মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫ ।। ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১১ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :
ফয়যে বর্ণভী সাবাহী মক্তব বোর্ডের ফলাফল প্রকাশ; পাসের হার ৯৯.৪৯% জাতীয় ঐক্য ছাড়া ফ্যাসিবাদকে বিলোপ করা সম্ভব নয়: নাহিদ ইসলাম ফেসবুকে উপদেষ্টা মাহফুজের ‘মব’ নিয়ে পোস্ট, যা বলল ঢাবি ছাত্রশিবির ইফতা, আদবসহ বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি নিচ্ছে উত্তরার মাদরাসাতুল আযহার লালমাটিয়ায় দুই তরুণীকে সিগারেট খেতে না করা সেই রিংকুকে গ্রেফতার ‘অপরাধের সাম্প্রতিক ব্যাপকতার পেছনে পরাজিত শক্তির রাজনীতি ক্রিয়াশীল' একদিনে ২৯ হাজার কুরআনের কপি বিতরণ সৌদি আরবের ‘দ্রুত বিচার আইনের মাধ্যমে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে’ নির্মাণাধীন ভবনের কাঠ পড়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু  ১১ তম তারাবির নামাজে তিলাওয়াতের সারমর্ম

কোরবানির ঈদে পাইলস ও হৃদরোগ রোগীদের চাই স্বাস্থ্য সচেতনতা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ।।

কোরবানি ঈদের সময় অন্যান্য সময়ের চেয়ে মাংস খাওয়া কিছুটা বেশি হয়। যেহেতু উৎসব কাজেই নিজের বাসা থেকে শুরু করে দাওয়াত- সবখানেই খাবার তালিকায় মাংস থাকেই। তবে দু’একদিন এ মাংস খাওয়া একটু বেশি হলে সমস্যা নেই। বিপত্তি বাঁধে যখন এই খাওয়ার পরিমাণ বেশি হয়ে যায়। একটু রয়ে-সয়ে না খেলে পেটের পীড়া, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা হৃদরোগ আছে এমন রোগীদের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।

পরিমাণমত মাংস খান: উৎসব মেনে অনেকে মাংস একটু বেশি পরিমাণে খান। আর বেশি মাংসে পেট ফাঁপা, জ্বালাপোড়া, ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। আর যদি এই সময়ে পানি পান করার পরিমাণ কমে যায় তাহলে সমস্যা বাড়বে আরও বেশি। দেখা দেবে কোষ্ঠকাঠিন্য। সাধারণভাবে কোনো নির্দিষ্ট খাবার খেতে নিষেধ নেই, কিন্তু পরিমাণ বজায় রাখা জরুরি। এক্ষেত্রে দিনের শুরু থেকেই খাবারের একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা উচিত।

ঈদের দিন সকাল থেকে নানা ধরনের তৈলাক্ত খাবার, পোলাও, বিরিয়ানি, মুরগি, খাসি বা গরুর মাংস, কাবাব, রেজালা, চটপটি, দইবড়া কিংবা বোরহানির মতো টক খাবার সকাল আর দুপুরে কম খাওয়াই উত্তম।

পাইলস কী:পাইলস রোগটির সাথে আমরা হাজার বছর ধরে পরিচিতি,পাইলস বা হেমোরয়েড (বাংলায় অর্শ্ব বা গেজ)- এর নামকরন নিয়ে নানা ধরনের জটিলতা রয়েছে। তবে নাম যাই হোক না কেন, পাইলস হচ্ছে মলদ্বারের ভেতরের আবরনী, তার রক্ত নালী ও অন্যান্য মাংশ পেশীর সমন্বয়ে গঠিত একটি কুশন বা গদির ন্যায় তুলতুলে নরম অংশ। এটি মলদ্বারের ভেতরেই থাকে। কিন্তু যখন রোগ হিসাবে প্রকাশ পায় তখন ঝুলে বাইরে বের হয়ে আসতে পারে। এটা একপ্রকার ধাতুগত পীড়া। মলদ্বারের ভিতরে বা বাহিরের চার পাশের শিরা গুলো ফুলে মটরদানা কিংবা অঙ্গুরের মত কিংবা ছাগলের বাটের মত ছোট ছোট গলি বা টিউমার হলে তাকে অর্শ বা হেমোরয়েড বলে। অর্শ প্রধানত দুই প্রকার যথা অন্তর্বলি ও বহির্বলি এইছাড়া এক প্রকার অর্শকে মিশ্র বলি বলে। যেটি বাহির উভয় স্থানে থাকে।

আনুষাঙ্গিক চিকিৎসা: তিনটি বিষয়ে লক্ষ রাখিতে হইবে। ১. আহার ও ভ্রমন সমন্ধে নিয়ম পালন। ২. নিয়মিত পায়খানা পরিস্কার হওয়ার ব্যবস্থা করা। ৩. অর্শের স্থানটিকে ভালোভাবে পরিস্কার রাখা।

প্রতিরোধের উপায়: সময়মত কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়ার সমস্যা থাকলে চিকিৎসা করা, টয়লেটে বসে বসে পেপার বা বই না পড়া, খাবারের সঙ্গে আঁশ জাতীয় জিনিস যেমন : ফল, সবজি, সালাদ পরিমাণ মতো খাওয়া, দৈনিক ৬-৮ গ্লাস পানি পান করা, ভারী ওজন না তোলা, অতিরিক্ত গরমে বেশিক্ষণ না থাকা ইত্যাদি।

ঈদের সময় সাধারণ রোগী ও পাইলস রোগীর জন্য কিছু পরামর্শ-

পরিমিত খাবারে ঈদে থাকুন সুস্থ
কুরবানি ঈদের সময় অন্যান্য সময়ের চেয়ে মাংস খাওয়া কিছুটা বেশি হয়। যেহেতু উৎসব কাজেই নিজের বাসা থেকে শুরু করে দাওয়াত- সবখানেই খাবার তালিকায় মাংস থাকেই। তবে দু’একদিন এ মাংস খাওয়া একটু বেশি হলে সমস্যা নেই। বিপত্তি বাঁধে যখন এই খাওয়ার পরিমাণ বেশি হয়ে যায়। একটু রয়ে-সয়ে না খেলে পেটের পীড়া, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা হৃদরোগ আছে এমন রোগীদের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।

উৎসব মেনে অনেকে মাংস একটু বেশি পরিমাণে খান। আর বেশি মাংসে পেট ফাঁপা, জ্বালাপোড়া, ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। আর যদি এই সময়ে পানি পান করার পরিমাণ কমে যায় তাহলে সমস্যা বাড়বে আরও বেশি। দেখা দেবে কোষ্ঠকাঠিন্য। সাধারণভাবে কোনো নির্দিষ্ট খাবার খেতে নিষেধ নেই, কিন্তু পরিমাণ বজায় রাখা জরুরি। এক্ষেত্রে দিনের শুরু থেকেই খাবারের একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকা উচিত।

ঈদের দিন সকাল থেকে নানা ধরনের তৈলাক্ত খাবার, পোলাও, বিরিয়ানি, মুরগি, খাসি বা গরুর মাংস, কাবাব, রেজালা, চটপটি, দইবড়া কিংবা বোরহানির মতো টক খাবার সকাল আর দুপুরে কম খাওয়াই উত্তম।

সকালে হালকা খাবার: সকালে ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন। ঈদের নামাজে যাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে অল্প করে সেমাই বা পায়েস খেতে পারেন। এর সাথে কয়েকটি কিশমিশ, বাদাম খেলে ভাল। দোকান থেকে আনা কোমল পানীয়, ড্রিংকস, ফ্রুট জুস না খেয়ে ঘরে বানানো ফলের জুস, লেবুর শরবত অথবা ডাবের পানি খেতে পারেন।

খাবার খেতে হবে বুঝে শুনে: কম বয়সী ব্যক্তিদের যদি কোনো প্রকার শারীরিক সমস্যা না থাকে তাহলে তারা পছন্দমত সব খাবার খেতে পারেন। তবে অতিরিক্ত মাংস খাওয়া এড়িয়ে চলা ভাল। নইলে হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার দেখা দিতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা।

যাদের অ্যানাল ফিশার ও পাইলস-জাতীয় রোগ আছে, তাদের পায়ুপথে জ্বালাপোড়া, ব্যথা ইত্যাদি বাড়তে পারে, এমনকি পায়ুপথে রক্তক্ষরণ পর্যন্ত হতে পারে। এ সমস্যা রোধে প্রচুর পরিমাণে পানি, শরবত, ফলের রস, ইসবগুলের ভুসি ও অন্যান্য তরল খাবার বেশি করে খেতে হবে।

পেটে গ্যাসের সমস্যা হলে হোমিওপ্যাথি ঔষধ, পালসেটিলা,অথবা নাক্স ভূমিকা খেতে পারেন। যাদের আইবিএস আছে, তারা দুগ্ধজাত খাবার এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করুন। দাওয়াতে গেলে অতিভোজন পরিহার করার চেষ্টা করুন। রাতে খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর ঘুমাতে যাবেন। খাবারের ফাঁকে ফাঁকে পানি খাবেন না, এতে হজম রসগুলো পাতলা হয়ে যায়। ফলে হজমে অসুবিধা হয়।

এই সময়ে চর্বি এড়িয়ে চলুন: যে কোনো চর্বি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য এমনিতেই ক্ষতিকর। কুরবানির সময় এ বিষয়টি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা উচিত। মাংসে আলাদা কোনও চর্বি যোগ না করে এর সাথে সবজি যুক্ত করে রান্না করতে পারলে ভাল। টাটকা সবজি পাকস্থলীকে সাবলীল রাখে।

তেল বা ঘিয়ের পরিমাণ কমিয়ে মাংস রান্না করুন। ভুনা মাংসের বদলে শুকনো কাবাব করে খেলে, মাংস পুড়িয়ে খেলে, কোমল পানীয় ও মিষ্টি একেবারে কমিয়ে খেলে কোরবানির ঈদের সময়ও ভালোই থাকা যায়। খাওয়ার পর হালকা ব্যায়াম বা কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করলে শরীর থেকে অতিরিক্ত ক্যালরি কমিয়ে ফেলা সম্ভব।

বড়দের মাঝে চাই সচেতনতা: মধ্যবয়সী এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের মাঝে খাবার সম্পর্কে সচেতনতা থাকা উচিত। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত চর্বি ইত্যাদি না থাকা সত্ত্বেও এই বয়সী মানুষের ঈদের খাবারের ব্যাপারে বাড়তি সতর্ক থাকা দরকার। বেশি মাংস খেলে পেটে অস্বস্তিকর অনুভূতি, ভরা ভরা ভাব, বারবার ঢেকুর ওঠা এমনকি বুকে ব্যথা পর্যন্ত হতে পারে।

ডায়াবেটিক রোগীকে অবশ্যই মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। যদি মিষ্টি খেতেই হয় তাহলে চিনির বিকল্প দিয়ে খাবার বানানো যেতে পারে। পোলাও, বিরিয়ানি কম খাবেন। গরু বা খাসির মাংস খাওয়া যাবে, পরিমাণটা অতিরিক্ত যাতে না হয় এবং তেল বা চর্বি যেন কম থাকে।

স্ট্রোক ও হৃদরোগে আক্রান্তদের জন্য: স্ট্রোক এবং হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীরা অবশ্যই তৈলাক্ত মাংস কমিয়ে খাবেন। সারা বছর তারা যে ধরণের নিয়মকানুন পালন করেন খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে, কোরবানির সময়ও সেই ভাবে চলা উচিত। কোরবানির মাংস একটু আধটু খেলে শরীরের যে খুব ক্ষতি হয়ে যাবে তা নয়, তবে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যাদের ওজন বেশি তাদের অবশ্যই ঈদের সময় অতিরিক্ত খাওয়া পরিহার করতে হবে। গেঁটে বাত বা ইউরিক এসিড বেশি যাদের এবং যারা কিডনির সমস্যায় ভোগেন, তাদেরকে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য কম খেতে বলা হয়।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ