শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

করোনার কঠিন পরিস্থিতিতে রিজিকের জন্য সুরা ওয়াকিয়ার আমল

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

হুসাইন মাহমুদ।।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। আর এদিকে খেটে খাওয়া মানুষগুলো অনাহারে দিন পার করছে, কেউ মৃত্যুকে বেছে নিচ্ছে। এমনিতেই বাংলাদেশ দারিদ্র, ক্ষুধা, অর্থনীতিক মন্দার মতো সমস্যা চরমে। তার মধ্যে ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণের ঘটনা আমাদেরকে আরও ‘কঠিন পরিস্থিতি’র মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

দারিদ্র্য এমন একটি অর্থনৈতিক অবস্থা, যখন একজন মানুষ জীবনযাত্রার ন্যূনতম মান অর্জনে এবং স্বল্প আয়ের কারণে জীবনধারণের অপরিহার্য দ্রব্যাদি ক্রয় করার সক্ষমতা হারায়। সাংস্কৃতিক স্বেচ্ছাচারিতা ও আগ্রাসন, জনসংখ্যার চাপ, অর্থনৈতিক দুর্দশা, সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যা এবং মহামারি,বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, খরা ইত্যাদির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দারিদ্র্য সৃষ্টি করে।

বর্তমানে পুরো বিশ্ব যে মহামারীতে আক্রান্ত তা সকলেরই জানা এই আজাব থেকে কিভাবে প্রথমে নিজেকে তারপর পরিবার,দেশ বাঁচাব! প্রথম উপায় হলো নিজেকে আল্লাহর দিকে সোপর্দ করা। চাই সেটা যে কোন ইবাদতের মাধ্যমে নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার দান-সদক্বা এবং ডাক্তারি দিক-নির্দেশনা গুলো মেনে চলা।

দারিদ্র্যের কারনে আজকাল শুনতে পাই চুরি- ডাকাতি এবং সব চেয়ে বড় বিষয় হলো ঈমান বিক্রি করে ফেলছে, ভাইকে ভাই হত্যা করে ফেলছে আরো কত কি!

আমরা কিভাবে এ দারিদ্র্যতা দূর করব? কী আমল করলে আল্লাহ তায়ালা দারিদ্র্যতাকে দূর করে দিবেন। মহানবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি সূরা ওয়াক্বিয়াহ পাঠ করবে, সে কখনো ক্ষুধায় কষ্ট ভোগ করবে না।’ সূরা আল- ওয়াক্বিয়া’র নামের অর্থ, নিশ্চিত ঘটনা। এ সূরা পাঠ করলে দরিদ্রতা গ্রাস করতে পারেনা।

হাদিসে নারীদের এ সূরা শিক্ষা দেয়ার জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে। মা আয়েশা রা. কে এ সূরা পাঠের জন্য নির্দেশ করা হয়েছিলো। অন্তিম রোগশয্যায় আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এর শিক্ষাপ্রদ কথোপকথন ইবনে—কাসীর ইবনে আসাকীরের বরাত দিয়ে এই ঘটনা বর্ণনা করেন যে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. যখন অন্তিম রোগশয্যায় শায়িত ছিলেন, তখন আমীরুল মু’মিনীন হযরত ওসমান রা. তাঁকে দেখতে যান৷ তখন তাঁদের মধ্যে শিক্ষাপ্রদ যে কথোপকথন হয় তা নিম্নরুপ: হযরত ওসমানঃ ما تشتكي আপনার অসুখটা কি? হযরত ইবনে মাসউদঃ ذنوبي আমার পাপসমূহই আমার অসুখ৷
ওসমান গণীঃ ما تشتهي আপনার বাসনা কি? ইবনে মাসউদঃ رحمة ربي আমার পালনকর্তার রহমত কামনা করি৷

ওসমান গণীঃ আমি আপনার জন্যে কোন চিকিৎসক ডাকব কি? ইবনে মাসউদঃ الطبيب امرضني চিকিৎসকই আমাকে রোগাক্রান্ত করেছেন৷ ওসমান গনীঃ আমি আপনার জন্যে সরকারী বায়তুল মাল থেকে কোন উপটৌকন পাঠিয়ে দেব কি?ইবনে মাসউদঃ لاحاجة لي فيها এর কোন প্রয়োজন নেই৷ ওসমান গণীঃ উপটৌকন গ্রহণ করুন৷ তা আপনার পর আপনার কন্যাদের উপকারে আসবে৷ ইবনে মাসউদঃ আপনি চিন্তা করছেন যে, আমার কন্যারা দারিদ্র ও উপবাসে পতিত হবে৷ কিন্তু আমি এরুপ চিন্তা করি না৷ কারণ, আমি কন্যাদেরকে জোর নির্দেশ দিয়ে রেখেছি যে, তারা যেন প্রতিরাত্রে সূরা ওয়াক্কিয়া পাঠ করে৷ আমি রাসুলুল্লাহ সা. কে বলতে শুনেছি, من قرأ سورةالواقعة كل ليلة لم تصبه فاقة ابدا”
অর্থাৎ, যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা ওয়াক্কিয়া পাঠ করবে, সে কখনও উপবাস করবে না৷

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সুরা ওয়াক্বিয়াহ তেলাওয়াত করবে তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না। হজরত ইবনে মাসউদ রা. তাঁর মেয়েদেরকে প্রত্যেক রাতে এ সুরা তেলাওয়াত করার আদেশ করতেন। বাইহাকি:শুআবুল ঈমান-২৪৯৮

দরিদ্রতা আসে সাত জিনিসের কারণে- ১। তাড়াহুরা করে নামাজ পড়ার কারণে! ২। দাঁড়িয়ে পেশাব করার কারণে! ৩। পেশাবের জায়গায় অজু করার কারণে!৪। দাঁড়িয়ে পানি পান করার কারণে! ৫। ফুঁ দিয়ে বাতি নিভানোর কারণে!
৬। দাঁত দিয়ে নখ কাটার কারণে! ৭। পরিধেয় বস্ত্র দ্বারা মুখ সাফ করার কারণে!

সচ্ছলতা আসে সাত জিনিসের কারণেঃ ১। কুরআন তেলাওয়াত করার কারণে। ২।পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার কারণে।৩ আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করার কারণে। ৪। দরিদ্র ও অক্ষমদের সাহায্য করার কারণে।৫। গোনাহের ক্ষমা প্রার্থনা করার কারণে। ৬। পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সদাচরণ করার কারণে।৭। সকালে সূরা ইয়াসিন এবং সন্ধ্যায় সূরা ওয়াকিয়া তেলাওয়াত করার কারণে।আল্লাহ আমাদের সবাইকে তওফিক দান করুন। আমিন।

ওআই/আবদুল্লাহ তামিম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ