আওয়ার ইসলাম: মাদরাসার কোনো অস্তিত্ব নেই, কিন্তু বছরের পর বছর শুধু কাগজপত্রে দেখানো হচ্ছে মাদরাসার কার্যক্রম। ভালো ফলাফল দেখিয়ে আবেদন করা হয়েছে সরকারিকরণের জন্যও।সরকারিকরণের জন্য ইতোমধ্যে তালিকাভুক্তও করেছে শিক্ষা অধিদপ্তর। অবশ্য জেলা প্রশাসক এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
জানা যায়, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড, মাদরাসার কার্যক্রম ও ভাল ফলাফলে সন্তুষ্ট হয়ে ১৯৮৮ সালে দক্ষিণ পশ্চিম ধূপতি মনসাতলী স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী নামের একটি মাদরাসাকে ৭ বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন দেয়। আরও ভালো করার জন্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে ১২টি নির্দেশনা দেয় মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড।
এরপর প্রথম মেয়াদ শেষ হলে আরও ৭ বছরের জন্য রেজিস্ট্রেশন দেয় মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। বর্তমানে সরকারিকরণ তালিকার শতাধিক মাদরাসারমধ্যে ১৬ নম্বরে রয়েছে এই মাদরাসাটির নাম।
এদিকে, দক্ষিণ পশ্চিম ধূপতি মনসাতলী ঘুরে এই নামের কোন মাদরাসার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। নেই কোনো ভবন, শিক্ষার্থী, শিক্ষক বা কার্যক্রম। একটি মসজিদ ছাড়া এলাকায় নেই কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গত ২০ থেকে ৩০ বছরেও এ নামের কোন মাদরাসা ছিল না বলে দাবি এলাকাবাসীর।
অবশ্য কাগজপত্রে যাদেরকে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটি হিসেবে দেখানো হচ্ছে তারা বলছেন, দুলাল নামের একজন তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য করে আসছে। অভিযুক্ত দুলালকে খুঁজে পাওয়া যায়নি তার বাড়িতে। দুলালের স্ত্রীর দাবি দুবছর আগেও চলতো মাদরাসার কার্যক্রম।
অস্তিত্ব না থাকলেও কাগজ পত্রে ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠা, ৫জন শিক্ষক ও প্রায় ২শ শিক্ষার্থী দেখিয়ে আসছে দুলাল ও একটি চক্র।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দুলালের স্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, এখানে মাদরাসা ছিল। তারা দুই বছর আগে ঘর ভেঙে দিয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলছেন, শুধুমাত্র রেজিস্ট্রেশন ও মাদরাসার নামে জমির দলিল দেখেই পরিদর্শন ছাড়াই তালিকা পাঠিয়েছেন তিনি।
বরগুনার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, এগুলোর দলিল রয়েছে এবং স্বীকৃতি রয়েছে।
আর জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, তালিকা পাঠানোর আগে পরিদর্শন বাধ্যতামূলক।
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তর থেকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে এটার রিপোর্ট দেয়ার কথা।
আরএম/