শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার ‘উলামায়ে কেরামদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব’ নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই  সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ

বক্তা হলেই কি মুফতি!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আলী হাসান তৈয়ব ।।

আমাদের দেখা সময়ে ওয়াজ-মাহফিলের মতো উন্মুক্ত প্রোগ্রামে উপস্থিত প্রশ্নোত্তরপর্ব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে মূলত ড. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহ. ও মুফতি কাজী ইবরাহিম সাহেবদের মাধ্যমে। তাদের দেখাদেখি এখন মাহফিলে সবাই ফতোয়া দিতে শুরু করেছে। এতদিন জনারণ্যে ধারণা ছিল, মাহফিলের বড় বক্তা মানেই বড় আলেম। তারপর ধারণা চালু হলো— যত লকব তত বড় হুজুর/শায়খ। এখন শুরু হয়েছে, বক্তা যে বড় আলেম তা বোঝাতে ওয়াজের পর প্রশ্নোত্তরপর্বের মুফতি হওয়া। কিয়ামত তুমি কত দূর!

দুঃখজনকভাবে ইসলামিক টিভি ও পিস টিভি বন্ধ। কিন্তু বন্ধ নয়, বহু গুণ বেড়েছে লাইভ প্রশ্নোত্তরের মুফতি। ইউটিউব টিভিতে, নিজের চ্যানেলে, ফেসবুকে ওয়ালে, এফএম রেডিওতে ও মাহফিলে লাইভ জবাবদাতা। জানি না ইসলামের ইতিহাসে কোনো কালে এভাবে ফতোয়া নিয়ে দায়িত্ব জ্ঞানহীন এত মানুষ ছিল কিনা।

বিল্লাহি, সবার শ্রদ্ধা রেখে বলতে বাধ্য হচ্ছি, যে ছেলেটাকে দেখতাম আজীবন পরীক্ষায় ফেল করতে, সেও জবানের শক্তির জোরে বড় বক্তা কাম বড় আলেম। সবশেষ এখন বড় বক্তা হবার সুবাদে বড় মুফতি। যেমন দেখি এমন লোকদের নিজে মাদরাসাতুল বানাতের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হবার জোরে মুহাদ্দিস আর শাইখুল হাদিস হতে। কী সমৃদ্ধ তাদের ভিজিটিং কার্ড! তাতে লেখা : এখানে ফোনে মাহফিলের দাওয়াত নেওয়া হয়। ফোনে তদবিরের ফুঁ দেওয়া হয়! কিয়ামত তুমি কত দূর!

এইসব জাহেলদের সম্পর্কে সালাফরা অনেক কথা বলে গেছেন। কুরআন-সুন্নাহতেও এদের ফেতনা সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। আমার মতো পাপীর ক্ষুদ্র জ্ঞানে খালি একটি কথা মনে হয় : আমাদের জবানে-কলমে ঘোষিত অনেক কাফের-ফাসেকের চেয়েও উম্মতের জন্য বড় ফেতনা এই আমরা। হ্যা আমরা।

উম্মে সালামা রা. বর্ণিত হাদিসটি মনে করি। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘর থেকে বের হবার আগে আকাশ পানে তাকিয়ে একটি দোয়া পড়তেন—

«اللّٰـهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أَضِلَّ، أَوْ أُضَلَّ، أَوْ أَزِلَّ، أَوْ أُزَلَّ، أَوْ أَظْلِمَ، أَوْ أُظْلَمَ، أَوْ أَجْهَلَ، أَوْ يُجْهَلَ عَلَيَّ».

অর্থাৎ— হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই যেন নিজেকে বা অন্যকে পথভ্রষ্ট না করি, অথবা অন্যের দ্বারা পথভ্রষ্ট না হই; আমার নিজের বা অন্যের পদস্খলন না করি, অথবা আমায় যেন পদস্খলন করানো না হয়; আমি যেন নিজের বা অন্যের উপর যুলম না করি অথবা আমার প্রতি যুলম না করা হয়; আমি যেন নিজে মুর্খতা না করি, অথবা আমার উপর মূর্খতা করা না হয়।' (আবু দাউদ : ৫০৯৪, সহিহ)।

এবার ভাবুন, পৃথিবীর সর্বকালের সেরা ও মহত্তম মানব মাসুম (নিষ্পাপ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দোয়া এমনি শেখাননি উম্মতকে। আমাদের আজকের অবস্থা দেখলে তিনি কী বলতেন! আহ, আমাদের রোজ ঘর থেকে বের হবার আগে তো বটেই, প্রতিবার কলম আর জবান খোলার আগে একবার অন্তত এ দোয়া দিল থেকে পড়ে নেওয়া দরকার।

লেখক : আলেম ও সাংবাদিক

আরএম/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ