সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫ ।। ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১০ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন আনিসুজ্জামান চৌধুরী বিরতিকে কাজে লাগিয়ে মুসলিম ফুটবলারদের ওমরা পালন ধর্ষণের বিচারে শরয়ি আইন থাকলে, কোন শিশু আর ধর্ষিত হতো না: উলামা-জনতা ঐক্য পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি থাকায় ঈদে নতুন নোট বিতরণ স্থগিত ধর্ষণ এবং নারীর পরিচয় নিয়ে অবমাননায় ১৫১ আলেমের বিবৃতি ১০ম তারাবির নামাজে তিলাওয়াতের সারমর্ম ত্রাণ বন্ধের পর এবার গাজায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করছে ইসরায়েল তারাবিতে ফাইভ জি স্পিডে তেলাওয়াত করবেন না: আজহারী ‘আলেমদের বিরুদ্ধে অস্ত্র তোলা জিহাদ নয়, সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ পদত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

ধর্ষণ প্রতিরোধে ইসলাম

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ফরহাদ খান নাঈম।।

ধর্ষণ এমন একটি জঘন্য কাজ যেটিকে পৃথিবীর সকল ধর্মেই কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। প্রতিটি সুস্থ প্রকৃতস্থ মানুষের কাছেই ধর্ষণের নিকৃষ্টতা পরিস্কার।

পার্থিব সকল বিচারব্যবস্থা এটিকে নিকৃষ্টতম অপরাধ হিসেবে গণ্য করে, এবং ধর্ষকের বিরুদ্ধে কঠিনতম শাস্তি আরোপ করে। তবে বেশ কিছু রাষ্ট্রে ধর্ষণের অপরাধকে ছাড় দেওয়া হয়, যদি ধর্ষক ধর্ষিতাকে বিবাহ করে নেয়। এটি নিঃসন্দেহে নির্বুদ্ধিতা ও বিকৃত মানসিকতার পরিচায়ক।

বিবাহ মানেই হলো ভালোবাসার এক পবিত্র সম্পর্ক; আর একজন ধর্ষক কখনোই অন্তরে ভালোবাসা নিয়ে ধর্ষণ করে না। ধর্ষণের বেদনা এতোটাই প্রচণ্ড যে, অনেক ধর্ষিতাই এ বেদনা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আর যারা বেঁচে থাকে, তারা এক বুক বেদনা নিয়ে বেঁচে থাকে। কারণ সময়ের সাথে সাথে সবকিছু ঠিক হয়ে গেলেও একজন ধর্ষিতা কখনো ধর্ষণের বেদনা ভুলতে পারে না। তাই ধর্ষণের মাধ্যমে শুরু হওয়া কোনো সম্পর্ক কখনোই সুন্দর বৈবাহিক সম্পর্কে রূপ নিতে পারে না।

ইসলাম এই গর্হিত কাজকে হারাম করেছে, এবং এ কাজে জড়িত ব্যক্তি/ব্যক্তিদের জন্য কঠোরতম শাস্তির বিধান দিয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্ষণের সাথে জড়িত প্রায় সবাই কোনো না কোনোভাবে মাদকাসক্ত। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা নারীর একাকিত্বের সুযোগ গ্রহণ করে। মিডিয়ায় প্রদর্শিত যৌন উত্তেজনাদায়ক ভিডিও ও মেয়েদের অর্ধনগ্ন পোশাক ধর্ষণের সম্ভাবনাকে আরো তরান্বিত করে।

ইসলাম শুধুমাত্র ধর্ষণই নিষেধ করেনি; বরং ধর্ষণে উদ্বুদ্ধকারী সকল দরজাও ইসলাম বন্ধ করে দিয়েছে। ইসলাম নারীকে অশালীন পোশাক পরিধান করতে নিষেধ করেছে। ইসলামে কোনো নারীর একাকি ভ্রমণ নিষিদ্ধ। এমনকি ইসলামে একজন নারীর জন্য কোনো বেগানা পুরুষের সাথে করমর্দন করারও অনুমতি নেই। ইসলাম নর-নারীকে সাবালকত্বপ্রাপ্ত হওয়ার সাথে সাথেই বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ হতে নির্দেশ দিয়েছে।

এভাবেই ইসলাম ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সম্ভাব্য প্রতিটি দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। আর তাই এটা বিচিত্র কোনো ঘটনা নয় যে, অমুসলিম দেশগুলিতে ধর্ষণের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি। খোদ আমেরিকাতেই প্রতি ৯০ সেকেন্ডে একজন করে ধর্ষণের শিকার হয় (সূত্র- ইন্টারন্যাশনাল অ্যামনেষ্টি রিপোর্ট ২০০৪)। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, এই আমেরিকাই আবার অনেকের কাছে সভ্যতা ও শিষ্টতার মানদণ্ড!

ইসলামে ধর্ষণ আর ব্যভিচারের শাস্তি সমান। ধর্ষক যদি বিবাহিত হয়, তাহলে তাকে প্রস্তরাঘাতের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দিতে হবে। আর ধর্ষক যদি অবিবাহিত হয়, তাহলে তাকে একশো চাবুক মারতে হবে ও এক বছরের জন্য নির্বাসনে পাঠাতে হবে। এতে যদি তার মৃত্যুও ঘটে, তারপরও এ শাস্তির কোনো পরিবর্তন হবে না।

ধর্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনতিবিলম্বে এই বিচার কার্যকর করতে হবে।

আল্লাহ তা'য়ালা বলেন- যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং জমিনে অনিষ্ট করে বেড়ায়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হস্তপদসমূহ বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি। সূরা মায়িদা: আয়াত ৩৩।

ইসলামই একমাত্র নারীর জান-মাল-ইজ্জতের নিরাপত্তা বিধান করেছে। ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত সর্বত্র ইসলামী বিধান বাস্তবায়িত হলেই তবে পৃথিবীতে শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার সুবাতাস বইবে।

ইসলামকা ডট কম থেকে ফরহাদ খান নাঈমের অনুবাদ।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ