মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫ ।। ২৫ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১১ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :

ইসলামে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ইসলামি ফিকহ শাস্ত্রের প্রতিটি গ্রন্থের শুরুতেই ‘কিতাবুত তাহারাত’ বা ‘পবিত্রতা অধ্যায়’ স্থান পেয়েছে। মুমিনকে যেমন অবস্তুগত (হাদছ) অপরিচ্ছন্নতা থেকে পবিত্র হতে হয়, অজু বা গোসলের মাধ্যমে। তেমনি বস্তুগত অপরিচ্ছন্নতা (খুবুছ) থেকেও পবিত্র হতে হয়, দেহ-বস্ত্র ও স্থান ইত্যাদি পরিষ্কারের মাধ্যমে। তাছাড়া প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য পবিত্র ও পরিচ্ছন্নতার কথা তো বলাই বাহুল্য।

মদিনার নিকটবর্তী কোবা এলাকার লোকজনের প্রশংসা করে আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘সেখানে এমন লোক আছে, যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করতে ভালবাসে। আর আল্লাহ্ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।, (সুরা আত-তাওবা, আয়াত : ১০৮)

মহান আল্লাহ তাআলা আরো ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদের।’ (সুরা বাকারা-২২২)

হাদিসেও বিভিন্ন উপায়ে পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে এবং নানাবিধ শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। এমনকি পরিচ্ছন্নতা রক্ষাকে ঈমানের অংশ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আবু মালেক আশআরি রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক।’ (মুসলিম, হাদিস-২২৩)

ইসলামে ব্যক্তির পরিচ্ছন্নতা, গৃহের পরিচ্ছন্নতা ও পরিপার্শের পরিচ্ছন্নতা—কোনোটাই বাদ যায়নি। ব্যক্তির পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় অন্তত জুমাবারে গোসলের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এমনকি হাদিসে এ ক্ষেত্রে ওয়াজিব বা অত্যাবশক বলা হয়েছে। আবু সাঈদ খুদরি রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল সা. বলেন, জুমার দিন (শুক্রবার) গোসল করা প্রতিটি সাবালক ব্যক্তির জন্য ওয়াজিব।’ (বুখারি, হাদিস-৪৭৯)

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুল সা. বলেন, ‘আল্লাহর জন্য প্রতিটি মুসলিমের অবশ্য কর্তব্য হলো (অন্তত) প্রতি সাত দিনের মাথায় তার মাথা ও শরীর ধৌত করা।’ (বুখারি-৮৯৭; মুসলিম-৮৪৯)

কারো ওপর গোসল ফরয না হলেও শরীরে ঘাম ও ধূলা-বালু ইত্যাদি লাগার কারণে দুর্গন্ধ হতে পারে, তাই অন্তত সাতদিনে একবার গোসলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তার মানে সাত দিন পর গোসলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা নয়। অন্যদিকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পরিচ্ছন্ন রাখতেও হাদিসে সবিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

দাঁত ও মুখের যত্নের জন্য হাদিসে মিসওয়াকের গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মিসওয়াক ব্যবহারকে গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল সা. বলেন, ‘যদি না আমার উম্মত অথবা (তিনি বলেছেন) মানুষের জন্য কঠিন হত তবে আমি তাদের প্রত্যেক সালাতের সঙ্গে মিসওয়াকের নির্দেশ (ওয়াজিব ঘোষণা) দিতাম।’ (বুখারি-৮৮৭; মুসলিম-২৫২)

চুলের পরিচ্ছন্নতা রক্ষায়ও ইসলামে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। জাবির (রা.) বলেন, একদিন রাসুল (সা.) আমাদের ঘরে বেড়াতে এলেন। আসার পর তিনি এলোকেশী এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন। তার সম্পর্কে তিনি বললেন, ‘এ ব্যক্তি কি এমন কিছু জোটাতে পারেনি, যা দিয়ে সে তার মাথার চুল বিন্যস্ত করবে?’ ময়লা কাপড় পরিহিত আরেকজনকে দেখে তিনি বলেন, ‘এ ব্যক্তি কি এমন কিছুর ব্যবস্থা করতে পারেনি, যা দিয়ে সে তার কাপড় পরিষ্কার করবে?’ (মুসনাদ আহমাদ-১৪৮৫০; বাইহাকি-৫৮১৩)

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ