শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
সিংগাইরে হেফাজতে ইসলামের গণসমাবেশ ২৯ সেপ্টেম্বর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির চেষ্টা হলে ‘হাত ভেঙে’ দেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ‘জুলাই বিপ্লবে আলেম-শিক্ষার্থীদের অবদান ও প্রত্যাশা’ নিয়ে আলোচনা সভা সোমবার সিলেটে অনুষ্ঠিত বিহানের ‘লেখালেখি ও এডিটিং কর্মশালা’ দেশে ফিরে কর্মফল ভোগ করুন, শেখ হাসিনাকে জামায়াতের আমির রাষ্ট্র সংস্কারে ইসলামবিরোধী কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না: জাতীয় পরামর্শ সভা যাত্রাবাড়ীতে জাতীয় পরামর্শ সভায় গৃহীত হলো ৭ প্রস্তাব বারিধারায় হেফাজতে ইসলামের পরামর্শ সভা শুরু ফ্যাসিবাদী সরকারের মূল দায়িত্বের কর্মকর্তারা এখনও অটল রয়ে গেছে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছি: ডিসি ওয়ারী

সৎ আচরণ ও সততার গুরুত্ব ইসলামে সবচেয়ে বেশি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম:  সততা রক্ষা করা এবং সততা অর্জন করা একজন মোমিনের জন্য শ্রেষ্ঠতম কাজ। মানুষের সৎ স্বভাব বা সৎ আচরণ কিংবা সত্যাবাদিতার মধ্যেই সততা নিহিত। পবিত্র কোরআন মজিদে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা সত্যনিষ্ঠ ও বাস্তবপরায়ণ লোকদের সম্পর্কে তাদের সত্যনিষ্ঠা ও বাস্তবতা তথা সততা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।

আমরা সততার মাধ্যমে বাস্তব জীবনকে কল্যাণময়ী করে তুলতে পারি। সততার গুণে মানুষ বিভূষিত হন এবং সমাজের উচ্চস্থান লাভ করেন। শুধু তাই নয়; সততার বদৌলত সততা রক্ষাকারীর মর্যাদা আরও বহু গুণে বেড়ে যায়।

সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হলো, আমাদের হজরত রাসূলে মকবুলের সা. কর্মবহুল জীবনে আমরা সততার অপূর্ব মহিমা দেখতে পাই। মক্কায় অবস্থানকালে, সেই যুবক বয়সে ‘হিলফুল ফুজুল’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুলে তার কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মক্কার সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বস্ততা অর্জন করেন এবং সততার যে পরিচয় দেন তা আমাদের সর্বকালের জন্য অনুসরণীয়।

নবুয়ত লাভের পর যখন মক্কার কোরাইশ গোষ্ঠী রাসূলুল্লাহর পরম শত্রু হয়ে ওঠে, তখনও তারা তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র আমানত রাখত রাসূলুল্লাহর কাছে। কারণ তারা জানত, তারা তার ওপর জুলুম-অত্যাচার করলেও তিনি তাদের আমানত কখনও নষ্ট করবেন না। মক্কাবাসীদের জুলুম অতিষ্ঠিত হয়ে যখন তিনি মক্কা ত্যাগ করতে বাধ্য হন, তখনও বিধর্মীদের কিছু জিনিসপত্র গচ্ছিত ছিল তার কাছে।

এসব জিনিস আমানত রেখেছিল তাদের কাছে সেগুলো ফেরত দেওয়ার জন্য তিনি মক্কায় রেখে যান হজরত আলীকে। উপযুক্ত সময়ে আমানত খেয়ানত না করে নবী করিম সা. এসব অর্থকরী সম্পদ ফিরিয়ে দিয়ে যে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, তা ইসলামের ইতিহাসে বিরল।

নবী করিমের সা. এই সততার গুণে মুগ্ধ হয়ে আরবের বিপুল বিত্তশালী মহিলা হজরত খাদিজা রা. তার বিরাট বাণিজ্য পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করেন। হজরত খাদিজা রা. হজরত মুহাম্মদের সা. সুষ্ঠু বাণিজ্য পরিচালনা ও সততার পরিচয় পেয়ে তাকে স্বামী হিসেবে বরণ করে নেন।

জীবনের সর্বক্ষেত্রে আমাদের সততা রক্ষা করে চলা উচিত। সততার মাধ্যমেই মহানুভবতা ও উদার চিত্তের পরিচয় পাওয়া যায়। বুখারি শরীফে আছে, তোমাদের মধ্যে যে স্বভাব-চরিত্র ও সততায় উত্তম, সে আমার নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয়। হাদিসে আহমদে বর্ণিত আছে; আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, লোকের সঙ্গে সৎ আচরণ তথা সততার মাধ্যমেই একজন মুসলমানের প্রকৃত পরিচয় জানা যায়।

হজরত নবী পাক সা. অন্য এক হাদিসে বর্ণনা করেছেন- তোমরা মানুষকে অর্থ দ্বারা বশীভূত করো না বরং তাদের সৎ আচরণ, উত্তম ব্যবহার এবং সততা দ্বারা বশীভূত কর। তিনি আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি ভেজাল মিশ্রিত দ্রব্যের কথা প্রকাশ না করে ওই দ্রব্য বিক্রয় করবে সে ব্যক্তি চিরকাল আল্লাহর গজব ভোগ করবে এবং অনন্তকাল ধরে ফেরেশতারা তার ওপর লানত বর্ষণ করবে।

ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সর্বক্ষেত্রে সততা রক্ষা করা উত্তম কাজের পর্যায়ভুক্ত। পবিত্র কোরআন মজিদে বলা হয়েছে, সত্যপরায়ণ পুরুষ ও নারী বহু পুরস্কার লাভ করবেন। বুখারি শরীফে আছে, সত্য কথা বলা নেকির রাস্তা। সত্যভাষী মানুষই সততা প্রদর্শন করতে পারে। নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে সততার পরাকাষ্ঠা দেখানোই সততার নামান্তর।

আমরা ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড ও জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে পারস্পরিক সততা প্রদর্শনে একে অপরের প্রতি সততার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আমরা যেন এক পরিপূর্ণ ভালোবাসার জগৎ গড়ে তুলতে পারি। এই তওফিক আল্লাহ পাক আমাদের দান করুন।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ