড়ে বেড়েছে ২৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। শাকসবজির মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে গড়ে ৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালে গরু ও খাসির মাংসের দাম বেড়েছে গড়ে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। মুরগির দাম ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ আর ডিমের দাম গড়ে বেড়েছে ৫ দশমিক ৩২ শতাংশ। মাছের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে গড়ে ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ। গড়ে গুঁড়া দুধের দাম বেড়েছে ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

তবে, এই সময় ১৫টি পণ্যের দাম কমেছে। এর মধ্যে সরিষার তেলের দাম প্রতি কেজিতে ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ, ডালডাতে ৩ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং খোলা আটায় কমেছে ২ দশমিক ২৩ শতাংশ।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ