শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার ‘উলামায়ে কেরামদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব’ নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই  সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ

শয়তানের বাইবেল!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মোল্লা মোহাম্মদ

মধ্যযুগে লেখা বইগুলির মধ্যে আকারে আয়তনে সবচেয়ে বড় বইয়ের নাম কোডেক্স গিগাস। বইটি লম্বায় প্রায় ৩৬ ইঞ্চি, প্রস্থে ২০ ইঞ্চি এবং পুরুত্ব প্রায় ৮ ইঞ্চি। বইটি লিখতে প্রয়োজন হয়েছে প্রায় ১৬০ টি গাধার চামড়া। আর বইটির ওজন কত জানেন? পাক্কা ৭৫ কেজি। শুধু এর বৃহত্তম আকারের জন্য নয়, কোডেক্স গিগাস বিখ্যাত আরেকটি কারণে। এই বইটির ২৯০ নম্বর পৃষ্ঠায় একটা ছবি রয়েছে। বলা হয়ে থাকে এটা শয়তানের নিজ হাতে আঁকা ছবি। অর্থাৎ শয়তানের আত্মপ্রকৃতি। এরপেছনে একটি মিথ প্রচলিত আছে।

মিথ অনুসারে, মধ্যযুগের এক বেনডিক্টাইন সন্ন্যাসীর আহবানে সাড়া দিয়ে শয়তান নিজ হাতে এই বইটি লিখে দিয়ে যায়। ইতালির সন্ন্যাসী বেনডিক্টের মতানুসারীদে বেনডিক্টাইন বলা হয়। বেনডিক্টাইন সন্ন্যাসীদের কঠোর ধর্মীয় নিয়ম মেনে চলতে হয়। মধ্যযুগের কোন এক সন্ন্যাসী তাদের মঠের কোন নিয়ম ভঙ্গ করেছিলেন। তাকে নিয়মভঙ্গের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়।

মৃত্যুদন্ড থেকে অব্যাহতি পাওয়ার একটাই মাত্র রাস্তা ছিল তার। সেটি হল এক রাতের ভেতর তার জীবনে অর্জিত সকল জ্ঞান একটি বইয়ে লিপিবদ্ধ করতে হবে। শর্ত অনুযায়ী, তাকে প্রয়োজনীয় গাধার চামড়া আর কালি দিয়ে একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়। অর্ধেক রাত লেখার পর সন্ন্যাসী লক্ষ করেন তিনি মাত্র একটা পৃষ্ঠার অর্ধেকমাত্র লিখতে পেরেছেন।

তিনি এবার বই শেষ করার জন্য শয়তানের কাছে সাহায্য চাইতে শুরু করেন। শয়তান তার আহবানে সাড়া দেয়। বাকি অর্ধেক রাতে পুরো বই লিখে শেষ করে দিয়ে যায় শয়তান। প্রমাণ হিসেবে নিজের ছবিও একে দেয় একটা পাতায়। এর বিনিময়ে সন্ন্যাসী শয়তানকে তার আত্মা দান করেন।

লাতিন ভাষায় লেখা এই বইটিতে বাইবেলের বিভিন্ন আয়াত, বিভিন্ন প্রাণি এবং গাছের বর্ণনা এমনকি কিছু ওষুধপত্রের বর্ণনাও দেয়া আছে। এমনকি কিছু উদ্ভট অর্থহীন কথাও লেখা আছে বইটিতে। ধারণা করা হয় অর্থহীন কথাগুলি আসলে কালোজাদুর মন্ত্র। বইটিতে প্রথমে ৩২০ টি পৃষ্ঠা ছিল। কিন্ত পরবর্তীতে ৮ টি পৃষ্ঠা কোথায় যেন হারিয়ে যায়। হারানোর পৃষ্ঠাগুলি কখনোই খুজে পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয় ওই ৮ পৃষ্ঠাতে বেনডিক্টিয়ান ধর্ম বিষয়ে খুব গোপন কিছু লেখা ছিল।

বিজ্ঞানী এবং ইতিহাসবিদেরা শত চেষ্টা করেও জানতে পারেননি বইটির আসল রচয়িতা কে। তবে একদল বিজ্ঞানী কার্বন টেস্ট করে জানিয়েছেন যে বইটি ত্রয়োদশ শতকের প্রথমদিকে বিভিন্ন পোকা মাকড় এবং গাছের রস ব্যবহার করে লেখা হয়েছে। হাতের লেখা এবং লেখার উপাদান বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বলেছেন বইটি মাত্র একজনের হাতেই লেখা।

ইতিহাসবিদদের ধারণা বইটি বেহেমাসের (বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্র) বেনডিক্ট পোডালাইজাসের আশ্রমে বসে এটি লেখা হয়েছিল। ১৬৪৮ সালে যুদ্ধের সময় সুইডিশ সৈন্যরা বইটি সুইডেনে নিয়ে আসে। এরপর থেকে এটি সুইডেনেই আছে। বর্তমানে বইটি সুইডেনের জাতীয় গ্রন্থাগার স্টকহোমে রাখা আছে। তবে বইটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে তবেই বইটির কাছে যাওয়া সম্ভব।

এমএম/আরএম


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ