শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

ছোঁয়াচে রোগ ও ইসলামের আকিদা-বিশ্বাস

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি মামুন আব্দুল্লাহ কাসেমি

রাজধানীর মিরপুরস্থ শেওড়াপাড়ার চাঁদতারা জামে মসজিদে প্রতি শুক্রবার বাদ জুম'আ আধা ঘণ্টা উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।আগে লিখিত প্রশ্নের জবাব দেয়া হত,কিন্তু দেখা গেছে অনেকেরই কিছু না কিছু প্রশ্ন থাকে, তবে লিখে আনতে ভুলে গিয়েছেন।

তাই এর পর থেকে সরাসরি উত্তর দেয়ার ধারাবাহিকতা চালু করা হয়েছে। নিয়ম বলা আছে-সাধারন জীবন যাপন সংক্রান্ত প্রশ্ন করা যাবে,আমার জানা না থাকলে পরে কিতাব দেখে বলেবো ইনশাআল্লাহ।
গত শুক্রবার মামুনুর রশীদ নামের এক ভাই জিজ্ঞস করলেন ছোঁয়াচে রোগের ব্যাপারে ইসলামের আকিদা কী,আমাদের কী বিশ্বাস হওয়া উচিৎ?

ডাক্তাররা করোনা ভাইরাসের ব্যাপারে বলছেন যে,এটা মারাত্মক ছোঁয়াচে। কিন্তু বুখারী শরীফের একটি হাদীসের রেফারেন্সে অনলাইনে অনেককে বলতে দেখলাম-ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছু নেই। ইসলামে কি ছোঁয়াচে রোগকে অস্বীকার করা হয়েছে? আসলে বিষয়টি কিভাবে দেখা উচিৎ? তখন তাকে দেয়া উত্তরের সাথে ঈষৎ সংযোজন করে এখানে পেশ করছি-

এখানে নিন্মোক্ত কয়েকটি কথা পরিষ্কার মাথায় থাকতে হবে-

১। ইসলামের কোনো বিষয়ই সঠিক বাস্তবতার পরিপন্থী নয়। কেননা, এ বিশ্বজগত যিনি সৃষ্টি কছেন তিনিই শরীয়ত দিয়েছেন। অতএব ইসলামের কোনো বিষয়ের সাথে সঠিক বাস্তবতার সংঘর্ষ হতে পারে না।

২। এ বিশ্ব জগতে যা কিছু হয় সবই আল্লাহ তাআলার নির্দেশেই হয়। এর পিছনে যেসব আসবাবকে বাহ্যিক কার্যকারণ হিসেবে দেখা যায় এগুলো যদিও বাস্তব, তবে এসবের কার্য ও ক্রিয়া করার ক্ষমতাও আল্লাহপ্রদত্ত। আল্লাহ তাআলা ক্রিয়া করার ক্ষমতা না দিলে এগুলো ক্রিয়া করতে পারবে না। এজন্যই ক)আগুন হযরত ইবরাহীম আ.কে জালাতে পারেনি।
খ) ছুরি হযরত ইসমাঈল আ.কে জবেহ করতে পারেনি গ)সমুদ্র হযরত মূসা আ.কে নিমজ্জিত করতে পারেনি
ঘ) মাছ হযরত ইউনুস আ.কে হযম করতে পারেনি। কারন? আল্লাহ তা'আলার হুকুম হয়নি,তাই এই আসবাবগুলো তার কার্য ক্রিয়া করতে পারেনি।

৩। সুস্থতা-অসুস্থতা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়। সুস্থতার যেমন বিভিন্ন কারণ রয়েছে তদ্রূপ অসুস্থতারও বিভিন্ন কারণ আছে। যেমন-মাত্রাতিরিক্ত ঠান্ডায় সর্দি বা জ্বর হয়। তেমনিভাবে রোগাক্রান্ত হওয়ার একটি কারণ হচ্ছে সংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে যাওয়া। এটি একটি বাস্তব বিষয়। শরীয়ত একে অস্বীকার করেনি।

তবে অন্যান্য আসবাবের ব্যাপারে যে কথা এখানেও একই কথা-কার্য ও ক্রিয়া করার ক্ষমতা আল্লাহপ্রদত্ত। রোগের মধ্যে ক্রিয়া করার নিজস্ব ক্ষমতা নেই। তাই আল্লাহ চাইলে রোগাক্রান্ত হবে নতুবা হবে না। এজন্যই দেখা যায়, সংস্পর্শে যাওয়ার পরও অনেকে রোগাক্রান্ত হয় না।

যে হাদীসের কথা এখানে বলা হয়েছে এর সঠিক তরজমা হলো- ‘রোগ-ব্যধি (তার নিজস্ব ক্ষমতায়) একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে লেগে যায় না।’ (সহীহ মুসলিম, হাদীস : ৫৭৪২)

ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছু নেই-হাদীসের এ তরজমা বিশুদ্ধ নয়। কেননা, এর থেকে বোঝা যায়, বাস্তব ছোঁয়াচে রোগকে ইসলাম অস্বীকার করেছে। অথচ রোগাক্রান্ত হওয়ার অন্যান্য কারণ যেমনিভাবে বাস্তব তদ্রূপ রোগাক্রান্ত হওয়ার এই কারণটিও বাস্তব।

ইসলাম একে অস্বীকার করেনি। এক্ষেত্রে যে বিষয়টিকে ভ্রান্ত ও বাতিল সাব্যস্ত করা হয়েছে তা হল, কোনো ব্যাধিকে এমন মনে করা যে, তা নিজে নিজেই সংক্রমিত হয়।

মূলত ইসলামপূর্ব আরবের জাহেলি যুগে কিছু রোগ-ব্যাধিকে নিজস্ব ক্ষমতায় সংক্রামক মনে করা হত।
সেই প্রেক্ষিতে নবীজি সা. ইরশাদ করেছেন- عَدْوَى “ছোঁয়াচে রোগ বলতে কিছু নেই।”

এক বেদুইন জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ, তাহলে আমার উটের কী হলো, এগুলো সুস্থ অবস্থায় মাঠে চরছিল, এরপর খুজলিযুক্ত উট এসে এগুলোর মাঝে প্রবেশ করে, তারপর খুজলিযুক্ত উট সুস্থ উটগুলোকে খুজলিযুক্ত বানিয়ে দেয়?
নবীজী বললেন, আচ্ছা, তাহলে প্রথম উটটি কীভাবে সংক্রমিত হলো?

(অর্থাৎ প্রথম উট যেভাবে আল্লাহর হুকুমে খুজলিযুক্ত হয়েছে, বাকিগুলোও আল্লাহর ইচ্ছায়ই খুজলিযুক্ত হয়েছে)।”
(সহীহ মুসলিম: হাদীস নং ৫৭১৭)।

তদানিন্তন আরবে কুষ্ঠ রোগকে নিজস্ব ক্ষমতায় ছোঁয়াচে মনে করা হতো,এটা তাদের বিশ্বাসে পরিনত হয়েছিলো।এ বিশ্বাসকে অসঠিক প্রমানিত করার জন্য এবং এগুলো সবকিছু যে আল্লাহ তা'আলার নির্দেশাধীন চোখে আঙ্গুল এটা বুঝানোর জন্য কুষ্ঠ রোগির হাত ধরে নিজের বসিয়ে একি পাত্রে খাবার গ্রহন করলেন।

হযরত জাবের রা. হতে বর্নিত أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَخَذَ بِيَدِ مَجْذُومٍ فَأَدْخَلَهُ مَعَهُ فِي الْقَصْعَةِ، ثُمَّ قَالَ : " كُلْ بِاسْمِ اللَّهِ ثِقَةً بِاللَّهِ، وَتَوَكُّلًا عَلَيْهِ. “রাসূল সা. কোষ্ঠ রোগীর হাত ধরে নিজের সাথে তাকে খাবারের পাত্রে বসালেন এবং বললেন, আল্লাহর নামে খাবার শুরু করে তাঁর ওপর আস্থা ও ভরসা রেখে খাও।” (তিরমিযী: ১৮১৭)।

এই হাদীসগুলোর মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে-নিজস্ব ক্ষমতায় কোন রোগই সংক্রামক বা ছোঁয়াচে নয়।

অন্যদিকে বিভিন্ন রোগের কিছু বাহ্যিক কার্যকারণ থাকে।যেমন-ঠান্ডা থেকে সর্দি কাশি হওয়া,চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহনে ওজন বেড়ে যাওয়া কোলষ্টোরল হওয়া।

ঠিকতেমনি কিছু কিছু রোগের বাহ্যিক কার্যকারণ হচ্ছে ঐধরনে ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়া।
এজন্য অতি ঠান্ডা,চর্বিযুক্ত খাবার হতে বেচে যেমন জরুরী তেমনিভাবে অভিজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে কোন রোগের মধ্যে যদি বাহ্যিক সংক্রমন স্বভাব থাকে তাহলে এর থেকেও বেচে থাকা অপরিহার্য। বাহ্যিক কার্যকারনের ভিত্তিতেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন—َ فِرَّ مِنَ الْمَجْذُومِ كَمَا تَفِرُّ مِنَ الْأَسَدِ. “সিংহ থেকে পলায়ন করার মতো তুমি কোষ্ঠ রোগী থেকে পলায়ন করো।” (সহীহ বুখারী: ৫৭১৭)।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন— لَا يُورِدَنَّ مُمْرِضٌ عَلَى مُصِحٍّ. “খুজলিযুক্ত উটের মালিক যেন অন্যের সুস্থ উটের সাথে তার উট না রাখে।” (সহীহ বুখারী: ৫৭৭১)।

রাসূল সা. এর হাতে একজন কোষ্ঠ রোগী বাইআতের জন্য এলে তিনি তার হাত স্পর্শ ব্যতীত বাইআত করলেন।
হযরত শারীদ রা. বলেন— كَانَ فِي وَفْدِ ثَقِيفٍ رَجُلٌ مَجْذُومٌ، فَأَرْسَلَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِنَّا قَدْ بَايَعْنَاكَ، فَارْجِعْ.
“সাকীফ গোত্রের প্রতিনিধিদলে একজন কোষ্ঠ রোগী ছিল। তখন রাসূল ﷺ তার কাছে এই বলে সংবাদ পাঠালেন যে, আমি তোমাকে বাইআত করে নিয়েছি, তুমি ফিরে যাও।” (সহীহ মুসলিম: ২২৩১)।

এসব হাদীসের মূল বক্তব্য হচ্ছে,আল্লাহ তা'আলার হুকুমে অনেক সময় কিছু কিছু রোগ সংক্রামক হয়। উভয় প্রকার হাদীসের উপর আলোকপাত করে হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ. বলেন- জুমহুর ওলামায়ে কেরামের অভিমত হলো-মক্কার কাফেররা মনে করতো যে,রোগ-ব্যাধি নিজস্ব ক্ষমতায় সংক্রমিত হতে পারে, আল্লাহ তা'আলা রোগের মধ্যে এই ক্ষমতা দিয়ে অবসরে চলে গেছেন!(নাঊযুবিল্লাহ) তাই ছোঁয়াচে রোগীর সংস্পর্শে গেলে নিশ্চিতভাবে সুস্থ ব্যক্তিও অসুস্থ হয়ে যাবে। لا عدوی ‘ছোঁয়াচে বলতে কোনো রোগ নেই বলে’ মূলত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়া সাল্লাম তাদের সেই ভ্রান্ত আকীদা খণ্ডন করেছেন।‘ছোঁয়াচে রোগ নেই বলে ঢালাওভাবে সংক্রমণকে নাকচ করা হয়নি। কারণ এর বাস্তবতা রয়েছে...।

বরং ওই সংক্রমণকে নাকচ করা উদ্যেশ্য যার প্রবক্তা ছিল জাহেলী যুগের লোকেরা। বিজ্ঞান-বিশ্বাসী লোকেরা যা এখনও বলে থাকে। অর্থাৎ তারা মনে করে, কিছু রোগের স্বাভাবগত অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এগুলো নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত হয়। কখনও এর ব্যত্যয় ঘটে না। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলে এসবের খণ্ডন করেছেন। এ বিষয়টি যেমন হাদীস দ্বারা খণ্ডিত হয় তেমনভাবে বাস্তবতার মাধ্যমেও খণ্ডিত হয়। যেমন: কোনো এলাকায় মহামারী দেখা দিয়েছে। মহামারী শেষ হওয়ার পর দেখা যায় সুরক্ষিতদের তুলনায় মৃতদের সংখ্যা অনেক কম হয়ে থাকে। যদি সংক্রমণ আবশ্যক হতো, এর উল্টো চিত্র দেখা যেতো; কেউই বেঁচে থাকতে পারতো না’।”

(ইমদাদুল ফাতাওয়া: খণ্ড ৪,পৃষ্ঠা ২৮৭)। ইমাম বাইহাকী রহ.সংক্রমন স্বীকৃতি মূলক হাদীসগুলো বর্ননা করার পরে বলেন- قد یجعل اللہ تعالی بارادته مخالطة الصحيح من به شيئ من هذه العيوب سببا يحدثونه به আল্লাহ তা'আলা কখনো কখনো নিজ ইচ্ছায় অসুস্থ ব্যক্তির সাথে সুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শ গ্রহনকে ঐ সুস্থ ব্যক্তিরও রোগাক্রান্ত হওয়ার কারন বানিয়ে দেন(সুনানে সগীর,২৫১৫ নং হাদীসের অধীনে)।

মোটকথা কিছু কিছু রোগ যে সংক্রামক হয়ে থাকে বাহ্যিক কার্যকারনের পর্যায়ে ইসলামে তা স্বীকৃত। স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংক্রামক বলে বর্তমান বিজ্ঞান বিশ্বাসী বস্তুবাদীদের বক্তব্যের মত নয়।ইসলামের বিশ্বাস হচ্ছে, সংক্রামক রোগগুলো আল্লাহর ইচ্ছায়ই সংক্রামক হয়, আর আল্লাহ না চাইলে হয় না।

মুফতী সাঈদ আহমদ পালনপুরী দা.বা. বলেন, “আরবের লোকেরা কিছু রোগকে নিজ ক্ষমতায় ছোঁয়াচে মনে করতো।
রাসূল ﷺ এই আকীদার খণ্ডন করছেন। তবে কিছু রোগীর সাথে ওঠাবসা করাটা একপ্রকার রোগের কারণ হয়। আর শরীয়ত উপায় অবলম্বন করার শিক্ষা দিয়েছে। সুতরাং এ জাতীয় রোগীদের থেকে দূরে থাকা খোদ শরীয়তেরই নির্দেশ। তবে এসব রোগীর সংস্পর্শে গেলে নিঃসন্দেহে রোগ লেগে যাবে—এমন আকীদা বিশুদ্ধ নয়। বাস্তব-অভিজ্ঞতারও পরিপন্থী।” (তুহফাতুল কারী: খণ্ড ৩,পৃষ্ঠা ৪০৬)।

উস্তাদে মুহতারাম আরেক জায়গায় বলেন, “রোগ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছোঁয়াচে হয়—এমন আকীদা ইসলামের একত্ববাদের আকীদার সাথে সাংঘর্ষিক। আল্লাহর এই দুনিয়ায় যা কিছু হয় তাঁর ইচ্ছাতেই হয়...। ছোঁয়াচে রোগ থেকে সতর্ক থাকা উচিৎ। তবে এমন সতর্কতা কাম্য নয় যেসব সতর্কতার উপায়-উপকরণগুলো নিজেই খোদা বনে যায়।”(খণ্ড ৫,পৃষ্ঠা ১৬২)।

উপাকার ও অপকারের একমাত্র মালিক আল্লাহ তাআলা। হায়াত-মওত, সুস্থতা-অসুস্থতা সবই তাঁর হুকুমে হয়ে থাকে।
মোটকথা-সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে রোগাক্রান্ত হওয়া একটি বাস্তব বিষয়। তবে সংক্রমনের এই ক্ষমতা রোগের নিজস্ব নয়; বরং আল্লাহপ্রদত্ত। তাই তিনি চাইলে সংক্রমণ হবে নতুবা হবে না এবং এটি যেহেতু রোগাক্রান্ত হওয়ার একটি বাস্তব কারণ তাই রোগাক্রান্ত হওয়ার অন্যান্য কারণ থেকে বেঁচে থাকতে যেমনিভাবে কোনো দোষ নেই তেমনি এক্ষেত্রেও উপযুক্ত সতর্কতা অবলম্বন করা দোষের নয়। বরং কিছু হাদীসে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানেও চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী মাস্ক ব্যবহার করা,পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি সবিশেষ গুরুত্বারোপ করা,সন্দেহভাজন জনসমাগম এড়িয়ে চলা,হোম কোয়ারান্টাইন মেন্টেন করা,বেশিবেশি পানি খাওয়া, ভিটামিন নেয়া ইত্যাদি পালন ও গ্রহনে কোন বাধাতো নেইই,বরং এগুলো কার্যকর করাই সুন্নাহর দাবি।তবে এগুলো অবশ্যই বাহ্যিক কার্যকারন হিসেবেই কেবল।স্বয়ংক্রিয় সংক্রামক ব্যাধির বিশ্বাস থেকে নয়।

এক কথায়-لا عدوی ও এজাতীয় হাদীসের সম্পর্ক আকিদা-বিশ্বাসের সাথে,আর فر من المجزوم ও এজাতীয় হাদীসের সম্পর্ক বাহ্যিক কার্যকারনের দিক থেকে আমলের সাথে।

লেখক পরিচালক- মারকাযুদ দিরাসাতিল ইসলামিয়া-ঢাকা ও মুহাদ্দিস জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ