আন্দামান নওশাদ: বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড-বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ও সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা আবু ইউসুফের মধ্যে হওয়া ফোনালাপ ফাঁস ও চলমান অস্থিরতা, অনিয়ম এবং সংকট উত্তরণের জন্য ছয় সদস্যের একটি উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত রোববার চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদরাসায় বেফাকের চেয়ারম্যান শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কার্যালয়ে খাস কমিটির বৈঠকে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এজন্য পেছানো হয় পূর্ব ঘোষিত বেফাকের আমেলার জরুরি বৈঠকও।
গঠিত হওয়া ছয় সদস্যের উচ্চতর তদন্ত কমিটির আজ প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু বৈঠকে সাড়া দেয়নি তদন্ত কমিটিতে থাকা ঢাকার কোনো সদস্য। বিষয়টি আওয়ার ইসলাম টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাপরিচালক মাওলানা জুবায়ের আহমদ চৌধুরী।
জানা যায়, তদন্ত কমিটির আহবায়ক দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মুফতি জসিম উদ্দিন এসেছিলেন হাটহাজারী থেকে। আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম বরুড়া মাদরাসার মুহতামিম মুফতি নোমান আহমদও এসেছিলেন কুমিল্লা থেকে। আর অফিসে থাকা মাওলানা মুহাম্মদ জুবায়েরসহ মোট তিনজনের মিটিংয়ে তদন্তের মাঝে কোনো গতি আসেনি।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে মাওলানা জুবায়ের আহমদ চৌধুরী আওয়ার ইসলামকে বলেন, মুফতি জসিম সাহেব সকাল দশটায় হাটহাজারী থেকে বেফাক অফিসে আসেন। আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম বরুড়া মাদরাসার মুহতামিম মুফতি নোমান আহমদ আসেন কুমিল্লা থেকে। কিন্তু তারপরও ঢাকার কোনো সদস্য তদন্ত কমিটির মিটিংয়ে অংশ নেননি। তাই তদন্তের কোনো অগ্রগতিও হয়নি।
ঢাকার সদস্যগণ কেনো অংশ নেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা হয়তো অসুস্থ। অথবা ব্যক্তিগত কোনো অসুবিধা রয়েছে। তাই অংশ নিতে পারেননি। তবে তারা পুনরায় আবার বসবেন। আর বসার তারিখ কবে হবে? সেটা জসিম সাহেব অন্যান্য সদস্যদের সাথে পরামর্শ করে ঠিক করবেন।
এদিকে মুফতি জসিম উদ্দিন এর নাম্বারে ফোন করলে তার খাদেম হাটহাজারী মাদরাসার ইফতা বিভাগের ছাত্র মারুফ ফোন রিসিভ করেন। হুজুর কোথায় জানতে চাইলে মারুফ বলেন, হুজুর ফোন রেখেই ঢাকা গিয়েছেন। এখনো ফিরেননি। কখন ফিরবেন তাও নিশ্চিত করে বলতে পারেন না তিনি।
উল্লেখ্য, ‘ফোনালাপ ফাঁস: মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস সম্পূর্ণ নির্দোষ: বেফাক সভাপতি আল্লামা শাহ আহমদ শফী’ এর নামে এমন একটি রহস্যময় চিঠি গনমাধ্যমে এসেছিলো। তদন্ত কমিটি গঠনের পর এ বিষয়ে বেফাকের ছাত্র-শিক্ষকদের কৌতুহল ও জানার আগ্রহ বেড়েই চলছে। তাদের প্রশ্ন নির্দোষ প্রমাণিত হলে আর তদন্তের কী প্রয়োজন? আর তদন্ত ছাড়া নির্দোষ প্রমাণিতই বা হোন কিভাবে? ধারণা করা হচ্ছে, তদন্ত শেষ না হওয়ার আগে এ রহস্যের জট খুলবেনা । তদন্ত শেষেই বলা যাবে চিঠিটি কে কিভাবে কখন কাকে দিয়ে গণমাধ্যমে ভাইরাল করেছে।
বৈঠকে উপস্থিত না থাকা অন্যান্য তিন সদস্য হলেন উচ্চতর ইসলামি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়ার শিক্ষাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মালেক, জামিআ রাহমানিয়া আরাবিয়া আলি এন্ড নূর রিয়েল স্টেট মাদরাসার ইফতা বিভাগের প্রধান মুফতি মনসুরুল হক, মিরপুর আকবর কমপ্লেক্ম মাদরাসার মুহতামিম মুফতি দেলওয়ার হোসাইন।
এমডব্লিউ/