শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আ.লীগ নেতাকর্মীর প্রভাবে নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সংবর্ধনা বাতিল আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা ইসলামি লেখক ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত, আসছে নতুন কর্মসূচি

করোনায় খতম তারাবির ভিন্ন আমেজ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

তানযীল হাসান।।

মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহে প্রায় এক যুগ ধরে পবিত্র রমজান মাসে খতম তারাবি পড়ানোর সুযোগ হয়েছে। এবারও তা অব্যাহত রয়েছে। সরকার ঘোষিত স্বল্প পরিসর এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমাদের এবারের তারাবির আয়োজন। তবে এবারের তারাবিহ অনুভূতি বরাবরের মতো নয়। ব্যাথা ও বেদনাবিধুর ভিন্ন নতুন এক অনুভূতি। যা আগে কখনো কল্পনা করিনি। ভাবতেও পারিনি, করোনা ভাইরাসের কারণে এভাবে বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ বিপর্যস্ততা নেমে আসবে। চরম দুর্ভোগ ও স্থবিরতার মধ্য দিয়ে জনজীবন অতিবাহিত হবে। কিন্তু বাস্তবতা এটাই। তাই এর থেকে রেহাই পেতে জনসমাগমের অন্যান্য স্থানগুলোর ন্যায় মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ফলে হাজারো ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মুসল্লিরা ব্যাপকভাবে মসজিদে উপস্থিত হতে পারছে না। ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং দায়িত্বশীলদের অনিচ্ছা ও পাহাড়সম কষ্ট সত্ত্বেও মসজিদে আসতে মুসল্লিদের বারণ করতে হচ্ছে।

এদিকে সীমিতসংখ্যক মুসল্লির কোঠায় অন্তর্ভূক্ত হয়ে মসজিদে প্রবেশ করা এবং বিশেষত তারাবির জামাতে অংশ নিয়ে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত শ্রবনের সৌভাগ্য অর্জনে চলছে রীতিমতো প্রতিযোগিতা। যারা এ সুযোগ লাভ করছেন তাদের খুশির যেন অন্ত নেই। আর যারা এ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের হৃদয়গুলো যেন ব্যথা-বেদনায় ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। মসজিদে প্রবেশ করতে না পেরে অশ্রুসজল নয়নে তাদের প্রস্থান থেকে যা সহজেই অনুমেয়।

এতদসত্ত্বেও থেমে যাননি তারা। তাইতো বাসা-বাড়ি, অফিস, স্কুল ও মাদ্রাসার বিভিন্ন কক্ষে স্বাস্থবিধি অনুসরণ করে সীমিত আকারে খতম তারাবির আয়োজন করছেন অনেকে। তাদের ন্যায় আমিও একজন। সীমিত পরিসরে হলেও খতম তারাবিহ পড়াতে পেরে হৃদয়ভরা তৃপ্তি অনুভব করছি ।

রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রধান মুফতি হিফজুর রহমানের কক্ষে চলছে আমাদের এ আয়োজন। উস্তাদজীসহ পাঁচ-সাত জনের ছোট জামাত। দৈনিক দুই পারা করে তিলাওয়াত করছি। ইচ্ছা রয়েছে ১৫ দিনে খতম করার।‌ এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও খতম তারাবির আয়োজনে শরীক হতে পেরে মহান আল্লাহর দরবারে জানাই লাখো শুকরিয়া।

পাশাপাশি হৃদয়পটে ভেসে উঠছে অতীত তারাবিগুলোর হাজারো স্মৃতি। মনে পড়ছে কুরআনপ্রেমী মুসল্লি ভাইদের ত্যাগ-তিতীক্ষার উপাখ্যানগুলো। যারা দিনভর রোজা রেখে শত ক্লান্তি-অবসাদ সত্ত্বেও অধীর আগ্রহে মসজিদে এসে কুরআন তেলাওয়াত শ্রবনের অপেক্ষায় থাকতো। ইশার নামাজান্তে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পবিত্র কুরআনের মধুময় বানীগুলো হৃদয়াঙ্গম করতো। কত মুসল্লিকে দেখেছি বার্ধক্য বা অসুস্থতা কোন কিছুই তারাবি নামাজে তাদের কুরআন শরীফের তেলাওয়াত শ্রবনে প্রতিবন্ধক হতো না। কিন্তু আজ তা অনেকটা স্বপ্নের মতোই।

মসজিদে যেয়ে জামাতের সাথে তারাবির সালাত আদায় এবং পবিত্র কুরআনের বাণী শ্রবনের সে আবেগ, ভালোবাসা ও সীমাহীন আগ্রহ-উদ্দীপনা আজো মুসলমানদের মাঝে পুরা মাত্রায় বিদ্যমান। কিন্তু পরিবেশ, পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় মুসলমানদের বৃহৎ একটি অংশ জামাতের সাথে খতম তারাবি আদায় এবং পবিত্র কোরআন শ্রবণ থেকে বঞ্চিত হয়ে ভারাক্রান্ত ও বেদনাহত। আমরা আশাবাদী অচিরেই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে এ কঠিন পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করবেন।

লেখক: ইফতা ১ম বর্ষ, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া, সাতমসজিদ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা।

-এএ


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ