শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

তারাবির নামাজের মাঝে সম্মিলিত দোয়া ও মুনাজাতের বিধান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি নাজমুল হুদা নোমানী ।।

তারাবি নামাজে প্রতি চার রাকাত পর মুনাযাত করা বা বিশ রাকাত শেষে মুনাজাত করা,আর তারাবীর মুনাজাতের বিখ্যাত দোয়া ইয়া মুজিরু ইয়া মুজিরু" মুনাজাতে পড়া,বা চার রাকাত পরে মাসুর এবং গায়রে মাসুর, কুরআন- সুন্নাহ সম্মত যে কোন দোয়া দুরুদ পড়া বা একটি দোয়াকে নির্দিষ্ট করে পড়া উসুলুশ শরিয়া এবং ফিকহুশ শরিয়ার আলোকে সমপুর্ণ শরিয়ত সম্মত,এসব আমল খেলাফে সুন্নাহও নয় এবং বিদআতও নয়।

তবে গায়রে মাসুর দোয়া- দরুদের ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। ১। উহাকে মাসুর দোয়া- দরুদ মনে করা যাবেনা। ২। উহার কোন ফযিলত বলা যাবেনা। ৩। উহাকে মুস্তাহাব,সুন্নত, মনে করা যাবেনা।

৪। উহাকে ওয়াজিব তথা কারো জন্য বাধ্যতামুলক মনে করা যাবেনা। ৫। উহাকে অন্য গায়রে মাসুর দোয়া- দরুদের তুলনায় উত্তম মনে করা যাবেনা। ৬। উহা কেহ আমল না করার দরুন বা না পড়ার কারণে তাকে খারাপ মনে করা যাবেনা। ৭। উহা আমল না করার দরুন বা না পড়ার কারণে কাউকে তিরস্কার, ভর্ৎসনা,গালমন্দ,সম্পর্ক নষ্ট করা যাবেনা

এ বিষয়গুলো খেয়াল করে যদি কেহ মাসুর বা কুরআন- সুন্নাহ সম্মত গায়রে মাসুর দোয়া- দরুদ নিয়মিত আমল করে, তাহলে উহা তার ইস্তেকামাতের প্রমাণ, মনে রাখতে হবে কোন আমলের উপর দাওয়াম হওয়াকে ইস্তেকামাত বলে, দাওয়াম কখনো ওয়াজিব বুঝায়না যেমন ওযুতে নাকে- মুখে সব সময় পানি দেয়া বা কান,গলা,ঘাড় সব সময় মাসেহ করা আমলের ইস্তেকামাম্তের দলিল৷

কোন দিন ওযুতে এ আমলগুলো না ছাড়ার কারণে বা সব সময় ওযুতে এ কাজগুলো করার কারণে ঐ আমলগুলো ওয়াজিব বা জরুরী হিসেবে প্রমাণিত হয়না।

তবে উল্লেখিত ৭ টি বিষয়ের কোন একটি লংঘন হলে তখন এটা সাব্যস্ত হবে যে আপনি ঐ আমলগুলোকে জরুরী তথা ওয়াজিব মনে করছেন.আর তখন আপনার আমলটি বিদাত বলে গণ্য হবে।

কারণ শরিয়তে যে আমলটি ওয়াজিব নয়,তাকে ওয়াজিবের মাকাম দিলে বা ওয়াজিব মনে করলে,বা ঐ আমলের সাথে ওয়াজিবের মত আচরণ করলে তা বিদাত বসে গণ্য হয়৷

আবার উসুল ও ফিকহ বিবর্জিত সহিহ হাদিস বা সহিহ আকিদা বা সহিহ আমল বা সুন্নত কায়েমের নামে, বা বিদাত উৎখাতের নামে।

অথবা কুরআন-সুন্নাহ- উসুলে শরিয়া- ফিকহে শরিয়ার দলিল ছাড়াই যহিরি আলফাযের সরল তরজমার ভিত্তিতে সমাজে প্রতিষ্ঠিত শরিয়ত সম্মত কোন আমলকে খেলাফে সুন্নত বা বিদাত বা নাজায়েয বলাটাও অনেক বড় ফিতনা৷এসবের মাধ্যমে সমাজে বিশৃংখলার সৃষ্টি করা,মুসলিম জাতির ঐক্য নষ্ট করা,মুসলিম ভ্রাতৃত্বে চির ধরানো,কালিমার ভিত্তিতে গঠিত ইসলামের জাতীয় ঐক্যসংহতিতে বিভক্তি- ফাটল সৃষ্টি করা।

ধর্মীয় অংগনে এক মুসলিমকে অন্য মুসলিমের বিরুদ্ধে উসকিয়ে দেয়া বা একজনকে অন্যজনের বিপরীত মুখোমুখি দাড় করিয়ে দেয়া,সাধারণ জনগণের ধর্মীয় আমলে অরাজকতা তৈরি করা,সন্দেহের সৃষ্টি করা,আমলের প্রতি নিরুৎসাহিত করা,বা সমাজে প্রতিষ্ঠিত শরিয়ত সম্মত আমলকে বন্ধ করে দেয়া শিরকের পর সর্বনিকৃষ্ট জঘন্যতম ফিতনা, যা অকাট্য হারাম।

ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ.বলেন, যে বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সা.এর আদেশও নেই,আবার নিষেধও নেই, সে সমস্ত আমল বৈধ রুপে গণ্য হবে যতক্ষন পর্যন্ত উহার নিষিদ্ধতা বা সাংঘর্ষিক কোন কিছু কুরআন- হাদিসে পাওয়া না যায়।

আল্লাহ আমাদের সকলকে কুরআন - সুন্নাহর সহিহ ফাহম ও ফিকহ দান করুন,এবং ধর্মের নামে ধর্ম নষ্ট করা বা দুনিয়া উপার্জন,বা সমাজের মুসলমানদের ঐক্য - শান্তি বিনষ্ট করা হতে হেফাজত করুন৷ আমিন।

লেখক: প্রধান মুফতি, মারকাযুল ফিকহ আলইসলামী ঢাকা।

ওআই/আবদুল্লাহ তামিম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ