রকিব মুহাম্মদ ।।
হিজড়া নারী-পুরুষের বাইরে আরেকটি লিঙ্গবৈচিত্র্যের মানবধারা। ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষ মহান আল্লাহর হুকুমে লৈঙ্গিক বৈচিত্র্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আল্লাহ তায়ালার কাছেও বাহ্যিক আকার-আকৃতির কোনো মূল্য নেই। কারণ এ আকৃতি তাঁর নিজের ইচ্ছায়ই হয়েছে, মানুষের এতে কোনো হাত নেই। হাশরের ময়দানে তিনি দেখবেন শুধু মানুষের আমল। (মুসলিম শরিফ, হাদিস নম্বর ৬৭০৮)
পবিত্র কুরআন ও হাদিসে অঙ্গ ও আকৃতির ভিত্তিতে মানুষকে ভাগ করা হয়নি। আল্লাহ তাআলার কাছে সব ত্রুটিহীন অথবা ত্রুটিপূর্ণ মানুষই সমান এবং হাশরের ময়দানে সব ধরনের মানুষই জিজ্ঞাসিত হবে। সে জন্য নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত—সব কিছু পালন করাই হিজড়াদের জন্য ফরজ।
তবে আমাদের দেশের হিজড়া সম্প্রদায় ইসলামের শিক্ষা থেকে অনেক দূরে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই পড়ালেখার সুযোগ পায়নি। কালেমা,নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত জানে এমন সংখ্যা একেবারেই কম!
সমাজের অবহেলিত এই সম্প্রদায়কে দীনের পথে ফিরিয়ে এনে সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন উপহার দিতেই কতিপয় তরুণ আলেম তাদের মাঝে দীনি মেহনতের উদ্যোগ নিয়েছেন। ব্যতিক্রমধর্মী এই উদ্যোগ ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসিত হচ্ছে।
জানা যায়, গত ২৭, ২৮ ও ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মিরাপুরে দীন শিখতে আগ্রহী ৩০ জন হিজড়া ভাই-বোনদের ইসলামের মৌলিক বিষয়াদি শিক্ষা দেওয়ার কর্মশালার আয়োজন করেছিলেন তারা।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত আলেমদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কর্মশালার মাধ্যমে হিজড়াদের কালিমা এবং জরুরি মাসয়ালা রপ্ত করানো হয়। তাদের হাতে তুলে দেয়া হয় কুরআনে কারীম,আহকামে জিন্দেগী,আত্মার পরিচর্যা, কেমন ছিল নবীজির আচরণ, নূরানী কুরআন শিক্ষা, মিসওয়াক ইত্যাদি বইপুস্তক।
এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত তরুণ আলেম মাওলানা মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান আওয়ার ইসলামকে বলেন, হিজড়াদের অধিকাংশই ইসলামের শিক্ষা সম্পর্কে কিছুই জানে না। তবে তারা এসব বিষয়ে শিখতে আগ্রহী। এ কারণেই আমরা তাদের মাঝে দীনি মেহনতের উদ্যোগ গ্রহণ করি। ধীরেধীরে আমাদের এ উদ্যোগ ব্যাপকভাবে করা হবে। হিজড়াদের জন্য আলাদাভাবে দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলারও পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
আরএম/