শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আ.লীগ নেতাকর্মীর প্রভাবে নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের সংবর্ধনা বাতিল আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা ইসলামি লেখক ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত, আসছে নতুন কর্মসূচি সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান কারাগারে উত্তপ্ত খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

করোনার ছুটিতে মাদরাসার ছাত্ররা যেভাবে সময় কাটাবেন!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মীযানুর রহমান এখলাশপুরী।।

প্রিয় তালেবানে ইলম! বর্তমান বিরাজমান করোনা ভাইরাস আতঙ্কে যখন সমগ্র বিশ্ব থতমত। আশা করি তোমরা সকলে নিজ নিজ অবস্থানে ভালই আছ। আল্লাহ সকলকে নিরাপত্তা, সুস্থতা ও সফলতা দান করুন। বিশেষত সকল মুসলিম জাতিকে আল্লাহ করোনা ভাইরাসের আক্রমন ও সংক্রমন থেকে নাজাত দান করুন। যারা আক্রান্ত হয়েছেন আল্লাহ তাদেরকে সুস্থতা দান করুন। যারা মৃত্যু মুখে ঢলে পড়েছে আল্লাহ তাদেরকে শাহাদাতের মর্যাদা দান করুন।

প্রিয় তালেবানে ইলম! পরিস্থিতি স্বীকার হয়ে আজ এ গুরুত্বপুর্ণ পড়া লেখার সময়ও আমরা নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছি। অথচ এখন সময় ছিল মাদরাসায় থেকে অধ্যবসায় ইলমের চর্চা করার। বিগত বছর গুলোতে এমনই হয়ে ছিল। কিন্তু আজ আমরা সকলে পরিস্থিতির স্বীকার। মহান আল্লাহ আমাদের উপর বেজায় নারাজ হয়েছেন। জাতিয়ভাবে পাপাচার সিমাতিরিক্ত হয়ে গেছে। জুলুম-নির্যাতন ‘সাধারণ ব্যাপার’ হয়ে গেছে। তাই মহান আল্লাহ এ মহামারি দিয়ে কারো থেকে জুলুমের প্রতিশোধ নিচ্ছেন। কাউকে সতর্ক করছেন।

কাউকে আবার শাহাদাতের মর্যাদাও দান করছেন। আমাদেরকে তওবা করতে হবে। আল্লাহর তাকদীরের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রেখে সবর করতে হবে। রোনাযারী করে আল্লাহকে রাজী করে নিতে হবে। বিশ্ব মোড়লদের এহেন অসহায়ত্বের পরিস্থিতিতে খুব স্বরণ হয় কুরআনের বাণী যে, কিয়ামত দিবসে মহান আল্লাহ বলবেন- لمن الملک الیوم অর্থ: আজকের ক্ষমতা কার?

কোন উত্তর না পেয়ে আল্লাহ নিজেই বলবেন, للہ الواحد القھار অর্থ: আজকের রাজত্ব একমাত্র আল্লাহর। বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রপ্রধানরা অত্যন্ত অসহায় হয়ে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে যে, অদৃশ্য এই মহামারী ভাইরাস থেকে মুক্তি দানকারী একমাত্র আকাশের মালিকই। তিনিই একমাত্র পরাক্রমশালী। সুতরাং আমাদেরকে তার কাছেই ধরনা দিতে হবে। তারই উপাসনা করতে হবে।

প্রিয় তালেবানে ইলম! পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, অবস্থান যেখানেই হোক না কেন। আমরাতো তালিবুল ইলম। আমাদের পরিচয়ের মধ্যেই আছে শুধু ‘ইলম অম্বেষণ’। আমরা নিজেদের পরিচয় ভুলে গেলে চলবে না। আমরাতো উত্তরসুরী ইমাম মুহাম্মদ রহ. ও ইমাম আবু ইউসুফ রহ. এর। আমাদের জীবনের আদর্শ তো হিদায়া কিতাবের লিখক শাইখুল ইসলাম বুরহানুদ্দীন আল-মারগিনানী রহ. ও শাইখুল ইসলাম আল্লামা এসবীজাবী রহ. এর মতগণ। তাহলে শুন তাদের অবস্থা, ইলমের প্রতি তাদের গভীর অনুরাগ ও অধ্যবসায়ের কিছু কথা।

কথাগুলো ইমাম বুরহানুদ্দীন যরনুজীর মুখে। তিনি বলেন, ‘‘তালিবে ইলম তো কখনো ইলম ছাড়া অন্য কাজে লিপ্ত হয়ে যাবে না এবং ফিকহের থেকে বিমুখ হবে না। ইমাম মুহাম্মাদ রহ. বলেন, ইলম অর্জনের একাজ আমাদের শিশু কাল থেকে কবরে যাওয়া পর্যন্তের কাজ। সুতরাং যদি কেউ কিছু সময় ইলম অর্জন থেকে দূরে থাকে তাহলে সে সময়টি যেন তার থেকে দূরে চলে যায় অর্থাৎ সে যেন মরে যায়। (এটি ইমাম মুহাম্মাদ রহ. পক্ষ থেকে তার জন্য বদ-দুয়া)

একদা বিশিষ্ট ফিকাহবিদ ইবরাহীম বিন জাররাহ রহ. ইমাম আবু ইউসুফ রহ.কে তার মৃত্যুপূর্ব অসুস্থতাবস্থায় দেখতে যান। তখন আবু ইউসুফ রহ. মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার নিকটবর্তী ছিলেন। ইমাম আবু ইউসুফ রহ. তাকে কাছে পেয়ে (মৃত্যু যন্ত্রনার সে কঠিন মুহূর্তেও হজ্জের একটি মাসআলা) জিজ্ঞেস করলেন, রমিয়ে জিমার পায়ে হেটে করা উত্তম না কি বাহনে থেকে করা উত্তম? ইবরাহীম বিন জাররাহ রহ. থেকে উত্তর না পেয়ে নিজেই উত্তর দিলেন- প্রথম দুই রমি পায়ে হেটে করা উত্তম। (তালিমুল মুতাআল্লিম-৯৬)

আল্লামা বুরহানুদ্দীন যরনুজী রহ. বলেন, আমার উস্তাদ আল্লামা বুরহানুদ্দীন মারগীনানী রহ. বলতেন, আমি আমার সহপাঠিদের থেকে যোগ্যতায় আগে বেড়ে গেছি এভাবে যে, আমি ইলমেদীন অর্জনের ক্ষেত্রে কোন ছুটি কাটাতাম না। (অর্থাৎ যখন যে অবস্থায় থাকতাম ইলমের অন্বেষণেই লিপ্ত থাকতাম।) (তালিমুল মুতাআল্লিম-৯১)

শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইসবীজাবী রহ. এর সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তার পড়া-লেখার সময় রাষ্ট্রীয় যুদ্ধ-বিগ্রহের কারণে বারো বছর পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কিন্তু তিনি ইলম চর্চা বন্ধ রাখেন নি। বরং তার এক জন সাথীকে নিয়ে তিনি নিরাপদ এলাকায় বেরিয়ে পড়েছেন এবং প্রত্যহ সাথীর সাথে ইলমী মুযাকারায় বসতেন। এমনকি বারো বছরে এক দিনের জন্যও মুযাকারা ছেড়ে দেন নি। ফলে তার সাথী যিনি শাফেয়ী মাযহাবের ছিলেন তিনি আপন মাযহাবের একজন বড় ইমাম হয়ে গেছেন। আর শাইখ ইসবীজাবী রহ তো হানাফী মাযহাবের ছিলেন, কাজেই তিনি হানাফী মাযহাবের একজন ইমাম হয়ে গেছেন। ( তালিমুল মুতাআল্লিম-৯২)

প্রিয় তালেবানে ইলম! আল্লামা যরনুজীর বর্ণিত ঘটনাগুলোতে গভীর চিন্তা করবে। ভাববে যে, তাদের উত্তরসূরী হয়ে আমাদের কেমন হওয়া উচিত। অলসতা, অবহেলা, সময় নষ্ট করা ছেড়ে গভীর একাগ্রতার সাথে পড়া-লেখা করতে হবে বাড়িতে বসে। তবেই তুমি ইলমের সে স্বাধ পাবে যা পেয়েছেন ইমাম মুহাম্মাদ রহ.। ইলম অন্বেষণে সারা রাত জেগে অধ্যায়নে লিপ্ত থাকতেন তিনি। গভীর রজনীতে যখন ইলমের কোন মুশকিল অধ্যায় বুঝতে পারতেন, তো আনন্দের আতিশয্যে বলে উঠতেন- أین أبناء الملوک من ھذہ اللذات۔ আহ! ইলমের অধ্যায়নে গভীর রজনীতে আমি যে স্বাধ উপলব্দি করছি রাজপুতেরা এমন স্বাধ কোথায় পাবে। (তালিমুল মুতাআল্লিম-৯৫)

কাজেই আমাদেরকে এখন বেশী সময় দিতে হবে যোগ্যতা অর্জনের পিছনে। সময়কে খুব বেশী কাজে লাগাতে হবে। দরসে কিতাবগুলো ভালো করে আয়ত্ব করার পাশাপাশি আমাদেরকে ইলম ও আমালের ক্ষেত্রে নিজেকে সমৃদ্ধশালী করার জন্য ব্যাপক মুতালাআ করতে হবে। বিশেষত আকাবিরদের জীবনী, তাদের রচিত বিভিন্ন বিষয়ের উপর গবেষণামূলক কিতাব ইত্যাদি খুব মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। বিশেষভাবে আজকের এ নিবন্ধে তোমাদের ইলমী পূর্ণতা অর্জনে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে আলোকপাত করতে প্রয়াস পাচ্ছি।

তা হল- ইলমের একটি নির্বাচিত অংশ কন্ঠস্থ করা। বিষয়টি অত্যন্ত জরুরী। যোগ্যতা থাকা সত্তে¡ও কন্ঠস্থ না থাকার কারণে অনেক সময় যোগ্যতাকে কাজে লাগানো যায় না। এভাবে কোন বিষয়ে পূর্ণ দক্ষতা অর্জন ঐ বিষয়ে গ্রহণযোগ্য কোন বই মুখস্থ রাখা ছাড়া সম্ভব নয়। আল্লামা বুরহানুদ্দীন যরনুজী রহ. বলেন, আমার উস্তাদ শাইখ কাজী ইমাম ফখরুল ইসলাম কাজী খান রহ. বলতেন, যে ব্যক্তি মুফতী হতে চায়, তার জন্য উচিত ফিকহ বিষয়ক কোন নির্ভরযোগ্য কিতাব যেন সর্বদা মুখস্থ রাখে, যাতে পরবর্তীতে ফিকহের যে মাসআলাই সে শুনে মুখস্থ করা তার জন্য সহজ হয়ে যায়। (তালিমুল মুতাআল্লিম-৯২)

এ বিষয়ে বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলেমে দীন হযরত মাও. মুফতী আব্দুল মালেক দামাত বারাকাতুহুমের ‘‘মুরাজাআত একটি সাময়িক প্রয়োজন: আলেমের মূল বৈশিষ্ট নয়’ শিরোনামে গুরুত্বপূর্ণ একটি লেখা পড়েছি। তার নির্বাচিত অংশ এখানে উদ্ধৃত করছি। তিনি লেখেন, ‘‘সব কিছু কিতাবে লেখা আছে, প্রয়োজনের সময় মুরাজায়াত করা বা দেখে নেওয়া যাবে, এটা আলেমসুলভ চিন্তা নয়। আলেম কেন, একজন তালেবে ইলমের জন্যও তা শোভনীয় নয়। এটাতো আমলোকের চিন্তা। তারা যেমন মনে করে, আমাদের কুরআন-হাদীস পড়ার দরকার নেই, হুজুররা আছেন, প্রয়োজনে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করে নিব। আমরাও কিতাব সম্পর্কে এরকম চিন্তা করি। আমরাও মনে করি, প্রয়োজনের সময় কিতাব দেখে নিব, অধ্যয়ন বা মুখস্থ করার কোন প্রয়োজন নেই।

ইমাম আব্দুল মালেক ইবনে কুরাইব আলআসমায়ী রহ. (২১৬হি.) একটি তিক্ত সত্য কথা পরিস্কার ভাষায় বলেছেন। তিনি বলেন, কিছু লোক আছে যাদেরকে আলেম বলা হয়, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে তারা আলেম নয়। কারণ তাদেরকে কিছু জিজ্ঞাসা করা হলে বলে- জী, এবিষয়ে আমার কাছে তথ্য আছে। তবে কিতাবের সিন্ধুকে। (সূত্র: জামেউ বয়ানিল ইলমে ওয়া ফযলিহী লিখক: ইবনে আব্দুল বারর- ১০৯)

ভেবে দেখা উচিত যে, দীনের মাবাদিয়াত, জরুরিয়াত ও সাধারণ মাসআলার ক্ষেত্রেও যদি মানুষকে কিতাব দেখার অপেক্ষায় থাকতে বলা হয, তাহলে এর ছেয়ে হাস্যকর বিষয় আর কি হতে পারে? জানা না থাকলে লা-আদরী বলা জরুরী ও প্রশংসনীয়। কিন্তু একজন আলেমের হালত এমন হওয়া নিতান্তই লজ্জাজনক যে, দিন-রাত তাকে শুধু লা-আদরীই বলে যেতো হয়। (সূত্র: আল-মুয়াফাকাত)

আর একটি বিষয় এইযে, তাৎক্ষনিক কিতাব দেখার দ্বারা কোন বিষয়ের সকল দিক সামনে আসে না, উপরন্তু তাড়ার কারণে কখনো ভুলও হয়ে যায়। এজন্য তাৎক্ষনিক প্রয়োজনে কিতাব দেখার দ্বারা যে ইলম হাসিল হয় তা নিতান্তই নাকিস ও অসম্পূর্ণ ইলম। (সূত্র: মুকাদ্দামায়ে ফাতাওয়ায়ে খলিলিয়া)

এই জন্যই কেবল মুরাজাআতের উপর নির্ভর করা উচিত নয়, বরং উসূল ও আদাব মোতাবেক মুতাআলার পরিধি বাড়ানো উচিত। ইলমের একটি নির্বাচিত অংশ কন্ঠস্থ থাকা চাই।’’

প্রিয় তালেবানে ইলম! করো ভাইরাসের কারণে অনাকাঙ্খী এ দীর্ঘকালের ছুটিতে অবসর সময় নষ্ঠ না করে নিজের ইলমের পরিধি বাড়ানোর জন্য তোমার কোন বিচক্ষণ উস্তাদের পরামর্শ নিয়ে সময়কে কাজে লাগানো চেষ্টা কর। লাগাতার অনেক দিন দরসিয়াতে লিপ্ত থাকলে বিরক্তি বোধ হতে পারে। তাই বিষয় পরিবর্ত করে এক সময় এক বিষয় পড়।

ইমাম মুহাম্মাদ রহ. নিজের কাছে বিভিন্ন বিষয়ের বই রাখতেন। যখন এক বিষয়ের বই পড়তে বিরক্তি এসে যেতো তো অন্য বিষয়ের বই পড়তেন। (তালিমুল মুতাআলিম-৯৮) দৈনিকের আমাল তথা নামায-তিলাওয়াত, যিকির-আযকার আদায়সহ দরসিয়াতের আয়ত্ব করা এবং সামনের পরীক্ষার প্রস্তুতির পাশাপাশি ভালো মনে করলে রুচি ও যোগ্যতা অনুসারে নিম্ম বর্ণিত কাজগুলোও করতে পার।

১. আকাবীরদের লিখনী হতে যা তোমার কাছে আছে তা গভীর মনোযোগের সাথে পড়। টার্গেক করে পড়া শুরু কর যে, একদিনে/দুই দিনে এ বইটি পড়ে শেষ করব। ২. বিষয় ভিত্তিক কুরআনের আয়াত এবং কিছু হাদীস মুখস্থ কর। ৩. তোমার পঠিত দরসী কিতাবসমূহ হতে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কিতাবটির মতন মুখস্থ কর। ৪. কারো রচনা অবলম্বন করে বা নিজ হতে কিছু রচনা করার চেষ্টা কর।

৫. উর্দূ বা আরবী কোন রেসালার বাংলা অনুবাদ কর। ৬. বাংলা ভাষার ভালো মানের কোন বই নিয়ে তা হতে বাংলা সাহিত্য চর্চা কর।
৭. হাতের লিখা সুন্দর ও শুদ্ধ করার চেষ্টা কর। ৮. উদূ বা আরবী ভাষায় কিছু রচনা করার চেষ্টা কর।

লেখক: জামিয়া মুহাম্মাদিয়া হাজিরহাট, ধর্মপুর, সদর, নোয়াখালী।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ