রফিকুল ইসলাম জসিম ।।
মুসলিমদের জন্য আদব-কায়দা, ধর্মীয়-রীতিনীতি ও সঠিক জীবন-যাপনের জন্য মক্তব শিক্ষা ব্যবস্থাই ছিল একমাত্র ভরসা। এর মাধ্যমে মুসলিমরা কালিমা, নামাজ, রোজা, হজ, যাকাতসহ দৈনন্দিন মাসআলা-মাসায়েল শিশু বয়স থেকেই শিখতে পারতেন। কিন্তু কালের আবর্তনে বর্তমানে দেশে ডিজিটালের ছোঁয়া লাগায়, কিন্টারগার্টেন, ক্যাডেট-কোচিং ইত্যাদি ব্যবস্থা থাকায় এই মক্তব শিক্ষা ক্রমাগত হারাতে যাচ্ছে ।
তবে এখনও কিছু এলাকায় ইসলামী ফাইন্ডেশনের কল্যাণে শিশুরা এ শিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম হচ্ছে। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় মণিপুরি মুসলিম পাঙাল সম্প্রদায়ের "ওলামাদের রাজধানী" খ্যাত আদমপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ তিলকপুর গ্রামে দেখা গেল সেই চিত্র।
এখানে ২০১৮ সাল থেকে মণিপুরি মুসলিম শিশুরা ইসলামি ফাউন্ডেশন আওতায় চলমান মক্তবভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে ‘আলিফ তে আল্লাহ’র সবক শিখতে পারছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এলাকার "তিলকপুর দারুস সুন্নাহ এবতেদায়ী মাদরাসায়" শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম ইসলামী ফাউন্ডেশনের আওতায় প্রাক প্রাথমিক শিশুশিক্ষা পাঠদান করাচ্ছেন শিক্ষিকা- রওশন আরা বেগম।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় আদমপুর, ইসলামপুর ইউনিয়নের মণিপুরি মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় ১৩টি কেন্দ্রে এ শিক্ষা ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।
মক্তব শিক্ষার ঐতিহ্য রক্ষায় ইসলামী ফাউন্ডেশনর এই পদক্ষেপ যেন আমাদের সন্তানদের কোরআন শিক্ষাসহ ধর্মীয় রীতি-নীতির জ্ঞান অর্জনে সহায়ক হয়, এজন্য প্রতিটি গ্রামে অন্তত একটি করে হলেও মক্তব থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশিষ্ট সমাজসেবী, অত্র মাদরাসার কোষাধ্যক্ষ জনাব নুর মোহাম্মদ (অবঃ বিডিআর)।
এ ব্যাপারে মুঠোফোনের মাধ্যমে অত্র মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ চেরাগ উদ্দিন (বাবু) জানান, অনেক গ্রামে মক্তব না থাকায় এ অঞ্চলের ছেলে মেয়েরা ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আর বর্তমানে অসচেতনতার কারনে অভিভাবকরা সন্তানদের মক্তবে না পাঠিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষা অর্জনের জন্য কোচিংয়ে পাঠিয়ে দেন। তবে সচেতন মহলের দাবী- বাংলা,ইংরেজী,গনিত ও বিজ্ঞানের পাশাপাশি যেন ধর্মীয় মৌলিক জ্ঞান অর্জনের মূলভান্ডার এরকম মক্তব শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
আরএম/