সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ ।। ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১০ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী বিরতিকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম ফুটবলারদের ওমরা পালন ধর্ষণের বিচারে শরয়ি আইন থাকলে, কোন শিশু আর ধর্ষিত হতো না: উলামা-জনতা ঐক্য পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় ঈদে নতুন নোট বিতরণ স্থগিত ধর্ষণ এবং নারীর পরিচয় নিয়ে অবমাননায় ১৫১ আলেমের বিবৃতি ১০ম তারাবির নামাজে তিলাওয়াতের সারমর্ম ত্রাণ বন্ধের পর এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করছে ইসরায়েল তারাবিতে ফাইভ জি স্পিডে তেলাওয়াত করবেন না: আজহারী ‘আলেমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা জিহাদ নয়, সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

হে বন্ধু! আর কতো বসে থাকবে?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা আবু তাহের মেছবাহ
বিশিষ্ট লেখক ও মাদানী নেসাব প্রবর্তক

পথের শুরুতে গাড়ীর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকে, অথচ হেঁটে চলার শক্তি আছে; তাকে তুমি পথিক বলো না। সে পথিক নয়, পথ এবং পথের ধূলো তার জন্য নয়। আদর্শ পথিক যদি দেখতে চাও, তাবুকের অভিযানে মরুভূমির দিগনে- তাকাও। বাহনের উট নেই, পথের সঙ্গী নেই; নেই সামান্য পাথেয়, তবু তাঁর পথচলা থেমে নেই। দূর থেকে তাঁর ছায়া দেখে আল্লাহর নবী বলছেন, রাহিমাল্লাহু আবা যাররিন।

পথের কাছে পথিকের কোন দাবী নেই, পথিকের কাছে পথের আছে অনেক দাবী। পথ হবে সরল সমতল, তাতে থাকবে গাছের ছায়া ও পানির ফোয়ারা। এরপর তুমি পাড়ি দেবে পথ! তার চেয়ে বন্ধু, ঘরের ছেলে তুমি ঘরেই থাকো; আরামের পথ এবং পথের আরাম যারা চায়, পথচলা তাদের জন্য নয়। তারা তো গাছের ছায়া দেখে ভাবে, একটু থামি, একটু বসি। তারা বসে এবং ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুম থেকে জেগে দেখে, সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। পাখীরা ঘরে ফিরছে এবং সূর্য অস্ত যাওয়ার আয়োজন করছে। সূর্য তো আর ঘুমিয়ে ছিলো না! সূর্যের পথচলা তো আর থেমে ছিলো না!

যুগে যুগে কত পথিক পথ চলেছেন, পথের দাবী মেনেই তারা পথ চলেছেন। গাছের ছায়া ছিলো না, মিঠা পানির ফোয়ারা ছিলো না, বাহন ছিলো না, পাথেয় ছিলো না, তবু তাদের পথচলা থেমে ছিলো না। অনেক চড়াই-উৎরাই ছিলো, বাধা-বিপত্তি ও প্রতিকূলতা ছিলো। ক্ষুধা ও পিপাসা ছিলো, রোদ-বৃষ্টি ও ঝড়-তুফান ছিলো, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কা ছিলো; তবু তাদের পথচলা অব্যাহত ছিলো।

এমন পথিক যারা, পথ তাদের ভালোবাসে, এমন পথিক যারা পথ, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং স্বানন্দে নিজের বুকে তাদের পদচি‎হ্ন ধারণ করে। গায়বের ইশারায় পথের চড়াই-উৎরাই তখন সমান হয়ে যায় এবং সকল প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা দূর হয়ে যায়, তখন তাদের পথচলা সহজ হয়ে যায়।

এমন পথিক যারা মনযিল তাদের প্রতীক্ষায় থাকে, মনযিল তাদের সাদরে বরণ করে, আর বলে, দীর্ঘ পথে কত না কষ্ট করেছো। হে পথিক! কত চড়াই-উৎরাই ও বাধা-প্রতিকূলতা অতিক্রম করেছো! কত ঝড়-তুফানের মুকাবেলা করেছো! কত পাহাড়-পর্বত ও মরুভূমি পার হয়ে এসেছো! আমি তোমার পদচুম্বন করি হে পথিক! এসো, আমার গাছের ছায়ায় বসো, এই শীতল পানি পান করে পিপাসা দূর করো। এমন পথিক যারা তাদের পথচলা নয় শুধু নিজেদের জন্য, তাদের পথচলা আগামী দিনের পথিক যারা তাদের জন্য। তারা পথ চলেন এবং পথের বুকে পদচি‎হ্ন রেখে যান, যারা পথ চেনে না তাদের পথচলার জন্য।

ঘরে বসে থাকবে আর কত হে বন্ধু! তোমার আগে যারা পথ চলেছেন তাদের পদচি‎হ্ন তো আছে! সেই পদচি‎হ্ন অনুসরণ করে পথ চলতে শুরু করো! দেখবে, পথ চলা তোমার সহজ হয়ে গেছে। কিন্তু আগে তোমাকে পথচলা শুরু করতে হবে এবং পথের আরামের চিন্তা ত্যাগ করতে হবে। অন্তত আগে থেকেই জানতে চেয়ো না, বাহন আছে কি না, গাছের ছায়া এবং পানির কুয়া আছে কি না! এতে অসম্মান করা হয় তাদের যারা তোমার আগে পথ চলেছেন এবং তোমার জন্য রেখে গেছেন পদচি‎হ্ন।

হে বন্ধু! জানি না পথচলা তোমার হবে কি না এবং মনযিলের দেখা তুমি পাবে কি না। আমার সান্ত্বনা শুধু এই যে, আমি তোমাকে বলতে পেরেছি পথ ও পথিকের কথা এবং পথের বুকে রেখে যাওয়া পদচিহ্নের কথা।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ